ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্কের টিকা নেই

বাসস
প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৫, ১৬:৫৩

মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন

ফেনী, ২৬ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): জেলার সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক বছর ধরে জলাতঙ্কের টিকা নেই। এতে বিপাকে পড়েছে উপজেলাবাসী।

কুকুরের কামড়ে আহত পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে জেলার সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছিলেন গৃহবধূ নাছিমা আক্তার। সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে জলাতঙ্কের টিকা নিতে এসে হতাশ হন তিনি। হাসপাতাল থেকে বলা হয় টিকা নেই। বাইরের দোকান থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে ১ ভায়েল টিকা কিনতে হবে। দরিদ্র নাছিমা আক্তার পড়ে যান বিপাকে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কথা হয় উপজেলার চর সাহাভিকারী এলাকার বাসিন্দা নাছিমার সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিবেশীরা জানিয়েছিল হাসপাতাল থেকে বিনা মূল্যে টিকা দেওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতাল থেকে বলা হচ্ছে টিকা কিনে আনতে হবে। পরে ৩ জনে মিলে ৫০০ টাকা দিয়ে কিনে এনেছি। এরপর চিকিৎসকেরা টিকা দিয়েছেন। এক ভায়েলের ওষুধ চারজনের শরীরে দেওয়া যায়।’

গত এক বছরের বেশি সময় ধরে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বন্ধ রয়েছে জলাতঙ্ক প্রতিরোধক এআরভি টিকা সরবরাহ। তাই টিকার জন্য হাসপাতালে এসে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে কুকুরে কামড় দেয়া রোগীদের।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগে অপেক্ষায় থাকা আরিফ হোসেন নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে তার সাত বছরের ছেলেকে কুকুর কামড় দেয়। হাসপাতালে আসার পর জানতে পারেন গত প্রায় ১৪ মাস ধরে টিকা সরবরাহ বন্ধ। পরে উপায় না পেয়ে বাইরের দোকান থেকে টিকা কিনে এনেছেন। তিনি চান সরকারিভাবে হাসপাতালে দ্রুত টিকা সরবরাহ নিশ্চিত করা হোক।’

হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জলাতঙ্ক প্রতিরোধে দুই ধরনের টিকা দেওয়া হয়। কুকুর, বিড়াল, শেয়াল বা বেজির কামড়ে গভীর ক্ষত হলে ও রক্ত গড়িয়ে পড়লে এআরভি (অ্যান্টির‌্যাবিক্স ভ্যাকসিন) ও আরআইজি (র‌্যাবিক্স ইমুনো গ্লুবুলিন) টিকা দিতে হয়। এ ছাড়া লেহন, আঁচড় বা ঘর্ষণের জন্য শুধু এআরভি দিলেই হয়। প্রতি মাসে এই টিকার চাহিদা গড়ে ১০০ ভায়েল, যা প্রায় ৩০০-৩৫০ জন রোগীকে প্রয়োগ করা যায়।

গত বছরের জুলাই মাসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ৩৩১ জন রোগীকে বিনামূল্যে এই টিকা দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা (স্যাকমো) মো. সাদেকুল করিম বলেন, ‘প্রায় এক ধরে এআরভির সরবরাহ নেই। জেলা সদর হাসপাতালে যেতে বললেও রোগীরা যেতে চান না। সরবরাহ বন্ধ থাকলেও বিভিন্নভাবে ব্যবস্থা করে গত বছরের আগস্ট মাসে ৬৯ জন এবং সেপ্টেম্বর মাসে ৩৮ জনকে জলাতঙ্কের টিকা দেওয়া হয়েছে। প্রতি মাসে প্রায় ৩৫০ জন কুকুর, বিড়াল ও শেয়ালের কামড়ে আহত রোগী হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।’

সরকারি টিকা সরবরাহ কবে নাগাদ পাওয়া যাবে এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এ বিষয়ে বারবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। এখনো কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। কবে থেকে আবার সরকারি টিকা সরবরাহ হবে, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। একই সঙ্গে হাসপাতালের এনসিডি কর্নারে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগ, ডায়বেটিসসহ বিভিন্ন রোগের ওষুধের সংকট রয়েছে।’

তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে জলাতঙ্কের টিকা পাওয়া যেতে পারে বলে আশা করছেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বাংলাদেশের বিপক্ষে নেদারল্যান্ডস দলে তিনটি পরিবর্তন
সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলে এক বিচারপতির বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানী সম্পন্ন
অক্সফোর্ডের ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে নিয়োগ পেলেন জাবি শিক্ষক তারিকুল ইসলাম
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যোগ দিতে ১৮০ পুলিশ সদস্যের ঢাকা ত্যাগ
রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতার ন্যায়বিচার নিশ্চিতের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত ওআইসি’র
হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র তাপসের সহযোগী টুটুল রিমান্ডে
সাতক্ষীরায় সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষমেলা শেষ
কালো ধোঁয়া ও নির্মাণসামগ্রী দূষণের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিশেষ অভিযান
চাঁদপুরে অর্ধশত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ 
‘নতুন কুঁড়ি’ সফল করতে মেহেরপুরে প্রস্তুতি সভা
১০