চট্টগ্রাম, ২১ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : চট্টগ্রাম বন্দরে তিনটি কন্টেইনারে ৬০ হাজার ৪৮০ কেজি আমদানি নিষিদ্ধ সোডিয়াম সাইক্লামেট তথা ঘনচিনি আটক করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার এইচ এম কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কাস্টমস আইন অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
গত ১৬ আগস্ট চালানটি চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায়।
পরে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি), কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এবং চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে তিনটি কনটেইনার থেকে এ ঘনচিনি আটক করে।
পণ্য চালানটি খালাসের জন্য উত্তর কাট্টলীর গোল্ডেন কন্টেইনার লিমিটেড পর্যন্ত নেওয়া হয়েছিল।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সূত্রপাত হয় রাজধানীর মতিঝিল এলাকার প্রতিষ্ঠান এইচ পি ইন্টারন্যাশনালের একটি চালান থেকে। প্রতিষ্ঠানটি চীন থেকে সোডা অ্যাশ লাইট ঘোষণায় তিনটি কনটেইনার আমদানি করে।
গত ১৬ আগস্ট এ সব কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। পরবর্তীতে খালাসের জন্য এগুলোকে চট্টগ্রাম নগরের উত্তর কাট্টলী এলাকার গোল্ডেন কনটেইনার ডিপোতে নিয়ে যাওয়া হয়।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ চালান খালাস স্থগিত করে এবং গত ১৬ সেপ্টেম্বরে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, ডিপো কর্তৃপক্ষ ও সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে কায়িক পরীক্ষা করা হয়।
পণ্যের নমুনা উত্তোলন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যানো প্রযুক্তি সেন্টার, খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাব ও কাস্টমস হাউস, চট্টগ্রামের ল্যাবে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হয়। তিনটি ল্যাবের পরীক্ষায়ই পণ্যটি ঘনচিনি হিসেবে নিশ্চিত হয়।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার এইচ এম কবির জানান, ঘনচিনি একটি কৃত্রিম মিষ্টিকারক, যা সাধারণ চিনির চেয়ে ৩০ থেকে ৫০ গুণ বেশি মিষ্টি। বিভিন্ন মিষ্টান্ন, বেকারি আইটেম, আইসক্রিম, জুস, চকলেট ও শিশু খাদ্যে এটি ব্যবহার করা হয়। তবে জনস্বাস্থ্যের জন্য এটি মারাত্মক ক্ষতিকর, যা ক্যান্সার, কিডনি ও লিভারের জটিল রোগের কারণ হতে পারে।
এজন্য সরকার আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২০২৪ অনুযায়ী ঘনচিনি আমদানি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে। কাস্টমস আইন, ২০২৩ অনুযায়ী নিষিদ্ধ পণ্য আমদানির অপরাধে চালানটি আটক করা হয়েছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
পণ্য চালানটির শুল্কায়নযোগ্য মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা এবং প্রযোজ্য শুল্ক-করহার ৬১ দশমিক ৮০ শতাংশ।
এ চালান আমদানির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।