তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন জরুরি : আসাদুল হাবিব দুলু 

বাসস
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২০:২৮
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর) অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু। ছবি : বাসস

লালমনিরহাট, ১১ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): উত্তরাঞ্চলের প্রাণ তিস্তা নদী আজ হুমকির মুখে-উল্লেখ করে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর) অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেছেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন জরুরি। এ নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে আবাদি জমি ও জনবসতি, বিপন্ন হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। 

এসব বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর সঙ্গে আজ মঙ্গলবার খোলামেলা কথা বলেছেন তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও সাবেক এই উপমন্ত্রী।

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচির বিষয়ে দুলু বলেন, এক সময় তিস্তা নদী ছিল তিস্তাপাড়ের মানুষের জীবনের উৎস, তখন মানুষের ঘরে ধান, পুকুরে মাছ, গোয়ালে গরু ছিল। এখন সেখানে শুধু হাহাকার আর কান্না। দুই কোটিরও বেশি মানুষ বছরের পর বছর তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছেন। নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় জলসংকট ও জীবিকার অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তাই আন্দোলন এখন জন মানুষের টিকে থাকার সংগ্রাম।

আরেক প্রশ্নের জবাবে দুলু বলেন, তিস্তা সংকট সমাধানের দাবিতে আমাদের সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। আমরা মাঠে আছি, মানুষকে সচেতন করছি। পাশাপাশি আরও অনেক সামাজিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন একযোগে কাজ করছে। আমাদের লক্ষ্য একটাই- তিস্তা বাঁচাতে হবে, দেশকে রক্ষা করতে হবে।

বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন কেন তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি-এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি নেতা বলেন, তখন নদীর অবস্থা এত ভয়াবহ ছিল না। পানি ছিল, নদীভাঙনও সীমিত ছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে, মাইলের পর মাইল নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি, আবাদি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। হাজারো মানুষ গৃহহীন হয়েছেন।

তাই এখনই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে নদীর ভাঙন নিয়ন্ত্রণে আসবে, প্রস্থ সীমিত থাকবে-উল্লেখ করে দুলু বলেন, কৃষিজমি, ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও অন্যান্য অবকাঠামো রক্ষা পাবে। তিস্তাপাড়ের দুই কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকা উন্নত হবে। কৃষি, মৎস্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নতুন গতি আসবে।

তিনি উল্লেখ করেন, ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে নদীর জলজ জীববৈচিত্র পুনরুদ্ধার হবে, পরিবেশের ভারসাম্য ফিরবে। কৃষিভিত্তিক শিল্প, মৎস্যচাষ, ক্ষুদ্র উদ্যোগ ও পর্যটন বাড়বে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, দারিদ্র্য কমবে, মানুষের জীবনমান উন্নত হবে। তিস্তাকে ঘিরেই উত্তরাঞ্চলের নতুন অর্থনৈতিক জাগরণ ঘটতে পারে।’ 

ভারত বা চীন কি এই প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো বাধা সৃষ্টি করতে পারে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, ভারত কর্তৃক তিস্তাপ্রবাহের নিয়ন্ত্রণ ও একপক্ষীয় পানি ব্যবস্থাপনার ফলে বাংলাদেশ ভয়াবহ সংকটে পড়েছে। তবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা পুরোপুরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। চীন এ প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং জানিয়েছে, এর জন্য প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন, যা আগের বাজেটের তুলনায় কিছুটা বেশি। সরকারের সক্ষমতা ও সদিচ্ছা থাকলে এটি বাস্তবায়ন সম্ভব। তিনি বলেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি বা নীতিকে আমাদের জাতীয় স্বার্থের পথে বাধা হতে দেয়া যাবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ফায়ার সার্ভিস সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে 
আওয়ামী লীগের নাশকতা সৃষ্টির প্রতিবাদে ছাত্রশিবিরের কর্মসূচি ঘোষণা
বিএনপি হচ্ছে গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন একটি রাজনৈতিক দল : রিজভী
ঠাকুরগাঁওয়ের টং দোকানির মেয়ের নিশানায় বাংলাদেশের সোনার স্বপ্ন
নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে : আমীর খসরু
গণমাধ্যমে ভুলভাবে প্রকাশিত বক্তব্যের বিষয়ে বিভ্রান্ত না হতে নেতাকর্মীদের প্রতি মির্জা ফখরুলের আহ্বান
হাইকোর্টে ২২ জন স্থায়ী বিচারপতি নিয়োগ
আইন সংস্কারের ফলে আদালতে মামলার চাপ এক-চতুর্থাংশ কমবে : আইন উপদেষ্টা
নভেম্বরের ১০ দিনে রেমিট্যান্স প্রবাহে ৩৫.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি
সাতক্ষীরায় অস্ত্র ও মাদকসহ আটক ১
১০