
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ১১ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা সংযুক্ত করাসহ ছয় দফা দাবিতে দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে চবির শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ইসলামিক স্টাডিজ এসোসিয়েশনের উদ্যোগে এই মানববন্ধন পালিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ চাকসু প্রতিনিধিরাও অংশ নেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণ নিয়ে চাকসুর সহ-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক জিহাদ আফনাফ বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসন প্রতিটি সেক্টরে কাজ করছে, কিন্তু ইসলাম শিক্ষা নিয়ে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ একটি মুসলিম দেশ হয়েও ইসলামিক শিক্ষাকে প্রয়োজনীয় গুরুত্ব দিচ্ছি না। এ কারণেই সমাজে মূল্যবোধের শিক্ষা ধীরে-ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা নৈতিকতা ও আদর্শ গঠনের সুযোগ পাবে।’
দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বাংলাদেশের ৯২ ভাগ মুসলমান সিদ্ধান্ত নেবে এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কোন পদ্ধতিতে হবে। নৈতিকতা ও মানবিক শিক্ষায় সমৃদ্ধ হতে প্রাথমিক শিক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা সংযুক্ত করা জরুরি। সরকারকে আমরা এই যৌক্তিক দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ করছি।’
এসময় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ড. এনামুল হক বলেন, ‘ইসলাম শিক্ষাকে উৎখাত করার চেষ্টা বহু আগে থেকেই চালানো হয়েছে, বিশেষ করে ব্রিটিশ আমলে।
স্বাধীনতার পরও ইসলাম শিক্ষা বা আরবি নামের কারণে এ শিক্ষাকে সংকুচিত করা হয়েছে। এখন কিছু অনুষ্ঠানে বা প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থায় ইসলাম শিক্ষাকে সামান্যভাবে যুক্ত করার চেষ্টা চলছে, কিন্তু সেটি যথেষ্ট নয়। ইসলাম শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে।’
তাদের ছয়দফা দাবিগুলো হলো—
১. প্রাথমিক শিক্ষায় ‘ধর্মীয় শিক্ষক’ নামে একটি স্বতন্ত্র পদ সৃষ্টি করে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে৷
২. সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম ও ২য় শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি ও গণিতের পাশাপাশি নূরানী পদ্ধতিতে আরবি বর্ণমালা ও সহীহ কুরআন তেলাওয়াতের প্রাথমিক জ্ঞান বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৩. মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বিভাগীয় বিষয়গুলোর সঙ্গে ইসলাম শিক্ষা বিষয় যুক্ত করতে হবে।
৪. দেশের স্থিতিশীলতা, শান্তি ও সার্বিক অগ্রগতির স্বার্থে শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৫. প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ স্টাডিজ কোর্সের মত স্বতন্ত্র ইসলাম শিক্ষা কোর্স অপশনাল (ঐচ্ছিক) হিসেবে সংযোজন করতে হবে।
৬. আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এক বছরের ‘ডিপ্লোমা ইন ইসলামিক স্টাডিজ’ কোর্স চালু করতে হবে।