সত্য প্রকাশ করলে ক্ষমা পাবেন ‘রাজসাক্ষী’ চৌধুরী মামুন

বাসস
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ২২:৩৫ আপডেট: : ১২ জুলাই ২০২৫, ২২:৩৮
সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। কোলাজ : বাসস

ঢাকা, ১২ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : চব্বিশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে সম্পূর্ণ সত্য প্রকাশ করার শর্তে ক্ষমা করা হবে বলে আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। 

এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার দেওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের লিখিত আদেশ আজ শনিবার প্রকাশ করা হয়েছে। গত ১০ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গণ-অভ্যুত্থানে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

ট্রাইব্যুনালের আদেশে বলা হয়েছে, ‘শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩(২)(এ), ৩ (২)(জি) ৩(২)(এইচ), ৪(১), ৪(২), ৪(৩) ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। 

এসময়  চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন এবং বাকি দুই আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক রয়েছেন। 

আদেশে আরো বলা হয়েছে, ‘অভিযোগ গঠনের পর অভিযুক্ত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে অভিযোগ গঠনের আদেশ পড়ে শোনানো হয়। এসময় তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, তিনি দোষ স্বীকার করবেন, নাকি নির্দোষ। তখন চৌধুরী মামুন দোষ স্বীকার করে বলেন সংশ্লিষ্ট অপরাধসমূহ এবং অপরাধ সংঘটনে তিনি জড়িত। তিনি অন্য সকল ব্যক্তি যথা প্রধান আসামি বা সহায়তাকারী সম্পর্কে তার জানা পূর্ণাঙ্গ এবং সত্য প্রকাশ করতে চান। 

এসময় অভিযুক্তের পক্ষে তার আইনজীবী একটি আবেদন দাখিলের মাধ্যমে তাকে ক্ষমা করার জন্য অনুরোধ করেন। 

ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অভিযুক্তকে ক্ষমা করার আবেদনে সম্মতি দেন এই শর্তে যে, তিনি পূর্ণাঙ্গ সত্য প্রকাশ করবেন। কারণ এই ধরনের সত্য প্রকাশ অপরাধ প্রমাণ এবং বিচারের জন্য সহায়ক হবে। 

আদেশে বলা হয়েছে, ‘ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্ত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের ক্ষমা চাওয়াকে যথাযথ মনে করে এবং সত্য প্রকাশ করলে সেই অনুযায়ী তাকে ক্ষমা করা হবে। আদালত আশা প্রকাশ করেন, তিনি সংঘটিত অপরাধের সাথে সম্পর্কিত তার জ্ঞানের মধ্যে থাকা সব ঘটনা, পরিস্থিতি এবং সংশ্লিষ্ট অপরাধের সঙ্গে জড়িত সকল ব্যক্তি, প্রধান আসামি বা সহায়তাকারী সম্পর্কে তার জানা সকল তথ্য ও সত্য প্রকাশ করবেন। চৌধুরী মামুন এই আদালতের শর্তগুলো মেনে নিয়েছেন। আদালত এই শর্ত সাপেক্ষে তাকে সুবিধাজনক সময়ে বিচারে সাক্ষী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকবে।’

আদেশে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু অভিযুক্ত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন সত্য প্রকাশে সাক্ষী হয়েছেন, সেজন্য তাকে কারাগারে নিরাপত্তার স্বার্থে অন্য বন্দীদের থেকে পৃথক করা প্রয়োজন। তাই সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষকে অভিযুক্ত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে তার নিরাপত্তার স্বার্থে অন্য বন্দীদের থেকে আলাদা করে আটক রাখার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।’

এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শনিবার সন্ধ্যায় বাসসকে বলেন, তাকে ক্ষমা  করার বিষয়টি নির্ভর করবে চূড়ান্তভাবে বিচার প্রক্রিয়া শেষে। ট্রাইব্যুনাল যদি তার সাক্ষ্যে সন্তুষ্ট হন, তাহলে চূড়ান্ত বিচার প্রক্রিয়া শেষে তাকে ক্ষমা করতে পারেন। বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে আদালতের নির্দেশে তাকে নিরাপত্তা দেয়া হলেও এই মুহূর্তে ক্ষমা করার প্রশ্ন আসবে না।     

গত বৃহস্পতিবার অভিযোগ গঠনের শুনানিকালে  ট্র্যাইব্যুনালের কাঠগড়ায় হাজির থাকা আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন নিজের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগ স্বীকার করে ঘটনার সত্য উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী হতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। পরে তার আইনজীবী এই বিষয়ে আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ৩ আগস্ট এবং সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৪ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র‌্যাবের সাফল্য আকাশচুম্বী
শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার সংরক্ষণে কাজ করছে সরকার : শ্রম সচিব
ঝিনাইদহ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত যুবকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর
খুলনার বৃক্ষমেলায় চারদিনে ১০ হাজার ৪২৩টি চারা বিক্রি
যারা পুরোনো সিস্টেমকে টিকিয়ে রাখতে চায় জনগণ তাদের মেনে নেবে না : নাহিদ ইসলাম
আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা হবে ‘নতুন রূপে’ : ইরান
আমরা রাজনীতি করব নতুন প্রজন্মকে একটি সুন্দর স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ দেওয়ার জন্য : আজম খান
সত্য প্রকাশ করলে ক্ষমা পাবেন ‘রাজসাক্ষী’ চৌধুরী মামুন
শিল্পকলায় জুলাই পুনর্জাগরণ উপলক্ষ্যে ‘ড্রোন শো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’ ১৪ জুলাই
চাঁদপুরে খতিব হত্যাচেষ্টায় অভিযুক্ত আসামিকে জেলে প্রেরণ
১০