সাতক্ষীরা, ২২ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : সাতক্ষীরার শ্যামনগরে জলবায়ু সংকট মোকাবেলা ও টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সকালে উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ধূমঘাট কৃষিপ্রতিবেশ বিদ্যা শিখন কেন্দ্রে ‘জলবায়ু সংকট, এগ্রোইকোলজি ও উপকূলের স্থানীয় অভিযোজন কৌশল’ বিষয়ক এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক ও শাপলা নারী উন্নয়ন সংগঠন এ কর্মশালার আয়োজন করে।
প্রশিক্ষণের শুরুতে অংশগ্রহণকারীরা ধূমঘাট কৃষিপ্রতিবেশ বিদ্যা শিখন কেন্দ্র পরিদর্শনের মাধ্যমে অভিযোজন চর্চার নানা কৌশল সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন।
এ সময় শাপলা নারী উন্নয়ন সংগঠনের সভানেত্রী অল্পনা রানী জৈবসার ও জৈববালাইনাশক তৈরি ও ব্যবহার বিধি সম্পর্কে আলোচনা করেন। এছাড়া পানির সংকট ও জলবায়ু সহনশীল কার্যকরী উপায় হিসেবে স্যালাইন পদ্ধতি, ক্যারেট বা ঝুঁড়িতে চারা তৈরি, ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, উপকূলীয় অঞ্চল দুর্যোগ প্রবণ ও জলবায়ু সংকটাপন্ন এলাকা। লবণাক্ততা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, জলাবদ্ধতা, পানির সংকট ইত্যাদি মোকাবিলা করে সারাবছর ফসল চাষের জন্য পরিকল্পিতভাবে কৃষি কাজ করতে হবে। বাজারের খাবার এক দিকে আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং অন্য দিকে অর্থ ব্যয় বৃদ্ধি করছে। এ জন্য বাড়ির পতিত জায়গার উপযুক্ত ব্যবহার করে ও জৈব সার এবং বালাইনাশক দিয়ে ফসল উৎপাদন করতে পারলে বাজারনির্ভরতা অনেকাংশে কমবে।
কর্মশালায় মথুরাপুর কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক সরমা রানী নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে উপকূলে চাষাবাদের জন্য কার্যকরী টাওয়ার, জলপট্টি ও প্রাকৃতিক মালচিং, হলুদ কার্ড, নীল কার্ড ও ফেরোমন টোপ ব্যবহারের কৌশল হাতে কলমে শেখান।
স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজীব বাছাড় বস্তায় আদা, রসুন, পেঁয়াজসহ অন্যান্য সবজি চাষে মাটি প্রস্তুত প্রণালী, বেড পদ্ধতিতে সবজি চাষ এবং জৈব উপায়ে বীজ শোধন প্রক্রিয়া, সমন্বিত ফসল চাষ ও মিশ্র চাষাবাদ পদ্ধতি তুলে ধরেন এবং উপকূলীয় ফসল চক্রের বর্ণনা দেন।
বারসিক কর্মকর্তা বরষা গাইনের সঞ্চালনায় ও ধূমঘাট কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্রের প্রতিনিধি অল্পনা রানী মিস্ত্রির সভাপতিত্বে কর্মশালায় বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রামকৃষ্ণ জোয়ারদারসহ ২৫ জন কৃষক, কৃষাণী ও যুব উদ্যোক্তা অংশ নেন।