ঢাকা, ৯ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশক নিধনে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এই বর্ষায় তারা ডিএনসিসির প্রতিটি এলাকায় গিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে মানুষকে সচেতন করবে। এছাড়াও ডিএনসিসির মশক কর্মীদের নিয়মিত ওষুধ ছিটানোর কাজে তদারকি বাড়ানো হবে। কোন কর্মীর অবহেলা পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে ডিএনসিসির অঞ্চল-০১ এর অন্তর্গত সব ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সাথে গণশুনানিতে অংশ নিয়ে ডিএনসিসি প্রশাসক একথা বলেন।
মোহাম্মদ এজাজ আরও বলেন, ‘বর্তমানে যেসব মশার ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলো কতটা কার্যকরী তা ল্যাবে আরও পরীক্ষা নীরিক্ষার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ডিএনসিসির মশক কর্মীদের কাজ যেন সঠিকভাবে তদারকি হয় সেজন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে।
পাশাপাশি, বিভিন্ন এলাকার সোসাইটিগুলোকে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
গণশুনানিতে ১ ও ১৭ নং ওয়ার্ডের আওতাধীন স্কুল-কলেজের শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, বাজার কমিটির সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক ও নেতৃবৃন্দ, সোসাইটির নেতৃবৃন্দ, যুবক ও ছাত্র প্রতিনিধি এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলেই গণশুনানিতে অংশ নিবেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। আজ অঞ্চল-১ এ গণশুনানির মাধ্যমে শুরু হয়েছে, ধারাবাহিকভাবে সব অঞ্চলে তা চলবে।
গণশুনানিতে অংশ নিয়ে নাগরিকরা সরাসরি ডিএনসিসি প্রশাসকের সঙ্গে তাদের অভিযোগ, পরামর্শ ও সেবা সম্পর্কিত বিষয়ে কথা বলেন এবং প্রশ্ন করেন। ডিএনসিসি প্রশাসক সকলের প্রশ্ন শুনেন ও জবাব দেন। এছাড়াও ডিএনসিসির পক্ষ থেকে উপস্থিত সবাইকে একটি ফরম দেওয়া হয়, সবাই যার যার মতামত ও অভিযোগ লিখে জমা দেন।
নগরবাসীর উদ্দেশ্যে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, 'সিটি কর্পোরেশনের কর্মীদের পাশাপাশি প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসাবাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে। কর্মীদের বিরুদ্ধে আমরা অনেকেই অবহেলার অভিযোগ করি। আমাদের কর্মীরা কিন্তু সবার বাড়ির ভিতরে গিয়ে ওষুধ দিতে পারে না, এটাও সত্যি। তাদেরকে তো বাউন্ডারির বা বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না আপনারা সবাই একটু খেয়াল করলেই দেখবেন বেশির ভাগ বাড়ির ভিতরে ও বাউন্ডারিতে মশার প্রজনন ক্ষেত্র রয়েছে, ময়লা আবর্জনা রয়েছে। অতএব, দয়া করে নিজেদের ঘরবাড়ি নিজেরা পরিষ্কার করুন।'
একজন নগরবাসীর প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, 'আমরা অভিযোগ পাচ্ছি কয়েকটি পার্ক ও মাঠে জনসাধারণ সবসময় প্রবেশ করতে পারে না। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিচ্ছি আজ থেকে ডিএনসিসির মালিকানাধীন সব পার্ক ও মাঠ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। কোন পার্ক ও মাঠে ডিএনসিসির অনুমতি ছাড়া কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোন ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারবে না। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্থানীয় কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করে মেইনটেন্সের জন্য কমিটি করে দিব। তারা মাঠ পার্ক দেখভাল করবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।'
গণশুনানিতে ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরীসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।