সিলেট, ৩ আগস্ট ২০২৫ (বাসস) : সিলেটের কানাইঘাটে দুই ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুই সহোদরের মৃত্যুদণ্ড ও অপর সহোদরকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার সিলেটের অতিরিক্ত দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক ঝলক রায় এই রায় ঘোষণা করেন। আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, কানাইঘাটের বাটিবারাপৈত গ্রামের মৃত আবু শহীদের ছেলে বোরহান উদ্দিন (৪৬). তার সহোদর আব্দুন নুর (৫৩)। অপর সহোদর আব্দুস শুকুরকে (৫০) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
অপর আসামি বোরহান উদ্দিনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড, ১০ হাজার জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং আব্দুন নুরকে একবছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
অপর দুই আসামি মৃত সুলেমানের ছেলে ছাইদুল (৫৮) ও পার্শ্ববর্তী ভাটিপাড়ার মৃত আবু শহীদের ছেলে সুলতানকে (৩৮) দশ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। আসামিদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা পলাতক এবং অপর ৩ জন জেল হাজতে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ২২ জুলাই কানাইঘাট উপজেলার বাটিবারাপৈত গ্রামে বাড়ির সীমানা প্রাচীর নিয়ে বিরোধের জের ধরে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই দিন বাদি আব্দুল্লাহর ঘরে ঢুকে স্ত্রী সাজিদা বেগমের ওপর হামলা চালায় আসামিরা। এগিয়ে এসে রক্ষা করতে গেলে আব্দুল্লাহর বাবা আবু বকর (৭১) ও শ্বশুর মাওলানা মঈন উদ্দিনকে (৬০) কুপিয়ে জখম করে ফেলে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা আবু বকরকে মৃত ঘোষণা করেন। চারদিন পর সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শ্বশুর মঈন উদ্দিন।
এই ঘটনায় আবু বকরে ছেলে আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে কানাইঘাট থানায় ৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত কর্মকর্তা ২০০৭ সালের ১৪ অক্টোবর ৫ সহোদরসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারের জন্য আদালতে স্থানান্তর হলে ২০০৮ সালের ৯ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচারকার্য শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানি ও ১৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালতের বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।