মেহেরপুর, ২৬ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে আক্রান্ত রোগীরা ২৫০ শয্যার মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভ্যাকসিন না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। চলতি আগস্ট মাসের ১০ তারিখে হাসপাতালে এই ভ্যাকসিনের মজুদ শেষ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ফলে বাধ্য হয়ে রোগীদের বাইরে থেকে উচ্চমূল্যে ভ্যাকসিন কিনে নিতে হচ্ছে।
হাসপাতালে কুকুরের কামড়ে জলাতঙ্ক ভ্যাকসিন না পেয়ে ১ সপ্তাহ ধরে রোজ ফিরে যাচ্ছেন সদর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের রুহুল আমিন। তিনি জানান- প্রতিদিনই বলা হচেছ ভ্যাকসিন নাই।
এদিকে রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালে ভ্যাকসিন সংকটে তাদের বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। একটি ডোজের দাম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, যা অনেকের পক্ষেই বহন করা কঠিন। হাসপাতালে ভ্যাকসিন সংকটের সুযোগে ফার্মেসীগুলো ৪শ টাকার ভ্যাকসিন ৫শ টাকা দাম নিচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫০ জন রোগী কুকুর বা বিড়ালের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন। অথচ প্রতিমাসে মাত্র ১৫০ থেকে ২০০ ভ্যাকসিন বরাদ্দ আসে। একটি ভ্যাকসিন চারজনকে দেয়া যায়। এই হিসেবে বরাদ্ধ পাওয়া ভ্যাকসিন দিয়ে সর্বচ্চ ১ সপ্তাহ মোকাবেলা করা যায়। ফলে মাসের ২২ দিন ভ্যাকসিন শূন্য থাকে। এ পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ রোগীকেই বিনা চিকিৎসায় ফিরতে হচ্ছে অথবা নিজেদের খরচে বাইরের ফার্মেসি থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে হয়। চিকিৎসা নিতে আসা আক্রান্তদের শতকরা ৮১ জন বিড়াল আক্রান্ত ও ১৯ জন কুকুর আক্রান্ত।
হাসপাতালের ওয়ার্ড ইনচার্জ-২ ইসমত জাহান জানান, সাম্প্রতিক সময়ে এলাকায় কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বাড়িতে বিড়াল পালনের প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও কয়েকগুণ বেড়েছে। কিন্তু সেই অনুযায়ী ভ্যাকসিনের সরবরাহ বাড়েনি।
হাসপাতালের ভ্যাকসিন ইনচার্জ আসমত আরা জানান, এই সংকট নিরসনে ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য তত্বাবধায়কের মাধ্যমে অনুরোধ জানানো হলেও ভ্যাকসিন সরবরাহ হয়নি।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক শাহরিয়া শায়লা জাহান বলেন, জলাতঙ্ক কুকুর-বিড়ালের কামড় কোনো ছোট বিষয় নয়। সময়মতো প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা না পেলে প্রাণঘাতী জলাতঙ্ক রোগে রোগীর মৃত্যু অনিবার্য। অথচ সরবরাহ না থাকায় ভ্যাকসিন দিতে পারছিনা। আমরা চাহিদা দিয়ে রেখেছি। পরিস্থিতি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে এখনও বরাদ্দ মেলেনি। চেষ্টা করছি দ্রুত ভ্যাকসিন নিশ্চিত করার। তিনি আরও বলেন, এই ভ্যাকসিন সংকট শুধু মেহেরপুরে না। উৎপাদন কম হচ্ছে বলে সারাদেশে সরবরাহ কম আসছে।