বাংলাদেশে জলবায়ু সহনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে ৪০০ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি

বাসস
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ১৯:৩৪

ঢাকা, ১৯ জুন, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা, কার্বন নিঃসরণ হ্রাস এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কাজে সহযোগিতায় ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ অনুমোদন দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

বৃহস্পতিবার এডিবি’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই অর্থ ‘ক্লাইমেট-রেজিলিয়েন্ট ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ (সিআরআইডিপি)-এর দ্বিতীয় পর্যায় বাস্তবায়নে ব্যয় করা হবে। এডিবি’র এ ঋণের পাশাপাশি এতে আরও সহ-অর্থায়ন যোগ হচ্ছে ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা (এএফডি) থেকে ১১৩ মিলিয়ন ডলার এবং এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার।

এডিবি’র জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ সামীর খাতিওয়াদা বলেন, এই কর্মসূচি সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে একত্র করে জাতীয় নীতির সাথে সমন্বয় করে কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশের জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করবে।

তিনি  বলেন, এটি জলবায়ু অর্থায়নের পথে বাধা দূর করবে, অগ্রাধিকার খাতে অভিযোজন প্রচেষ্টা জোরদার করবে এবং জলবায়ু প্রভাব কমাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে।

সিআরআইডিপি-এর আওতায় ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ’ গঠন করা হবে, যার মাধ্যমে জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিতকরণ ও সরকারি মন্ত্রণালয়গুলোকে জলবায়ু প্রকল্প প্রণয়ন, বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নে দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে।

এছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে যুব ও লিঙ্গ সংবেদনশীল অভিযোজন ব্যবস্থার প্রসারের জন্য নতুন একটি কাঠামো গড়ে তোলা হবে। কর্মসূচির আওতায় একটি জাতীয় দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন কৌশল বাস্তবায়নেও সহায়তা থাকবে, যার মধ্যে রয়েছে শস্য বীমা, দুর্যোগ বীমা এবং দুর্যোগকালীন জরুরি অর্থায়ন ব্যবস্থা।

এছাড়া, এ কর্মসূচির আওতায় ২০২৫-২০৩৪ সাল মেয়াদি ‘ঢাকার পরিবহণ মহাপরিকল্পনা’ হালনাগাদ এবং ‘ইন্টিগ্রেটেড এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার মাস্টার প্ল্যান’-এর নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণেও সহায়তা দেওয়া হবে, যা পরিবেশবান্ধব পরিবহণ ব্যবস্থা ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে উৎসাহ দেবে।

জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। সাম্প্রতিক গবেষণায় বলা হয়েছে, যদি উচ্চ হারে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ চলতে থাকে, তবে ২০৭০ সালের মধ্যে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত হ্রাসের ঝুঁকি রয়েছে।

বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়ে বছরে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার বা জিডিপির ০.৭ শতাংশ ক্ষতি হয়। আর ২০৫০ সালের মধ্যে ভয়াবহ বন্যায় দেশের অর্থনীতি সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধির তুলনায় ৯ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে। ওই সময়ের মধ্যে দেশের ১৭ শতাংশ জমি এবং ৩০ শতাংশ খাদ্য উৎপাদন হ্রাস পেতে পারে, যা খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তাকে চরম ঝুঁকিতে ফেলবে।

এই কর্মসূচি এ খাতে সমন্বিত ও কার্যকর প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর অভাব, পর্যাপ্ত জলবায়ু অর্থায়নের ঘাটতি ও বেসরকারি খাতের স্বল্প অংশগ্রহণের মতো মূল প্রতিবন্ধকতাগুলো নিরসনে সহায়তা করবে। কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো- জলবায়ু বান্ধব নীতিনির্ধারণে সহায়ক পরিবেশ তৈরি, অভিযোজন সক্ষমতা জোরদার এবং প্রশমন কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা।

উল্লেখ্য, এডিবি একটি অন্যতম প্রধান বহু-পক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংক, যা এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহনশীল ও টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে কাজ করে। ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ব্যাংকের ৬৯টি দেশ সদস্য, যার মধ্যে এ অঞ্চলের সদস্য ৫০টি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
কুয়াকাটার খাস জমির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে : ভূমি উপদেষ্টা
রোহিঙ্গা সংকট সমাধান না হলে তা আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে : জাতিসংঘে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
রোহিঙ্গাসহ বিশ্বের সকল শরণার্থী সংকট মোকাবেলায় বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ : মির্জা ফখরুল
ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ বিরোধী প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে : প্রেস উইং
জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টকে আরও জনপ্রিয় করা হবে : যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা
বিশ্ববাসীকে পরিষ্কার বার্তা দিতে হবে, রোহিঙ্গা সমস্যা অত্যন্ত গুরুতর : তারেক রহমান
বিশ্ববিদ্যালয়ের মান উন্নয়নে শিক্ষা ও গবেষণায় গুণগত সমৃদ্ধি অর্জন করতে হবে : বেরোবি উপাচার্য
বাতিল কারিকুলামের উপর প্রশিক্ষণ : প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দুদকের অভিযান
কুমিল্লায় তামাক বিরোধী প্রশিক্ষণ কর্মশালা 
শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের সাথে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী
১০