চট্টগ্রামে পাহাড় কেটে ভবন নির্মাণ, গুড়িয়ে দিচ্ছে সিডিএ

বাসস
প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:৪৪ আপডেট: : ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:৪৬
চট্টগ্রামে পাহাড় কেটে ভবন নির্মাণ, গুড়িয়ে দিচ্ছে সিডিএ। ছবি: বাসস

চট্টগ্রাম, ২১ এপ্রিল ২০২৫ (বাসস): চট্টগ্রাম নগরের আসকার দীঘির উত্তর পাড় এলাকায় পাহাড় কেটে অবৈধভাবে নির্মাণাধীন একটি বহুতল ভবন ভেঙে গুড়িয়ে দিচ্ছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। 

আজ সোমবার সকাল ১১টার দিকে নগরের এস এস খালেদ রোডে ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু হয়। সেখানে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান স্বপ্নিল ফ্যামিলি ওনার্সের নামে ৯২টি পরিবারের জন্য তিনটি আলাদা ভবন নির্মাণের কাজ চলছে।  ভবন ভাঙার  সময় সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।জানা গেছে, ‘স্বপ্নিল ফ্যামিলি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি বেসরকারি আবাসন কোম্পানি সেখানে ভবন নির্মাণের কাজ করছে। ১২৭ ফুট উঁচু পাহাড়টির ভবন নির্মাণের অংশ ক্রয়সূত্রে মালিকানায় আছে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সজল চৌধুরী, খোকন ধর, হিমেল দাশ, সুভাষ নাথ, রনজিৎ কুমার দে, রূপক সেনগুপ্তসহ ৯২ জন। ২০১৯ সালে কেনার পর ২০২৩ সালের ১৩ এপ্রিল সিডিএর ইমারত নির্মাণ কমিটির কাছ থেকে তিনটি বেজমেন্ট ও ১৪ তলা (পাহাড়ে বেজমেন্ট হয় না; বাস্তবে তিনটি পার্কিং ফ্লোর, ১৪ তলা আবাসিকসহ মোট ১৭ তলা) ভবনের অনুমোদন নেওয়া হয়। তবে পাহাড় না কাটাসহ ৮৭টি শর্ত দিয়েছিল সিডিএ। এসব শর্তের কোনোটিরই তোয়াক্কা করেনি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানটি।

অভিযোগ আছে, টিন দিয়ে উঁচু প্রাচীর তুলে পাহাড়টিকে দৃষ্টির আড়ালে নেওয়া হয়। এরপর সেটি ধীরে ধীরে প্রায় কেটে ফেলা হয়। সিডিএ ৩০ কাঠার জমিতে স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ জায়গা খালি রেখে ভবন নির্মাণের শর্ত দিয়েছিল। পাশাপাশি পাহাড়ের কোনও ক্ষতি না করে স্থাপনা নির্মাণের শর্ত ছিল অনুমোদনে।

কিন্তু সিডিএ’র এসব শর্ত না মেনে টিনের বেষ্টনী দিয়ে লোকচক্ষুর আড়ালে পাহাড় কাটে ভবন মালিক। পাশাপাশি শর্ত না মেনে পুরো জায়গাজুড়ে ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে বেজমেন্টসহ ভবনের ছয়তলা নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, পাহাড় কেটে পরিবেশের ক্ষতি করায় সিডিএ তাদের ভবন নির্মাণ বন্ধ রাখার আদেশ দিলে এর বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল ভবন মালিকরা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। হাইকোর্ট সিডিএর আদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিলে তারা কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। সিডিএ চেম্বার জজ আদালতে আপিল করে। আপিল বিভাগ গতকাল রোববার (২০ এপ্রিল) তাদের আবেদন খারিজ করে দেন । উচ্চ আদালতের নির্দেশনা পেয়ে আমরা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছি। পাহাড় কেটে পরিবেশের ক্ষতি করায় আমরা নির্মাণাধীন ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু করেছি।

এর আগে, ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি ৯২ জনের নামে জমিটির নামজারি হয়। সিডিএতে জমা দেওয়া নথিতে দেখা যায়, জমিটি বাড়ি হিসেবে লিপিবদ্ধ। অথচ ১৯৯৫ সালের পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে এবং ২০১০ সালের সংশোধিত আইন অনুসারে এটি পাহাড়। আর এই আইন অনুসারে পাহাড় কাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
নির্বাচনের পূর্বে মৌলিক সংস্কারের ব্যাপারে কোন ছাড় থাকবে না : সারজিস আলম
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় যৌথ অভিযানে অস্ত্রসহ ৪ সন্ত্রাসী গ্রেফতার
ঢাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে বাংলাদেশ হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ
জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় পরিবেশ বান্ধব অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
২০৩২ সালে চাঁদে গ্রহাণুর আঘাতে পৃথিবীর স্যাটেলাইট হুমকিতে পড়তে পারে: গবেষণা
আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া কখনো দেশ ছেড়ে পালায়নি: বাবুল
পিরোজপুরে আইসক্রিম ফ্যাক্টরিকে দুই লাখ টাকা জরিমানা
করোনায় আরও ৩ জনের মৃত্যু
আঞ্চলিক রাজনীতিতে চীনের উদ্যোগ ইতিবাচক : মির্জা ফখরুল
১০