বাসস
  ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:২৪

রংপুরে সরিষা ক্ষেতে মধু চাষ করে বাড়তি আয়ের আশা

 

রংপুর, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : জেলার হলুদ ফুলে ভরা সরিষা ক্ষেতে অনেক কৃষক মধু চাষ করে বাড়তি আয়ের আশা করছেন। ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ার আশায় কৃষকরা ক্ষেত পরিচর্যা করছে। 

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রংপুর  জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৮ হাজার ২৩৬ হেক্টর জমিতে  সরিষা চাষ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১ দশমিক ৬ মেটিক টন ফলন পাওয়া যাবে। এসব সরিষা ক্ষেতের মধ্যে প্রায় সাড়ে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২ হাজারের বেশি  মৌমাছির বক্স স্থাপন করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে ২হাজার কেজি মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

প্রতি কেজি মধু  সর্বনিম্ন ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হলে ৫০ লাখ টাকার ওপর মধুতে আয় হবে কৃষকদের। কৃষি অফিসের মতে সরিষা ক্ষেতে মৌ বক্স স্থাপন করা হলে ফলন ৩ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে।

এছাড়া  জেলার বিভিন্ন আম বাগানে মৌবক্স স্থাপন করে আরও ৫ হাজার কেজি এবং বিভিন্ন লিচু বাগানে মৌবক্স স্থাপন করে অতিরিক্ত সাড়ে ৪ হাজার  কেজি মধু উৎপন্ন হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে চাষকৃত সব সরিষা ক্ষেত এবং আম ও লিচু বাগানে পরিকল্পিত ভাবে মৌচাষ প্রকল্পের অর্ন্তভুক্ত করা সম্ভব হলে এসব উৎস থেকে প্রতি মৌসুমে মৌমাছির চাষ করে শত কোটি টাকার মধু উৎপাদন করা সম্ভব।

এসব উৎপাদিত মধু দেশের স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানীর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

রংপুর সদরের উত্তম এলাকার আমিনুল ইসলাম,নজরুল ইসলাম বুলবুল  মিয়াসহ বেশ কয়েকজন চাষী জানান, বর্তমানে তাদের সরিষা ক্ষেতের বয়স হয়েছে ৪০ থেকে ৫৫ দিন। আর  দেড় থেকে দুই মাস পরেই এ ফসল ঘরে উঠবে। গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় এবারও তারা সরিষা আবাদ করেছেন।  আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলনের আশা করছেন তারা।

তারা জানান, সরিষা আবাদে অন্যান্য ফসলের চেয়ে উৎপাদন ব্যয় অনেক কম এবং লাভ বেশি। মাত্র ৪টি চাষ দিয়ে এ ফসল ঘরে তোলা যায়। এছাড়া দু বার পানি ও একবার সার দিয়েই সরিষার আবাদ করা যায়। ৯০ থেকে ১০০ দিনের এ ফসল ঘরে তোলা যায়।  প্রতি হেক্টরে উৎপাদন পাওয়া যায় এক হাজার ৬০০ কেজি পর্যন্ত ।

নভেম্বরের প্রথম থেকেই এ ফসল বপন করা হয় এবং ফেব্রুযারির মাঝামাঝি সময়ে সরিষা ঘরে তোলা যায়। বিঘায় খরচ পড়ে  ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা।  এছাড়া মধু চাষ করলে বাড়তি আয় রয়েছে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল বাসস কে জানান, এবার সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। অনেক ক্ষেতে মৌ বক্স স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া রংপুর অঞ্চলে লিচু এবং আম বাগানসহ সরিষা ক্ষেতে মৌচাষ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।