হালদা নদীকে মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

বাসস
প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২০:৫৬
ছবি : বাসস

ঢাকা, ৬ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : হালদা নদীকে মৎস্য হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করে গতকাল ৫ নভেম্বর এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ ও পরিবেশগত মান উন্নয়নের মাধ্যমে রুইজাতীয় মাছের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিতকরণ ও গাঙ্গেয় ডলফিনের আবাসস্থল সংরক্ষণের লক্ষ্যে খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় ও মানিকছড়ি উপজেলা, চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি, রাউজান, হাটহাজারী উপজেলা এবং পাঁচলাইশ থানার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হালদা নদী এবং নদী তীরবর্তী ৯৩ হাজার ৬১২ টি দাগের ২৩ হাজার ৪২২ দশমিক ২৮০৫৯ একর জায়গা ‘হালদা নদী মৎস্য হেরিটেজ’ হিসেবে ঘোষণা করা হলো। 

এপ্রিল-জুন মাসে হালদা নদীর বিভিন্ন স্থানে রুইজাতীয় মাছের প্রজননের ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণ নিষিক্ত ডিম পাওয়া যায়।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, গেজেট প্রকাশের দিন থেকে কয়েকটি শর্ত কার্যকর হবে। এ নদী হতে কোনো প্রকার মাছ ও জলজ প্রাণি ধরা বা শিকার করা যাবে না। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে প্রতি বছর প্রজনন মৌসুমে নির্দিষ্ট সময়ে মাছের নিষিক্ত ডিম আহরণ করা যাবে। প্রাণি ও উদ্ভিদের আবাসস্থল ধ্বংসকারী কোনো প্রকার কার্যকলাপ করা যাবে না। ভূমি ও পানির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট বা পরিবর্তন করতে পারে এমন কোনো কাজ করা যাবে না। মাছ, ডলফিন ও অন্যান্য জলজ প্রাণির জন্য ক্ষতিকারক কোনো প্রকার কাজ করা যাবে না। নদীর চারপাশের বসতবাড়ি, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পয়:প্রণালী সৃষ্ট বর্জ্য ও তরল বর্জ্য নির্গমন করা যাবে না। কোনো অবস্থাতেই নদীর বাঁক কেটে সোজা করা যাবে না।

হালদা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ১৭ টি খালে প্রজনন মৌসুমে (ফেব্রুয়ারি-জুলাই) মৎস্য আহরণ করা যাবে না। 

হালদা নদী এবং এর সংযোগ খালের উপর নতুন করে কোনো রাবার ড্যাম এবং কংক্রিট ড্যাম নির্মাণ করা যাবে না। ‘হালদা নদী মৎস্য হেরিটেজ তদারকি কমিটি’-এ অনুমতি ব্যতিরেকে হালদা নদীতে নতুন পানি শোধানাগার, সেচ প্রকল্প স্থাপনের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করা যাবে না।

পানি ও মৎস্যসহ জলজ প্রাণির গবেষণার ক্ষেত্রে ‘হালদা নদী মৎস্য হেরিটেজ তদারকি কমিটি’- এর অনুমতি ব্যতীত কোন দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠান/ব্যক্তি হালদা নদী ব্যবহার করে কোন গবেষণা কাজ করতে পারবে না। 

মাছের প্রাক-প্রজনন পরিভ্রমণ সচল রাখার স্বার্থে হালদা নদী এবং সংযোগ খালের পানির প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।

সারা বছর হালদা নদীর কর্ণফুলী মোহনা থেকে নাজিরহাট ব্রিজ (অভয়াশ্রম এলাকা) পর্যন্ত ইঞ্জিন চালিত ভারী নৌযান (বালুবাহী ও পণ্যবাহী নৌকা এবং ড্রেজার) চলাচল করতে পারবে না। হালদা এবং তার শাখা নদীর বালুমহাল ইজারা বন্ধ করা এবং ড্রেজার দিয়ে/ক্ষতিকর পদ্ধতিতে বালু উত্তোলন করা যাবে না। নদীর অববাহিকা অঞ্চলে কোনো প্রকার তামাক চাষ করা যাবে না। নদীর অববাহিকা অঞ্চলে কৃষি জমিতে ক্ষতিকর কোন কীটনাশক বা বালাইনাশক ব্যবহার করা যাবে না। নদীর পাড় সংলগ্ন এলাকায় কোনো প্রকার ব্রিকফিল্ড স্থাপন করা যাবে না।

উন্নততর পরিবেশগত এবং প্রতিবেশগত ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এবং নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারণে এলাকার সীমা-পরিসীমা নির্ধারণসহ অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সময়ে সময়ে বিধি-নিষেধ আরোপসহ প্রজ্ঞাপনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করতে পারবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে জারিকৃত গত ১৩/১২/২০২০ তারিখের ৩৩.০০.০০০০.১২৭.২৩.০০১.২০-৩৪৩ সংখ্যক প্রজ্ঞাপনটি এতদ্দ্বারা বাতিল বলে গণ্য হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আর্থিক খাতে জলবায়ু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় নির্দেশিকা জারি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ডেঙ্গু বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচেতনতামূলক বার্তা
প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকেই আমরা জুলাই সনদ নিতে চাই : হাসনাত আব্দুল্লাহ
অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক উন্নয়নে পর্যাপ্ত তহবিল ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের আহ্বান বাংলাদেশের
কোনো অবস্থাতেই দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি সমর্থন করা হবে না : ডা. জাহিদ
মালদ্বীপে বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা খোলার প্রস্তাব
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস কাল
পাঁচটি ব্যাংক একীভূতকরণে শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে : বাংলাদেশ ব্যাংক
এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে জাবেদ করিম
স্লোভাকিয়ায় ভালুক নিধনের বিরুদ্ধে ইইউ’তে অভিযোগ দিয়েছে গ্রিনপিস
১০