
চুয়াডাঙ্গা, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস): 'সবাই মিলে গড়বো দেশ, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ' এই স্লোগানকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গায় গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ জেলা প্রশাসকের সাহিত্য মঞ্চে এই শুনানির আয়োজন করেন সমন্বিত দুর্নীতি দমন কমিশন ঝিনাইদহ কার্যালয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও জেলা দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটির আয়োজনে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
গণশুনানি উপলক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। সভার শুরুতেই স্বাগত বক্তৃতা করেন খুলনা বিভাগীয় দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক জালাল উদ্দীন আহম্মদ। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, চুয়াডাঙ্গাবাসিকে জেলার দুর্নীতি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে হবে। চুয়াডাঙ্গা জেলার সকল সরকারি কর্মকর্তাকে জেলাবাসীর সেবা নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতি মুক্ত দেশ গড়াই হোক সকলের লক্ষ্য।
এসময় আরও বক্তৃতা করেন-দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী, দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম এন্ড (অপস্) জামাল আল নাসের।
গণশুনানি পর্বের শুরুতেই জেলা গণপুর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মহসিন আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরা হয়। অভিযোগ প্রসংগে গণপুর্ত বিভাগের প্রকৌশলী বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে বোঝান।
এরপর চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডাঃ হাদী মোঃ জিয়া উদ্দিন আহম্মদের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগে পরিক্ষায় অর্থ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগটি করেন তুহিন হোসেন। সিভিল সার্জন হাদী জিয়া উদ্দিন বলেন, সঠিকভাবে ও স্বচ্ছ ভাবে পরিক্ষা হয়েছে। এই পরিক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের নিয়োগ সুপারিশ করা হয়েছে। এখানে কোন অনিয়ম হয়নি।
এরপর সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. বিদুৎ কুমার বিশ্বাস সদর হাসপাতালের পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন বাবদ ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠে। এই অভিযোগটি করেন আজকের পত্রিকার চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি মেহেরাব্বিন সানভি। এই অভিযোগের বিষয়ে ডাঃ বিদ্যুৎ জানান, হাসপাতালের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বাবদ বিপুল অর্থ ব্যয় হয়ে থাকে। তাছাড়া হাসপাতালে জনবল বেশি।
গণশুনানিতে সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ককে পরবর্তী এই ভুল যেন না হয়, সেজন্য সর্তক করে দেন দুদকের চেয়ারম্যান।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগী অভিযোগ করেন, দায়িত্বরত ডাঃ অনিক চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি ও অতিরিক্ত টেস্ট রিপোর্ট করিয়ে অধিক টাকা হাতিয়ে নেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে গণশুনানিতে ডাঃ অনিককে সর্তক করে দেন দুদকের চেয়ারম্যান।
চুয়াডাঙ্গা সাব রেজিষ্ট্রার ও রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভুমিদূস্য, দলিল রেজিষ্ট্রারে অতিরিক্ত টাকা আদায় ও নিয়মমতো অফিস না করার অভিযোগ উঠে।
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার আওতায় অবকাঠামো নির্মাণে অতিরিক্ত কর আদায় করছেন পৌর প্রশাসক ও স্থানীয় সরকরের উপপরিচালক শারমিন আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। অভিযোগে আরও উঠে আসে বরাদ্দ আসা সত্ত্বেও পৌর ড্রেন নির্মাণে কাজ না করা।
গণশুনানিতে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আহমেদ মাহবুব উল ইসলাম , নয়ন কুমার রাজবংশী, চার উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বিভিন্ন সরকারি সরকারি দপ্তরের দপ্তর প্রধান, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য, সাংবাদিক ও সাধারণ জনগণ।