ঢাকা, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার বহির্ভূত অভিযোগও নিয়ে আসেন বিচার প্রার্থীরা।
ট্র্যাইব্যুনালের প্রতি মানুষের আস্থা থেকেই হয়তো তারা এমনটি করেছেন বলে মনে করেন প্রসিকিউশন। কেবলমাত্র মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালে পারিবারিক কলহ, জায়গা জমির বিরোধ ও চাকরি সংক্রান্ত বিষয়সহ অপ্রাসঙ্গিক কিছু অভিযোগও জমা পড়েছে।
এ বিষয়ে ট্র্যাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম আজ বাসস’কে বলেন, ‘সাধারণ মানুষ অনেকেই জানে না যে এখানে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালে) কোন ধরনের বিচার হয়। এজন্যই অনেকেই তাদের সকল ধরনের অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে। আমরা ইতোমধ্যেই পারিবারিক কলহ, স্বামী-স্ত্রী’র বিভেদ, জায়গা জমির বিরোধ, চাকরি সংক্রান্ত অভিযোগসহ নানা ধরনের অভিযোগ পেয়েছি যেগুলো মানবতাবিরোধী অপরাধের আওতায় পড়ে না বলে সেগুলো আমরা আর তদন্তে পাঠাই না। আর এসব আবেদন আসাকে আমরা স্বাভাবিক ভাবেই নেই। কারণ, ট্র্যাইব্যুনালের প্রতি মানুষের আস্থা থেকেই হয়ত তারা এমনটি করেছেন।’
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১০ সালে। এই ট্রাইব্যুনালের অধীনে ইতিমধ্যে বিচার শেষে একাধিক ব্যক্তির রায় কার্যকরও হয়েছে।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারিক কার্যক্রম এখন চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালে। প্রসিকিউশনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী জুলাই আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধসহ মোট ৩৩৯টি অভিযোগ দাখিল হয়েছে। যেখানে ৩৯টির তদন্ত কার্যক্রম (কমপ্লেইন্ট রেজিস্টার অনুসারে) চলমান। তদন্তের প্রাথমিক সত্যতার আলোকে মিস কেইস হয়েছে ২২টি। এইসব মিস কেইসে সর্বমোট অভিযুক্ত ব্যক্তি ১৪১ জন। যাদের মধ্যে গ্রেফতার রয়েছেন ৫৪ জন আর ওয়ারেন্ট ভুক্ত পলাতক আসামী ৮৭ জন।
চারটি মামলা তদন্ত চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। মামলাগুলো হলো আশুলিয়া লাশ পোড়ানোর ঘটনা, চানখারপুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনা, রামপুরা কার্নিসে ঝুলে থাকা গুলির ঘটনা ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘এই সকল মামলায় স্বল্পতম সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হতে পারে। তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক গৃহীত হওয়ার সাথে সাথেই আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।’