চীনের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধির জন্য তৌহিদের আহ্বান

বাসস
প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩:৪৮
চীনে সরকারি সফররত পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোঃ তৌহিদ হোসেন আজ সাংহাই ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজে আয়োজিত একটি সেমিনারে অংশ নেন। ছবি: পিআইডি

ঢাকা, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): চীনে সরকারি সফররত পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোঃ তৌহিদ হোসেন আজ ন্যায়সঙ্গত প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য চীনের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনা এবং আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধির উপর জোর দিয়েছেন।

আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাংহাইয়ের সাংহাই ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (এসআইআইএস)-তে "শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য আমাদের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি" শীর্ষক এক সেমিনারে মূল বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।

হোসেন বিশ্ব শান্তির জন্য একটি ভবিষ্যৎমুখী দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন এবং টেকসই উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার ভিত্তি হিসেবে অর্থনৈতিক সহযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার উপর জোর দেন।

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করে বলেন, শান্তি ও নিরাপত্তা হচ্ছে আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব যা অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক কাঠামো ও প্রতিনিধিত্বহীন গোষ্ঠী বিশেষ করে যুব ও মহিলাদের ক্ষমতায়নের উপর আরও বেশি জোর দেওয়ার দাবি করে।

রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে, তৌহিদ হোসেন রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরির উপর জোর দেন। তিনি বলেন, "সংঘাতের সমাধানে বাংলাদেশ ও চীন উভয়েরই গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থ রয়েছে এবং সমাধানে আমাদের অবশ্যই আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করতে হবে।" 

উপদেষ্টা বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে গভীর ঐতিহাসিক সম্পর্ক তুলে ধরেন, যা প্রাচীনকাল থেকে শুরু হয়েছে এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) সহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ সম্পর্ক একটি গতিশীল অংশীদারিত্বে রূপান্তরিত হয়েছে।  

তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে চীনের উন্নয়ন সহায়তা ও বিনিয়োগের রূপান্তরমূলক ভূমিকার উপর জোর দেন, যা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।

হোসেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে পরিচালিত ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির মতো বাংলাদেশের সফল সামাজিক উদ্যোগগুলি তুলে ধরেন, যা গ্রামীণ নারীদের ক্ষমতায়ন করেছে, সামাজিক সম্প্রীতি গড়ে তুলেছে। তিনি যুবসমাজের উন্নয়নে অনুরূপ রূপান্তরমূলক প্রচেষ্টার আহ্বান জানান।

অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের জন্য, তিনি বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে শক্তিশালীকরণ, বিনিয়োগ সম্প্রসারণ, জনগণের সঙ্গে জনগণের আদান-প্রদান আরও গভীর করা এবং বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।

এসআইআইএস সভাপতি ডঃ চেন ডংশিয়াওয়ের স্বাগত ভাষণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। তিনি বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ঐতিহাসিক ও ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্বের উপর আলোকপাত করেন। তিনি চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে অ্যাকাডেমিক ও গবেষণা সহযোগিতা বৃদ্ধিতে এবং বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে দুই দেশের ভূমিকা সম্পর্কে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন পণ্ডিত, কূটনীতিক, সরকারি কর্মকর্তা, তরুণ গবেষক, গণমাধ্যম প্রতিনিধি, এসআইআইএস-এর ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব ও বিশেষজ্ঞবৃন্দ এবং সাংহাই পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে মূল অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে এসআইআইএস -এর অ্যাকাডেমিক উপদেষ্টা বোর্ডের পরিচালক ডঃ ইয়াং জিমিয়ান বক্তব্য রাখেন এবং ছয়জন বিখ্যাত বিশেষজ্ঞের উপস্থাপনা ছিল উল্লেখযোগ্য।

বিশেষজ্ঞরা অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন থেকে শুরু করে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন। পরবর্তী অধিবেশনে সমৃদ্ধ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলামের সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ঢাবি তথ্য কেন্দ্রের সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশেষ পদক্ষেপ
জুলাই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
উজবেকিস্তানের আইটি পার্ক সিইও এর সাথে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক শামসুর রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
মধ্যপ্রাচ্যে ‘আপ বাংলাদেশ’-এর ৩৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা
রাজধানীতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ডিএমপির ২,৩৩৭ মামলা
ডিএমপির বিশেষ অভিযানে বিভিন্ন অপরাধে ৫৯ জন গ্রেফতার
সেনাবাহিনী প্রধানের নিজস্ব কোনো ফেসবুক প্রোফাইল নেই : আইএসপিআর
পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের মহড়া করবে রাশিয়া-বেলারুশ
প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরেছেন
১০