নওগাঁর রাজপথ ছিল ছাত্রজনতার দখলে 

বাসস
প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১৬:৫৩
ফাইল ছবি

বাবুল আখতার রানা

নওগাঁ, ৫ আগস্ট ২০২৫ (বাসস): চব্বিশের ৫ আগস্ট বাঙালি জাতির জন্য অন্যরকম আবেগ ও অনুভূতির দিন। দিনটি ছিল নির্যাতিত জাতির জন্য আরেকটি মুক্তির দিন। গতবছর এদিন সকাল থেকে সারাদেশে চলছিল কঠোর অবরোধ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্র থেকে ঘোষণা ছিল লং মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি। এর প্রেক্ষিতে নওগাঁতেও চলছিল প্রতিবাদ। শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা কঠোরভাবে এদিন মাঠে ছিলেন। নওগাঁর রাজপথ ছিল আন্দোলনকারীদের দখলে।

জেলার কয়েকজন আন্দোলনকারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকাল থেকে লিফলেট বিতরণ, পোস্টারিং এবং স্বেচ্ছাসেবায় অংশ নিয়ে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। এদিন পুরো জেলা বিশেষ করে নওগাঁ শহরের মেইন সড়ক পুরোপুরি দখলে ছিল ছাত্র-জনতার। এরই মধ্যে বিকেলে খবর আসে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেছেন। পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবিসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারাও তখন সরে যান। এ সময় একরাশ প্রাপ্তি আর উল্লাসে মেতে ওঠে নওগাঁর ছাত্রজনতা। মেধাভিত্তিক চাকরির দাবি গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়ে একটি ফ্যাসিবাদী সরকার ব্যবস্থার পতন হয়েছে আজকের দিনে।

এদিন বিজয় এসেছিল নানা প্রতিকূলতাকে অতিক্রমের পর। আন্দোলনে বাঁধা, হামলা, হুমকিতেও পিছু হটেনি ছাত্র-জনতা। নতুন বিজয় ছিনিয়ে নিতে জেলা হারিয়েছে ৯ জনকে। 

জুলাই আন্দোলন ঘিরে নওগাঁয় যে ৯ জন শহীদ হয়েছিলেন তারা হলেন, সদর উপজেলার শিমুলিয়া মন্ডলপাড়া গ্রামের লুৎফর মন্ডলের ছেলে শহীদ বিপ্লব মন্ডল, দপ্তরীপাড়া গ্রামের এনাব নাজেজের ছেলে শহীদ আস-সাবুর, দোগাছী গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে শহীদ মাহফুজ আলম শ্রাবন। 

এছাড়া আত্রাই উপজেলার তারাটিয়া গ্রামের শেখ আবু জাফরের ছেলে শহীদ শেখ ফাহমিন জাফর, শ্রীধরগুড়নই গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে শহীদ শাখিল আনোয়ার। মান্দা উপজেলার কশব ভোলাগাড়ী গ্রামের পিন্টু রহমানের ছেলে শহীদ রাসেল রানা, ধামইরহাট উপজেলার কৈগ্রাম ফার্সিাপাড়া গ্রামের মৃত সাখোয়াত হোসেনের ছেলে শহীদ বায়েজিদ বোস্তামি, বদলগাছী উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের আহম্মেদ উল্লাহ বাদলের ছেলে শহীদ রিদোয়ান শরীফ রিয়াদ এবং নিয়ামতপুর উপজেলার পানিশাইল গ্রামের মামুন সরদারের শহীদ রায়হান আলী।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নওগাঁর অন্যতম সংগঠক আরমান হোসেন বলেন, দীর্ঘ ৩৬ দিনের আন্দোলনের পর আমরা মুক্তি পেয়েছি। এ ঘটনায় নওগাঁর ৯ জন শহীদ হয়েছেন। আমরা তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ ব্যক্তিদের পরিবারকে গত ১৯ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। 

এছাড়া গত ২৫ মে নওগাঁয় শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রত্যেকের হাতে ১০ লাখ টাকা করে সঞ্চয়পত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। এই সঞ্চয়পত্র শুধু অর্থমূল্যের নয়, এটি জাতির পক্ষ থেকে শহীদদের প্রতি একটি শ্রদ্ধার নিদর্শন। 

প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
নানা আয়োজনে কুড়িগ্রামে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত
সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিজয় র‌্যালি ও আলোচনা সভা 
সাতক্ষীরায় গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা প্রদান
জয়দেবপুর রেলস্টেশনে ‘মুগ্ধ সুপেয় পানির কর্নার’ উদ্বোধন
সন্দ্বীপে আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ গ্রেপ্তার ২
শেখ হাসিনার পতনের দিন মিছিলে মুখরিত ছিল চট্টগ্রাম
ফেনীতে গণঅভ্যুত্থান দিবসে আলোচনা ও দোয়া
রাঙ্গামাটিতে টানা বৃষ্টিতে সাজেকের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ
গাজার সঙ্গে বাণিজ্য আংশিকভাবে পুনরায় চালু করবে ইসরাইল
যথাযোগ্য মর্যাদায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উদ্‌যাপন করেছে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ
১০