মেহেরপুরে জাপানের মিয়াজাকি আম উৎপাদন

বাসস
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ১৫:১০
মেহেরপুরে জাপানের মিয়াজাকি আম উৎপাদন করেছেন মির্জা গালিব। ছবি: বাসস

মেহেরপুর, ৫ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : মাটি ও আবহাওয়ার অনুকূলতায় মেহেরপুর  জেলার মাটিতে নানা জাতের চাষাবাদের অপার সম্ভাবনার দিগন্ত খুলে দিচ্ছে। এবার সেই তালিকায় যোগ হয়েছে বিশ্বের অন্যতম ফল ‘মিয়াজাকি’ আম। 

জেলা সদরের যুবক মির্জা গালিব গোপালপুর গ্রামে মিয়াজাকি আম উৎপাদনে করে দেখিয়েছেন এই ব্যতিক্রমী সাফল্যের মুখ। ২ বিঘা জমিতে মাত্র ৭৭টি গাছ দিয়ে ফল পেতে শুরু করেছেন তিনি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিয়াজাকি আমের আদি নিবাস জাপানের কিউশু দ্বীপের মিয়াজাকি প্রিফেকচার। সেখানকার উষ্ণ আবহাওয়া ও সূর্যালোকের মাত্রা এই আম চাষে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এই আমকে সূর্যের ডিম নামেও ডাকা হয়। রঙিন গা, চামড়ার ওপর লালচে আভা, উচ্চ পুষ্টিমান ও অস্বাভাবিক মিষ্টতার কারণে এই আম বিশ্বব্যাপী বিশেষ চাহিদার রয়েছে।

আমচাষী মির্জা গালিব বলেন, ‘প্রথমে ইউটিউব ও ইন্টারনেট ঘেঁটে এই আম সম্পর্কে জানি। পরে বিভিন্ন উৎস থেকে চারা সংগ্রহ করে আড়াই বছর আগে ২ বিঘা জমিতে ৭৭টি গাছ লাগাই। এবারই প্রথম ভালো ফলন পেয়েছি।’

তিনি আরও বলেন,  ‘প্রাথমিকভাবে গাছে যত্ন ও পরিচর্যায় একটু বেশি শ্রম ও খরচ লেগেছে। তবে ফল দেখে মনে হচ্ছে এই পরিশ্রম সার্থক হবে। আগামী মৌসুমে আরও বড় পরিসরে চাষের পরিকল্পনা রয়েছে।’  এবছর  তিন মন আমের ফলন হতে পারে। আগামীবছর প্রতিটি গাছে আশানারুপ আম পাবেন বলে আশা করছেন গালিব।

জেলা কৃষি বিভাগও এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগে খুশি। জেলা কৃষি কর্মকর্তারা  বলেন, ‘মিয়াজাকি আম চাষে আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ এবং কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। আগ্রহীদের জন্য এটি একটি সম্ভাবনাময় উচ্চমূল্যের ফল।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক  সামছুল আলম জানান,  বিশ্বের বিলাসবহুল ফল হিসেবে পরিচিত মিয়াজাকি আম প্রথম ১৯৮০ সালে বাণিজ্যিকভাবে জাপানে উৎপাদিত হয়। পরবর্তীতে ভারত, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইনসহ কিছু দেশে পরীক্ষামূলক চাষ শুরু হয়। তবে এটি ফলন পাওয়া যেমন সময়সাপেক্ষ, তেমনই এর জন্য প্রয়োজন হয় বিশেষ যত্ন, সূর্যালোক, নিয়মিত সেচ এবং সুনির্দিষ্ট আবহাওয়া।

স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মিয়াজাকি আম যদি বাজারজাত ও রপ্তানির পর্যায়ে যেতে পারে, তবে এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য নতুন একটি সম্ভাবনার দিক উন্মোচন করবে বলে মনে করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, মেহেরপুর খরাপ্রবণ এলাকা। এখানে বন্যা নেই। ফলে এই জেলার মাটিতে সবধরণের চাষাবাদের উর্বর স্থান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
চট্টগ্রামে মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত মা ও ছেলে গ্রেপ্তার
পবিত্র আশুরা জুলুম ও অবিচারের বিরুদ্ধে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় মানবজাতিকে শক্তি ও সাহস যোগাবে : প্রধান উপদেষ্টা
আওয়ামী নেতাদের দমন-পীড়ন ছিল এজিদ বাহিনীর সমতুল্য : তারেক রহমান
হালাল পণ্যের বাজার ও  উৎপাদনে অনুসরণীয় বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
সাবেক সিইসি শামসুল হুদার মৃত্যুতে ইসির শোক 
ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করায় ডিএমপিতে ৩,৬২২ মামলা
জেলা মডেল মসজিদ নির্মাণে বান্দরবানের মর্যাদা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে : ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা
শ্রম আইন মোতাবেক সব শ্রমিককে নিয়োগপত্র দিতে হবে : নজরুল ইসলাম খান
আন্দোলনে সরাসরি অংশ নিতে প্রতিবার বাসা থেকে বের হওয়ার সময় ভাবতাম আর ফিরতে পারব না : সিনথিয়া
তিন শূন্য লক্ষ্য অর্জনে কাজ করতে মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দের প্রতি পরিবেশ উপদেষ্টার আহ্বান
১০