মুন্সীগঞ্জ ,২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ( বাসস ) : জেলার গজারিয়া উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ফুলদি নদীর উপর ফুলদি সেতু ভিত্তি প্রস্তরের দু’ই যুগেও নির্মাণ হয়নি।ফলে নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাশের লক্ষাধিক মানুষকে যাতায়াতে চরম দুূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ঝড় বৃষ্টিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীর দ’ুপাড়ের মানুষকে ট্রলারে ফুলদি নদী পার হতে হচ্ছে । সেতু নির্মাণের কয়েক দফা ভিত্তি প্রস্তর আর আশ্বাসের মধ্যে দুই যুগ পার হয়েছে। এ সময়ে সেতু নির্মাণের কোন ফলপ্রসু উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। উপজেলা পদ্ধতি চালু হবার সময় প্রশাসনিক ভবন সমূহ নদীর পশ্চিম পাশে গজারিয়া ইউনিয়নের গোসাইরচরে নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে ঢাকা - চট্রগ্রাম মহাসড়কের সাথে সংযোগের প্রয়োজনে উপজেলা কমপ্লেক্স নদীর পূর্ব পাশে ইমামপুর ইউনিয়নের রসুলপুরে সরিয়ে নেওয়া হয়।পশ্চিম পাশে থেকে যায় উপজেলা ভূমি অফিসসহ অনেক বিভাগ। পূব ও পশ্চির্ম দ’ু পাড়েই রয়েছে অফিস আদালত , ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
জানা যায় , গজারিয়া বাসীর দীর্ঘ দিনের দাবির পেক্ষিতে বিএনপি সরকারের সময়ে তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা ২০০২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রসুলপুরে ফুলদি নদীর উপর সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।এরপর নির্মাণ কাজের আর কোন অগ্রগতি হয়নি। গজারিয়া বাসী শুধু আশ্বাশের বাণী শুনেছেন দুই যুগ । হোসেনদি গ্রামের মোঃ আজহার উদ্দিন বাসসকে জানান , ফুলদি নদীর উপর সেতু নির্মিত না হওয়ায় রসুলপুর , দৌলতপুর , গজারিয়া , হোসেনদি , ইসমানিচর , আধারমানিক গ্রামের লক্ষাধিক গ্রামবাসীকে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে । গজারিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ , গজারিয়া পাইলট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় , গজারিয়া পাইলট বালক উচ্চ বিদ্যালয় এবং গজারিয়া বাতেনিযা আলীম মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেয়া নৌকায় নদী পার হয়।
বর্ষা মৌসুমে এ দুর্ভোগ চরমে উঠে। নদীর পানি বৃদ্বি পেলে ফেরির পল্টুন ডুবে যায়। তখন খেয়া নৌকা দিয়েও পারাপারে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
ফুলদি নদীর উপর সেতু নির্মাণের বিষয়টি ২০১১ সালে একনেকের বৈঠকে উপস্থাপিত হয়। প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত না থাকায় এবং সেতু নির্মাণের গুরুত্বের বিবেচনায় সে সময় একনেকের বৈঠকে সেতু নির্মাণের বিষয়টির ব্যাপারে কোন সিন্ধান্ত না হওয়ায় ঝুলে যায় সেতু নির্মাণ। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নারায়নগঞ্জ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বাসসকে জানান ,ফুলদি নদীর উপর সেতু নির্মাণের কোন পরিকল্পনা আপাতত নেই। তবে ফুলদি নদীর উপর সেতু নির্মাণসহ মেঘনা নদীতে সেতু নির্মিত হলে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সাথে পদ্মা সেতুর মাধ্যমে পশ্চিমাঞ্চলের সেতু বন্ধন হবে।
গজারিয়ায় বাস্তবায়নাধীন শিল্পপাক , গার্মেন্টস পল্লী এবং ওষুধশিল্পপার্ক এর মালামাল সহজে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার পরিবহন করা যাবে । সেতু দুইটি নির্মিত হলে চট্রগ্রাম বন্দরের সঙ্গে খুলনার মোংলা ও পায়রা বন্দরের সড়ক যোগাযোগে প্রবেশদ্বার হবে। যানবাহন পারাপারের জন্য বর্তমানে বিকল্প হিসেবে ফুলদি নদীতে ফেরি সার্ভিস চালু রয়েছে।