শিরোনাম
ঢাকা, ১৪ মে, ২০২৪ (বাসস): নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার ফরিদপুর অঞ্চলের সমন্বয়কসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা বান্দরবানের কুকি চীনের কাছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) গোয়েন্দা তথ্য ও সহযোগিতায় রাজধানীর কল্যাণপুর ও গাবতলীতে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- ফরিদপুর অঞ্চলের সমন্বয়ক রানা শেখ ওরফে আমির হোসাইন, মশিউর রহমান ওরফে মিলন তালুকদার ও হাবিবুর রহমান।
তাদের কাছ থেকে ৩টি স্মার্টফোন ও ২টি বাটনফোন উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলোতে তাদের প্রশিক্ষণের ভিডিও ও ছবি রয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, মার্শাল আর্টে ব্ল্যাক বেল্ট প্রাপ্ত আমির হোসাইন ওরফে রানা শেখ ২০০২ সালে হুজি নেতা ও মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মাওলানা আব্দুর রউফের কাছে প্রশিক্ষণের জন্য ময়মনসিংহে যায়। ময়মনসিংহের ভালুকায় মাদ্রাসায় পড়াশোনার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ নেয়। সে ২০০৩ সালে বাবা, মামা ও ভগ্নিপতিসহ মোট ১৮ জন সদস্য হুজি নেতা মাওলানা আব্দুর রউফের সাথে বৈঠকের সময় ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে পুলিশের কাছে ধরা পড়ে । বর্তমানে আলফা ইসলামিক লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির ইউনিট ম্যানেজার হিসেবে কমৃরত এই ধর্মান্ধ আমির সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য ৩ সদস্যকে ইতোমধ্যে বান্দরবানে কুকি চীনের সন্ত্রাসীদের কাছে পাঠায়। তাদের কাছে একাধিক কিস্তিতে সে লক্ষাধিক টাকা পরিশোধ করেছে।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত অপর জঙ্গি মশিউর রহমান প্রথমে ইসলামিক শাসনতন্ত্র আন্দোলনের সদস্য ছিল। ২০০২ থেকে ২০০৩ সালে হুজির সদস্য হিসেবে ময়মনসিংহে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত হুজি নেতা আব্দুর রউফের মাদ্রাসায় সামরিক ও আন আর্মড কমব্যাট বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেয়। ২০১৩ সালে অপরাপর হুজি নেতাদের সাথে গ্রেনেডসহ ঝালকাঠিতে গ্রেফতার হয়ে সে সাড়ে চার বছর সাজা খাটে। সে পাহাড়ি বৈরি পরিবেশে কমান্ডো হিসেবে টিকে থাকাসহ নানা বিষয়ে আট মাসের প্রশিক্ষণের জন্য দুই বছর বান্দারবানে কুকি চীনের সন্ত্রাসীদের সাথে অবস্থান করে। ২০২১ সালে শুরু হওয়া এই কষ্টকর প্রশিক্ষণ শেষ করে সমতলে ফেরত আসে।
তিনি বলেন, অপর সদস্য হাবিবুর রহমান নতুন। সে আলফা ইসলামিক লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির কর্মী হিসেবে আমির হোসেনের অধীনে কাজ করে।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা বাংলাদেশের পার্বত্য জেলাগুলোতে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাথে মিলে অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ে, দেশকে অস্থিতিশীল করে জঙ্গিদের খেলাফত প্রতিষ্ঠা, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর নিষিদ্ধ সংগঠনের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখা, নিজ ও পার্শ্ববর্তী দেশের বিরুদ্ধে ধর্মযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার অপেক্ষায় থেকে রসদ সামগ্রী এবং কর্মী সংগ্রহে তৎপর ছিল।
গ্রেফতারকৃতদের চার দিনের পুলিশ রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।