শিরোনাম
রংপুর, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার এসএম মইনুল করিম বলেছেন, আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিচার যত শিগগিরই সম্ভব সময়ে শুরু করার জন্য রাষ্ট্রপক্ষ দিন-রাত সার্বক্ষণিক কাজ করছেন।
তিনি বলেন, ‘আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্তে যাদের নাম আসবে তাদেরই আসামি করা হবে। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম তদন্তে আসুক বা না আসুক, তাতে কিছু যায় আসে না।’
গত বছরের ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের মেধাবী ছাত্র আবু সাঈদ যেখানে পুলিশের গুলিতে নিহত হন, সেই স্থান পরিদর্শনের পর আজ সোমবার সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে আইসিটি প্রসিকিউটর এ কথা বলেন।
জুলাই বিপ্লবের সময় শহিদ আবু সাঈদ হত্যা মামলা এবং হত্যা, হামলা ও আহত হওয়ার সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য মামলা তদন্তের জন্য ব্যারিস্টার করিম বর্তমানে রংপুর সফরে ১২ সদস্যের আইসিটি প্রসিকিউশন টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এর আগে গতকাল রোববার, আইসিটি প্রসিকিউশন টিম রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামে শহিদ আবু সাঈদের বাড়ি পরিদর্শন করেন এবং তদন্ত প্রক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত বিষয়াদি নিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন।
আইসিটি প্রসিকিউশন টিম আজ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু সাঈদ গেটে (তৎকালীন গেট নম্বর ১) আবু সাঈদের হত্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনাস্থলের একটি 'স্কেচ ম্যাপ' তৈরি করেন।
দলটি ঘটনার দিন আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিক এবং অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলেন এবং ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মূল ফুটেজ সংগ্রহ করেন।
আইসিটি প্রসিকিউশন টিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সিন্ডিকেট কক্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলীর সাথেও বৈঠক করেন।
এছাড়াও, তদন্ত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আইসিটি টিম জুলাই-আগস্ট বিদ্রোহের শিকার এবং শহিদদের আত্মীয়দের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কক্ষে কথা বলেন এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেন।
সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ব্যারিস্টার এসএম মঈনুল করিম আরও বলেন, তারা আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে রংপুরে এসেছেন। নিহতদের এবং সেই ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ এবং বক্তব্য শুনছেন।
তিনি বলেন, ‘সুতরাং, যদি আমরা প্রাথমিকভাবে তদন্তের মাধ্যমে সত্যতা পাই, তাহলে আমরা এটিকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করব... আমরা সাংবাদিকদের কাছ থেকেও তথ্য এবং প্রমাণ সংগ্রহ করব। পরে, আমরা যেসব হাসপাতালে ডাক্তাররা ক্ষতিগ্রস্তদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছিলেন সেখানে যাব।’
এক প্রশ্নের জবাবে আইসিটি প্রসিকিউটর বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের অন্যান্য মামলার গতি হিসেব করলে দেখা যাবে বছরের পর বছর সময় লাগে... সাগর-রুনি হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত চার্জশিটও আসে নাই।’
তিনি বলেন, ‘আর সেখানে আমরা মাত্র এক সপ্তাহ আগে আবু সাঈদ হত্যার অভিযোগ পেয়েছি...আমরা চলে এসেছি...আমরা দিনরাত কাজ করছি...যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা এই মামলার বিচার কাজ শুরু করব।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু কতদিনে এটা যদি সময় বেঁধে দেওয়া হয় বা সময়ের বিষয়ে যদি আমাদের ওপড় চাপ হয়... তাহলে এই বিচারও বাধাগ্রস্থ হতে পারে...সেজন্য আমরা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য যত দ্রুত সম্ভব, আমরা বিচার শুরু করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা (আইসিটি) শুধু নামে আন্তর্জাতিক থাকতে চাই না, আমরা মানেও আন্তর্জাতিক হতে চাই...এবং এ জন্যই আমাদের এই আইনে একটা ভিডিও ফরেনসিকের দরকার নেই এবং আমরা যেকোনো উৎস থেকে এটি পেতে পারি।’
আইসিটি প্রসিকিউটর বলেন, ‘আমরা আপনাদের কাছে ছুটে এসেছি একদম টাটকা ভিডিও নেওয়ার জন্য। তাহলে, এ থেকেই আপনারা (সাংবাদিকরা) বুঝতে পারবেন যে আমরা কতটা আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে আমাদের কাজটা করতে চাচ্ছি।’