বাসস
  ১৭ মে ২০২৪, ১০:১৮
আপডেট : ১৭ মে ২০২৪, ১০:৫৮

দিনাজপুরে নো-হেলমেট নো-ফুয়েল এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে পুলিশ মাঠে নেমেছে

দিনাজপুর, ১৭ মে, ২০২৪ (বাসস): দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলায় পুলিশ  জ্বালানি তেলের পাম্পে “নো-হেলমেট, নো ফুয়েল” এই নীতি বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে ।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত জেলা সর্বোত্তই পুলিশ সম্বলিতভাবে মোটরসাইকেল আরোহীদের হেলমেট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে এই কার্যকর অভিযান শুরু করেছে। জেলা শহরের উপ-শহর লুৎফা পেট্রোল পাম্পে দফায় দফায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচারে নিয়োজিত কর্মীরা মোটরসাইকেল নিয়ে তেল ক্রয় করতে আসে। এদের মধ্য হেলমেট পরিহিত আছে তাদের নিকট পেট্রোল বা তেল বিক্রয় করা হয়। যারা হেলমেট ব্যবহার  করনি তাদের নিকট কোন পেট্রোল বিক্রয় করা হয়নি।
লুৎফা পেট্রোল পাম্পের ম্যানেজার আব্দুল কাদের জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা থেকে জেলার ১৩টি উপজেলায় ১৩২টি পেট্রোল পাম্প মালিকদের পাম্পে পুলিশের পক্ষ থেকে ডিজিটাল ব্যানার টানিয়ে দেওয়া হয়। ওই ব্যানারে মোটরসাইলে আরোহীদের সতর্ক করতে বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে ‘নো- হেলমেট নো- ফুয়েল’। পাম্প মালিকদের পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে যদি কোন মোটরসাইকেলে আরোহী হেলমেট ব্যবহার না করে কোন পাম্প থেকে পেট্রোল বা তেল  ক্রয় করে নিয়ে যায়, তবে ওই পাম্পের মালিকের বিরুদ্ধে যথার্থ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি পর্যবেক্ষণের জন্য প্রত্যেক পেট্রোল পাম্পে পুলিশের নজরদারি দৃশ্যমান ছিল।
গতকাল সকাল ১০ টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত জেলার ১৩টি থানার ওসি ও তার অধীনস্থ কর্মকর্তারা পাম্পগুলোতে কঠোরভাবে নজরদারি মধ্য পর্যবেক্ষণ করতে দেখা গেছে। ফলে অভিযানের প্রথম দিন হেলমেট ব্যবহারকারীরা তেল কিনতে পেরেছেন। অনেকে বাসায় গিয়ে হেলমেট পড়ে পাম্প থেকে তেল কিনতে  পেরেছেন।  
জেলার ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ মোটরসাইকেল আরোহীদের হেলমেট ব্যবহারে বাধ্য করতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত এ অভিযানে দৃশ্যমান ভূমিকা পালন করেছে। সারা জেলার মতো উপজেলাতেও জ্বালানি তেলের পাম্পে “নো হেলমেট, নো ফুয়েল” নীতি বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে থানা পুলিশ।
দিনাজপুর ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ পরিদর্শক আতাউর রহমান জানান, গত পরশু ১৫ই মে দিনাজপুর পেট্রোল পাম্প মালিকদের সাথে  এ বিষয় নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠকে জেলার ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে নিয়োজিত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোশফিকুর রহমান উপস্থিত থেকে পেট্রল পাম্প মালিকদের মোটরসাইকেলে আরোহীদের হেলমেট ব্যবহারে বাধ্য করতে তাদের কাছেএই সহযোগিতা চান। জেলা পেট্রোল পাম্পের মালিক ও কর্মকর্তারা সকলেই এই কাজের সাথে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন। পাম্প মালিকদের  সাথে আলোচনা করে পুলিশ জেলায় মোটরসাইকেল আরোহীদের হেলমেট ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণ অভিযান শুরু করেছে।      
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) শাহ ইফতেখার আহমেদের নির্দেশনায় উপজেলার ১৩২ টি জ্বালানি তেলের পাম্প এবং খুচরা পেট্রোল ও তেল ব্যবসায়ী দোকানগুলোতে  “হেলমেট নাই তো তেল নাই” সম্বলিত ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছে থানা পুলিশ। পরে পাম্প মালিকদের এই নীতি শতভাগ বাস্তবায়ন করতে পুলিশ সুপার এর নির্দেশনা প্রদান করেন ওসি। এসময় পাম্পে জ্বালানি তেল নিতে আসা মোটরসাইকেল চালকদের মাঝে সচেতনতা মূলক বক্তব্য দেন  পাম্পে কর্তব্যে  পালনে থাকা  পুলিশ কর্মকর্তারা।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, “প্রতিদিন সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন, তাদের অধিকাংশ হেলমেট ব্যতিত মোটরসাইকেল চালনা করার কারণে নিহত হয়েছে। মোটরসাইকেল চালকদের মাঝে শতভাগ হেলমেট পরিধান নিশ্চিত করা গেলে এই প্রাণহানি অনেকাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব। এই লক্ষে আমাদের পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনায় আমরা জেলার সবগুলো থানার পুলিশ এই কাজ   শুরু করেছি।
তিনি আরো বলেন, “হেলমেট ছাড়া কোন মোটরসাইকেল চালককে তেল না দিতে আমরা পাম্প কতৃপক্ষকে কঠোরভাবে নির্দেশনা দিয়েছি। তারাও এই নিয়ম মেনে চলবে বলে আমাদেরকে আশ্বস্থ করেছে।
জেলা পুলিশ সুপার শাহ ইফতেকার আহমেদ জানান, চলতি মে মাসের গত কয়েকদিনে বেশ কয়টি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহীরা মাথায় গুরুতর আঘাতে মারা গেছে।  ওইসব মোটরসাইলে আরোহীদের হেলমেট ব্যবহার থাকলে এ ধরনের ক্ষতি নাও হতে পারতো। সে কারণেই দিনাজপুর জেলায় মোটরসাইকেলে আরোহীদের হেলমেট ব্যবহারের জন্য সপ্তাহব্যাপী পুলিশ  মোটরসাইকেল আরোহীদের সচেতন  কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
তিনি বলেন, এরপর যদি কোন মোটরসাইকেল আরোহী হেলমেট ব্যবহার না করে তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা সহ কারাদ-ের ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে।