
ঢাকা, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : নারীর প্রতি সহিংসতার জেরে শনিবার ফ্রান্সজুড়ে হাজারো মানুষ শীত উপেক্ষা করে রাস্তায় বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা আরও সরকারি পদক্ষেপ ও অর্থ বরাদ্দের দাবি জানায়।
প্যারিস থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
প্যারিসে আয়োজকদের হিসাবে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এবং পুলিশের হিসাবে ১৭ হাজার মানুষ মিছিল করে। তারা স্লোগান দেয়, গান গায়, নাচে ও নানা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে। প্রায় ৬০ সংগঠনের সমন্বয়ে ‘গ্রেভ ফেমিনিস্ত’ (নারীবাদী ধর্মঘট) নামে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
‘নু তুতে’ (ঘড়ঁংঞড়ঁঃবং বা আমরা সবাই) নামের নারীবাদী জোটের বিতরণ করা একটি প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘ফ্রান্সে প্রতি আড়াই দিনে একজন পুরুষ একজন নারীকে হত্যা করে।’ আরেকটিতে লেখা, ‘প্রতি ১০ জন ধর্ষণের শিকার নারীর মধ্যে ৯ জনই তাদের ধর্ষককে চেনে।’
জাতীয় নারীনিধন ভুক্তভোগী ফেডারেশনের সভাপতি সিলভাইন গ্রেভিন বলেন, ‘এখন ২০২৫, এখনো কি আমাদের মৃত নারীদের গুনতে হবে?’ তার বোন ২০১৭ সালে নিহত হন।
অন্য শহরগুলোতেও শত শত মানুষ শীতে বিক্ষোভে অংশ নেয়। চারপাশ ভরে যায় বেগুনি রঙে, যা নারীবাদের প্রতীক।
উত্তর ফ্রান্সের লিল শহরে ২০ বছর বয়সী শিক্ষার্থী জুলিয়েত বলেন, ‘আমরা ভালোবাসা পাওয়ার অধিকার রাখি, নির্যাতনের নয়।’
বিক্ষোভের আয়োজক সংগঠনগুলো নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে একটি পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি তা বাস্তবায়নে ৩ বিলিয়ন ইউরো (৩.৫ বিলিয়ন ডলার) বাজেট দাবি করেছে।
তারা শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সহিংসতার শিকার ভুক্তভোগীদের সহায়তাকারী সংগঠনগুলোর অর্থ বরাদ্দ বাড়ানোরও আহ্বান জানিয়েছে।
নারী সহিংসতা প্রতিরোধ এবং মানব পাচার মোকাবিলার জন্য গঠিত সরকারি সংস্থা মিপ্রফ-এর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সঙ্গী দ্বারা নারীহত্যার ঘটনা ১১ শতাংশ বেড়েছে। এই সময়ে ১০৭ জন নারী তাদের সঙ্গী বা প্রাক্তন সঙ্গীর হাতে নিহত হয়েছেন।
মিপ্রফ জানায়, ফ্রান্সে প্রতি দুই মিনিটে একজন নারী ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা বা যৌন নির্যাতনের শিকার হন। আর প্রতি ২৩ সেকেন্ডে যৌন হয়রানি, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি বা অনাকাঙ্ক্ষিত যৌন কনটেন্ট পাঠানোর মতো ঘটনার শিকার হন একজন নারী।
উইমেনস ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, নারীর প্রতি গৃহস্থালি, লিঙ্গভিত্তিক ও যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে ফ্রান্স সরকারকে বছরে অন্তত ২.৬ বিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ দিতে হবে। যা রাষ্ট্রীয় বাজেটের মাত্র ০.৫ শতাংশের সমান।