বাসস
  ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:০৯

বল সুন্দরী কুল চাষ করে গোপালগঞ্জের রুহুল আমিন এখন তরুণদের অনুপ্রেরণার উৎস

বল সুন্দরী কুল। ছবি: বাসস

// লিয়াকত হোসেন লিংকন //

গোপালগঞ্জ, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ (বাসস): বল সুন্দরী কুল চাষ করে গোপালগঞ্জের রুহুল আমিন এখন নিজ গ্রামের তরুণদের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছেন। সবাই এখন তার কাছে পরামর্শ নিতে আসেন।

প্রথমবারের মতো বল সুন্দরী কুলের চাষ করে সফল হয়েছেন তরুণ উদ্যোক্তা রুহুল আমিন (২২)। ৩০ হাজার টাকা খরচ করে এক বিঘা জমিতে কুল চাষ করে নব্বই হাজার টাকা আয় করেছেন। বেকার যুবক রুহুল আমিনের এমন সাফল্য সারা ফেলেছে এলাকায়। তাঁর এ সাফল্য দেখে অন্যরাও ঝুঁকছেন কুল চাষে।

গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার ভাবড়াশুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রাম নিবাসী আকতার আলী ঠাকুর এবং কোহিনূর বেগম দম্পতির কনিষ্ঠ পুত্র রুহুল আমিন। কৃষক পরিবারে বেড়ে ওঠা রুহুল আমিনের ছোটবেলা থেকেই কৃষি কাজের প্রতি একটু বেশি ঝোঁক। সেই ঝোঁক থেকেই এসএসসি পাশ করার পর চাকরি না খুঁজে কৃষি ক্ষেত্রে নতুন কিছু করার ভাবনা থেকেই এ বছর কুল চাষ মৌসুমে কুল চাষ শুরু করেন। অক্লান্ত পরিশ্রম আর পরিচর্যায় ৬ মাসের মধ্যে সবকটি গাছেই কুল ধরে।

সরেজমিনে রুহুল আমিনের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, রুহুল আমিনের বাড়ির পাশে নিজস্ব জমিতে কুল বাগান করা হয়েছে। বাগানে সোনালী হলুদ আভার বল সুন্দরী কুল দুলছে। কুল বাগান থেকে কুল সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত রুহুল আমিন। পোকামকড়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে চারদিকে নেট দিয়ে ঘেরা।

কুল বাগান ঘুরে দেখতে এসেছেন অনেকে। আবার কেউ কেউ কুল কিনতেও এসেছেন।

কুল চাষি রুহুল আমিন আরও বলেন, ‘আমি কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি। ছোটবেলা থেকেই কৃষি কাজের প্রতি আমার আলাদা একটা টান রয়েছে। কুল চাষ করে প্রথম বছরই সফলতা  পেয়েছি। এ বছর প্রায় ৯০ হাজার টাকার কুল বিক্রি করেছি। আমার এ সফলতা দেখে কুলের বাগান করতে অনেকেই আগ্রহী হয়ে পরামর্শ নিতে আসছেন। আগামী বছর ২০ শতাংশ জমিতে নতুন একটি জাত ভারত সুন্দরীর চারা রোপণ করব।’

রুহুল আমিনের বাবা আকতার আলী ঠাকুর বলেন, ‘রুহুল আমিন অন্য ছেলেদের মতো অলস সময় না কাটিয়ে কুল চাষে মনোযোগ দেয়। নিয়মিত কুল বাগান পরিচর্যা করে। এ কারণেই সে আজ সফল হয়েছে। তার এ সফলতা দেখে ভালো লাগার পাশাপাশি বাবা হিসেবে গর্ববোধ করি।’

রুহুল আমিনের কুল চাষে সফলতা দেখে এলাকার অনেকে এ বছর কুল চাষ শুরু করেছেন। স্থানীয় যুবক সোহেল রানা বলেন, রুহুল আমাদের এলাকার ছেলে। তার সফলতা দেখে আমরা যুবকরা খুশি। গ্রামের আমরা যারা বেকার যুবক রয়েছি, তারা রুহুলের সফলতা দেখে উৎসাহিত হয়েছি এবং কুল চাষ করার পরিকল্পনা করছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. বাহাউদ্দিন শেখ বলেন, ‘উচ্চ ফলনশীল কুল চাষ করে এ অঞ্চলের কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া কুল চাষে খুবই উপযোগি। আমরা রুহুল আমিনকে নিয়মিত পরামর্শ দিয়েছি। তিনি খুব অল্প সময়ে কুল চাষে যেভাবে সফলতা পেয়েছেন, সেটা অন্যদের জন্য দৃষ্টান্ত।’

তিনি আরও বলেন, ‘তার এ সফলতা দেখে অন্যান্য বেকার তরুণরা কুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।

বেকার যুবক ও শিক্ষিত যুবকরা বসে না থেকে কুল চাষে এগিয়ে এলে বেকারত্ব দুর করা সম্ভব। পাশাপাশি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও আসবে।’