বাসস
  ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩:২৬

অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে তামাবিল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন স্থানে দুদকের অভিযান

ঢাকা, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে তামাবিল স্থলবন্দরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম আজ জানান, সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরে শুল্ক কর্তৃপক্ষের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাজশে পণ্য লোড-আনলোড সেবা প্রদান না করেই ঠিকাদার বছরে প্রায় ২২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের সিলেট সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, শ্রমিক, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও শুল্ক স্টেশনের কর্মকর্তাদের বক্তব্য গ্রহণ করা হয় এবং নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়। 

পর্যালোচনায় দেখা যায়, মেসার্স হোসনে আরা এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লেবার সরবরাহ না করেই ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেআইনিভাবে ১০ কোটি ৮৭ লাখ ৬ হাজার ৪ শ’ ৬৯ টাকা লেবার খরচ বাবদ উত্তোলন করেছে। আমদানিকারকরা নিজেদের শ্রমিক দিয়ে পাথর লোড-আনলোড সম্পন্ন করেছেন। এলসি অনুমোদিত প্রতি ট্রাকে ৫ টন পাথর থাকার কথা থাকলেও ১০ থেকে ১২ টন করে আমদানি করা হয়, কিন্তু অতিরিক্ত ৬ টনের শুল্ক (প্রতি ট্রাকে ৩ হাজার ৩৬০ টাকা) পরিশোধ করা হয়নি। প্রতিদিন ৪৫০টি ট্রাকে আনুমানিক ১৫ লাখ ১২ হাজার টাকা শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে, যার বার্ষিক পরিমাণ প্রায় ৩৩২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

সার্বিক বিবেচনায়, শুল্ক কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলার কারণে সরকার এই বন্দরে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে টিমের নিকট অভিযানকালে প্রতীয়মান হয়েছে। 

এদিকে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কম্বল ও অন্যান্য আসবাবপত্র কেনাকাটায় অতিরিক্ত মূল্য দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ এবং নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-২ থেকে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানের সময় টিম হাসপাতালের স্টোর রুম পরিদর্শন করে, যেখানে নিম্নমানের কম্বল ও ম্যাট্রেস পাওয়া যায়। বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন ও রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই হাসপাতালে অনুমোদিত ডায়েট চার্ট অনুযায়ী মানসম্মত ও পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে না। এছাড়াও অভিযানকালে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়। 

এ ছাড়া চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাজশে বন্ড সুবিধার আড়ালে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচারসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ থেকে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানকালে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভুয়া ইনভয়েসিং ও আমদানি-রপ্তানি বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সংক্রান্তিতে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে কাস্টম কর্তৃপক্ষের জব্দকৃত দুটি কনটেইনার ভর্তি বিদেশি সিগারেট সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র এবং ২০২৩ সালের মার্চে গাজীপুরের একটি প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত পরিমাণ ৮০ হাজার টন সোডিয়াম সালফেট এনহাইড্রোস ও ৫০ হাজার টন সোডা অ্যাশ লাইট পাউডার আমদানির রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়।