চুয়াডাঙ্গার ৪ উপজেলায় বোরো ধান কাটার উৎসব

বাসস
প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৪:০৬
চুয়াডাঙ্গা জেলার ৪ উপজেলায় শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটার উৎসব। ছবি : বাসস

চুয়াডাঙ্গা, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫(বাসস) : জেলার ৪ উপজেলায়  শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটার উৎসব। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায়  এ বছরে ধানের অধিক ফলন ভালো হওয়ায় খুশি কৃষকেরা। একসাথে মাঠের সব ধানগুলো কাটার উপযুক্ত হওয়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ধান শ্রমিকেরা। 

জেলায় ৩৫ হাজার ২৩৬ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে, এ থেকে উৎপাদন হবে ২ লাখ ২৭ হাজার মেট্রিক টন ধান। তবে ধান কাটার ভর মৌসুমে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। অপরদিকে আকাশে চলছে মেঘের ঘনঘটা । যে কোন সময় কালবৈশাখী আঘাত হানতে পারে। এ ভয়ে  বৈরী আবহাওয়া আসার পূর্বেই চাষিরা তাদের ধান ঘরে তোলার জন্য তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু যথাসময়ে শ্রমিক না পাওয়ার কারনে ধান ঘরে তুলতে বিলম্ব হচ্ছে। 

এদিকে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারনে শ্রমিকেরা তাদের দৈনিক মজুরি আগের ছাড়া ১০০/২০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শ্রমিকেরা ফসলের মাঠে ও কৃষকের বাড়িতে চুক্তিভিত্তিক ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এতে একজন শ্রমিক প্রতিদিন ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা রোজগার করছে।

জীবননগর উপজেলার  উথলী, মৃগমারী, সেনেরহুদা, একতারপুর, সন্তোসপুর ও সিংনগর গ্রামের ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে কৃষকেরা বোরো ধান কাটার উৎসবে মেতে উঠেছে। কেউ আবার ধানের আটি বাঁধাছে কাউকে ধানের বোঝা মাথায় করে বহন করতে দেখা গেছে। অনেক মাঠের ধান পেকে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে। স্থানীয় চাষিরা বলছেন, শ্রমিক সংকটের কারনে এই ধান গুলো কাটতে বিলম্ব হচ্ছে। মৃগমারী গ্রামের ধান চাষি তারিক হোসেন বলেন, 'আড়াই বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। আল্লাহর রহমতে ধানের ফলন এবার অনেক ভালো হয়েছে। আমার এই ধান ৫/৬ দিন আগেই কাটার উপযুক্ত হয়ে গেছে। কিন্তু শ্রমিক না পাওয়ার কারনে এতোদিন ধান কাটতে পারেনি। আবার ৪০০ টাকার মজুরি ৫০০ টাকা চাচ্ছে। আজ আমি আমার ছেলের সাথে নিয়ে ধান কাটতে এসেছি। সেনেরহুদা গ্রামের ধান চাষি শহিদুল ইসলাম বলেন, 'ধান কাটা ও মাড়ায় করার জন্য এখন খুব ভালো আবহাওয়া যাচ্ছে। এই মাসের শেষের দিকে আবার বৃষ্টি হওয়ার কথা শুনছি। যার কারনে তাড়াতাড়ি ধান ঘরে তোলার চেষ্টা করছি। বৃষ্টিবাদল নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি। 

আরেক ধান চাষি মোমিন হোসেন বলেন, দুই বিঘা জমিতে এবার ধান চাষ করেছি।  বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঠের সব ধান একসাথে কাটা শুরু হয়েছে যার কারনে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। আর কয়েকটা দিন যদি আবহাওয়া এমন থাকে তাহলে ধান ঘরে তুলে নিতে পারবো'। আগামী ১০ দিনের মধ্যে অনেকের ধান ঘরে উঠে যাবে তখন আর শ্রমিক সংকট থাকবে না। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার জনানা, চলতি বোরো মৌসুমে জেলার ৪ উপজেলায়  ৩৫ হাজার ২৩৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। বোরো ধান আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিলো ৩৫ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে। বিঘা প্রতি ধানের ফলন হয়েছে ৩০/৩৫ মন হারে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। ধান উৎপাদন হবে ২ লাখ ২৭ হাজার মেট্রিক টন। ইতিমধ্যে মাঠে ৫৫ ভাগ ধান কৃষকেরা কেটে বাড়ি নিয়ে এসেছে। আমরা কৃষকদের দ্রুত ধান কেটে ফেলার পরামর্শ দিয়েছি। এলাকায় বোরো ধানের খড়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ কারনে এই ধান কাটতে শ্রমিক বেশি লাগে। সেই কারনে কিছুটা শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে। তবে কয়েকদিনের মধ্যে সেটা কেটে যাবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
জাতীয় লজিস্টিকস নীতি-২০২৫ অনুমোদন, বিনিয়োগ ও রপ্তানিতে গতি আসবে
সুন্দরবনে ইঞ্জিন বিকল হয়ে নদীতে ভাসমান ৪২ যাত্রীকে বোটসহ উদ্ধার 
লালমনিরহাটে তুলার গোডাউনে অগ্নিকাণ্ড 
পটুয়াখালীতে আইন অমান্য করায় ৯টি যানবাহনকে জরিমানা 
ডেঙ্গু আক্রান্ত ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ৩৪
এডিস মশার লার্ভা তদারকিতে মাঠে নামছে ডিএসসিসি প্রশাসন
এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ই-রেজিস্ট্রেশনে সময় বাড়ালো এনটিআরসিএ
ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানি শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে কাজ করছে ইউজিসি
সিরাজগঞ্জে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
মিশরের সীমান্ত এলাকা বন্ধ ঘোষণা করলো ইসরাইল
১০