নেত্রকোণায় গ্রামীণ ঐতিহ্য ‘কিচ্ছা উৎসব’ অনুষ্ঠিত

বাসস
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:১৬
নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রামীণ সংস্কৃতির ঐতিহ্য ‘কিচ্ছা উৎসব’। ছবি : বাসস

নেত্রকোণা, ৯ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রামীণ সংস্কৃতির ঐতিহ্য ‘কিচ্ছা উৎসব ১৪৩২’।

শনিবার সকালে কেন্দুয়া উপজেলা প্রশাসস ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সর্বস্বর’ এই উৎসবের আয়োজন করে। উপজেলার জয়হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে উৎসবের উদ্বোধন করেন কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার।

কিচ্ছা উৎসব দিন গড়িয়ে চলে গভীর রাত পর্যন্ত। উৎসবে পরিবেশন করা হয় মানবতা, নৈতিকতা ও বর্তমান সমাজ জীবনের গল্পভিত্তিক কিচ্ছা গান ও পালাগান, লোকজ কাহিনী, পুরাণ, ধর্মবিশ্বাস ও জনজীবনের নানান অভিজ্ঞতায় গাথা কিচ্ছা পালা।

আয়োজকেরা মনে করেন, কিচ্ছা উৎসবটি কেবল বিনোদনের আয়োজনই নয় এটি তরুণ প্রজন্মের কাছে নিজেদের শিকড়, ঐতিহ্য ও লোকসংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়া, হারানো গ্রামীণ লোকসংস্কৃতির অন্যতম ধারা কিচ্ছা গানের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম। পাশাপাশি গবেষক, সংস্কৃতিবিদ ও সাহিত্যপ্রেমীরা এখানে প্রত্যক্ষ করতে পারবেন বাংলার মৌখিক ঐতিহ্যের জীবন্ত রূপ।

বাংলার ঐতিহ্যবাহী কিচ্ছা পালার এই বৃহৎ সাংস্কৃতিক আয়োজনে খ্যাতনামা পালা ও কিচ্ছা গায়ক কুদ্দুস বয়াতী, বাউল সালাম সরকার, সায়িক সিদ্দিকী, দিলু বয়াতী, আশিক বয়াতীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বয়াতীরা দিনরাত কিচ্ছা, গান পরিবেশন করেন।

কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, আমি গত দুইবছর হলো কেন্দুয়ায় যোগদান করেছি। যোগদান করেই দেশের বিখ্যাত বাউল সাধক কেন্দুয়ার সন্তান জালাল উদ্দিন খাঁর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কেন্দুয়ায় তিন দিনব্যাপী জালাল মেলার আয়োজন করেছিলাম, যা দেশ-বিদেশে প্রশংসা কুড়িয়েছে। সেই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইতোমধ্যে কেন্দুয়াকে লোকসংস্কৃতির রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় কিচ্ছা উৎসবের আয়োজন করেছি। লোকসংস্কৃতি আমাদের শেকড়ের পরিচয় বহন করে। কিচ্ছা গান শুধু বিনোদন নয়, এটি নৈতিক ও সামাজিক শিক্ষারও উৎস।

উৎসবের অন্যতম আয়োজক সর্বস্বর সম্পাদক আবুল কালাম আল আজাদ বলেন, আমাদের সংস্কৃতির অন্যতম শিকড় কিচ্ছা পালা নিয়ে কেন্দুয়াতে প্রথম বৃহত্তর আয়োজন।

এই উৎসব সবার হৃদয় ছুঁয়েছে। প্রতিবছর এ আয়োজন নিয়মিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

উৎসবে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক, সংস্কৃতিকর্মী, শিল্পী ও বিপুল সংখ্যক দর্শক অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

নিজেদের হারানো সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয় বলে মনে করেন সংস্কৃতি সচেতনরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডে উজ্জ্বল রাম কৃষ্ণ ও বন্যা
রাঙ্গামাটিতে বিজিবির ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প
ঝালকাঠিতে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা 
মাদারীপুরে নদীর পাড় থেকে অবৈধভাবে মাটি চুরি, ভাঙন আতঙ্কে গ্রামবাসী
বাগেরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু শ্রমিক নিহত
বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে নতুন রাষ্ট্রদূতের অঙ্গীকার
চীন নেক্সপেরিয়া চিপ রপ্তানি পুনরায় শুরু করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে: ইইউ
সাবেক এমপি কাজী নাবিলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
মহাস্থান হাটে সবজির দাম স্থিতিশীল, সরবরাহ ভালো
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে ‘আন্তঃস্কুল ফুটবল টুর্নামেন্ট’ সফলে বর্ণাঢ্য র‌্যালি
১০