২০৩২ সালে চাঁদে গ্রহাণুর আঘাতে পৃথিবীর স্যাটেলাইট হুমকিতে পড়তে পারে: গবেষণা

বাসস
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ২১:০৮

ঢাকা, ২৩ জুন, ২০২৫ (বাসস) : ২০৩২ সালে ২০২৪ ওয়াইআর৪ নামের এক বিশাল গ্রহাণু যদি চাঁদের ওপর আঘাত হানে, তবে সেখান থেকে ছিটকে পড়া বিপুল পরিমাণ ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীমুখী হয়ে স্যাটেলাইট ধ্বংসের ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন গবেষকরা।

চলতি বছরের শুরুর দিকে সাময়িকভাবে আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে ৬০ মিটার প্রস্থের (২০০ ফুট) এই গ্রহাণুটি ২২ ডিসেম্বর ২০৩২ সালে পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে। সে সময় এটিকে যেকোনো বৃহৎ গ্রহাণুর মধ্যে পৃথিবীতে আঘাত হানার সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাপূর্ণ (৩.১ শতাংশ) বলে চিহ্নিত করা হয়।

পরবর্তীতে টেলিস্কোপিক পর্যবেক্ষণে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এটি সরাসরি পৃথিবীতে আঘাত হানবে না। তবে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ থেকে প্রাপ্ত মে মাসের তথ্য অনুযায়ী, এটির চাঁদের সঙ্গে সংঘর্ষের সম্ভাবনা বেড়ে ৪.৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

কানাডার ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ের পল উইগার্ট ও তার দলের একটি নতুন গবেষণায় প্রথমবারের মতো এমন সংঘর্ষ হলে পৃথিবীতে তার প্রভাব কেমন হতে পারে, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

তিনি এএফপিকে বলেন, ‘এটি চাঁদে গত প্রায় ৫,০০০ বছরে সংঘটিত সবচেয়ে বড় আঘাত হতে পারে, যার প্রভাব একটি বড় আণবিক বিস্ফোরণের সমতুল্য হবে।’

গবেষণায় দেখা গেছে, এমন একটি সংঘর্ষে চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০ কোটি কেজি ধ্বংসাবশেষ মহাকাশে ছিটকে পড়তে পারে।

যদি গ্রহাণুটি চাঁদের পৃথিবীমুখী পাশে আঘাত করে, যার সম্ভাবনা প্রায় ৫০ শতাংশ, তবে এই ধ্বংসাবশেষের ১০ শতাংশ পর্যন্ত পৃথিবীর মহাকর্ষে আটকে পড়তে পারে এবং পরবর্তী কয়েক দিনে তা স্যাটেলাইটগুলোর জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

পল উইগার্ট বলেন, ‘এক সেন্টিমিটার আয়তনের একটি পাথর যখন প্রতি সেকেন্ডে কয়েক কিলোমিটার গতিতে চলে, তখন সেটা একটি বুলেটের মতোই মারাত্মক।’

তার মতে, এই সময় পৃথিবীর কক্ষপথে স্বাভাবিকের চেয়ে এক হাজার গুণ বেশি মিটিওর বা উল্কা ছুটে বেড়াতে পারে, যা স্যাটেলাইট ধ্বংস করতে পারে।

তবে মানুষের জন্য কোনো সরাসরি বিপদের আশঙ্কা নেই। বরং এটি পৃথিবীবাসীর জন্য একটি ‘চমৎকার উল্কাবৃষ্টির দৃশ্য’ উপহার দিতে পারে, বলছেন গবেষকরা।

তবে, উইগার্ট মনে করিয়ে দেন, চাঁদের পৃথিবীমুখী পার্শ্বে এটির সরাসরি আঘাত হানার সম্ভাবনা এখনো মাত্র দুই শতাংশ। এই গ্রহাণু ২০২৮ সালের আগে আর দেখা যাবে না, ফলে নিশ্চিতভাবে কিছু জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

উইগার্ট বলেন, তবে ভবিষ্যতে যদি চাঁদের সঙ্গে সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত হয়, তাহলে এটিকে প্রতিহত করার জন্য মহাকাশ অভিযানের মতো পদক্ষেপ নেওয়ার পর্যাপ্ত সময় রয়েছে।

গ্রহাণুটি ২০২২ সালে নাসার ডার্ট মিশনের লক্ষ্যবস্তু ডিমরফোসের চেয়ে আকারে ছোট, তবে এটা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষার ‘ভালো লক্ষ্যবস্তু’ হতে পারে।

তবে যদি তা না হয়, এবং যদি এটি পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসে, তাহলে সেটিকে প্রতিহত করার চেষ্টা নিজেই বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, বলেও সতর্ক করেন তিনি।

এই গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি এআর১৪ ডাটাবেজে প্রকাশিত হয়েছে এবং অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটারস-এ জমা দেওয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ইন্টারনেটে আপত্তিকর কন্টেন্টের নিশানায় নারী রাজনীতিকরা : বাংলাফ্যাক্ট
আনিসুল-সালমান-শাজাহানসহ পাঁচজন রিমান্ডে
ঢাকা ওয়াসাকে বিশুদ্ধ পানির সরবরাহে হাইকোর্টের নির্দেশ
ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ ইসলামী ছাত্রশিবিরের
ঘুষ গ্রহণ, হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগে দেশব্যাপী নির্বাচন অফিসে দুদকের অভিযান
জুলাই যোদ্ধারা আগামী মাস থেকে ভাতা পাবেন : উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম
আমরা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি : আমির খসরু
নির্বাচনের পূর্বে মৌলিক সংস্কারের ব্যাপারে কোন ছাড় থাকবে না : সারজিস আলম
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় যৌথ অভিযানে অস্ত্রসহ ৪ সন্ত্রাসী গ্রেফতার
ঢাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
১০