আজ ছিল ভয়াল সিডর দিবস 

বাসস
প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ২৩:৫৪
ছবি : সংগৃহীত

বরগুনা, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : আজ ছিল ভয়াল সিডর দিবস। এখন থেকে দেড় যুগ আগে ২০০৭ সালের এই দিনে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আঘাত হেনেছিল সুপার সাইক্লোন সিডর। এর ধ্বংসলীলায় মুহূর্তেই পাল্টে যায় উপকূলীয় জনপদের জীবন।  

তীব্র ঝড়ের সঙ্গে জলোচ্ছ্বাস পুরো উপকূল বিশেষকরে  দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল উপকূলের জেলাগুলো লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে যায়। ভেসে যায় ঘরবাড়ি, পশুপাখি আর অসংখ্য মানুষ।

আগামীকাল সেই ভয়াল ঘূর্ণিঝড়ের ১৮ বছর পূর্তি। সেই দুঃসহ দিনের কথা মনে করে এখনও আঁতকে ওঠেন বরগুনা উপকূলবাসী। এখনো তাদের তাড়িয়ে বেড়ায় সেই ভয়াল সিডরের ভয়াল স্মৃতি।

বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, ঘুর্নিঝড় সিডরের আঘাতে বরগুনা জেলায় ১ হাজার ৩৪৫ জন মারা যান, নিখোঁজ হয়েছেন ১৫৬ জন। ঝড়ের কবলে মারা পড়ে ৩০ হাজার ৪৯৯টি গবাদি পশু ও ৬ লাখ ৫৮ হাজার ২৫৯টি হাঁস-মুরগি। জেলার ২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬১টি পরিবারের সবাই কমবেশি ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়। গৃহহীন হয়ে পড়ে ৭৭ হাজার ৭৫৪টি পরিবার।

বরগুনায় সিডরের আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে  সিডরের এক বছর আগে থেকেই ছিল বেড়িবাঁধগুলো ছিল ঝুকিতে। সিডরের সময় এ জায়গায় জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা ছিল ২০ ফুট। ঝড় থেমে গেলে সেখানে অর্ধশত মানুষের লাশ পাওয়া যায়। 

সিডরের ধংসলীলার ১৮ বছরেও বরগুনায় নদী ও সাগর তীরবর্তী এলাকায় নির্মান করা হয়নি টেকসই বেরিবাঁধ। ফলে ঝড়ের সংকেত পেলেই উপকূলবাসী আতংকে দিন কাটায়।

সিডর-পরবর্তী সময়ে উঁচু টেকসই বেড়িবাঁধের দাবি উঠলেও সেই দাবি পূরণ হয়নি আজও। প্রতিনিয়ত ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে ঢুকছে জোয়ারের পানি, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি, ভেসে যাচ্ছে মাছের ঘের।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে,  বরগুনার ২২টি পোল্ডারের আওতায় প্রায় ৮০৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বেড়িবাঁধ রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটারই নিম্ন উচ্চতার, যা প্রতি বছরই বড় ধরনের ঝুঁকিতে থাকে। সম্প্রতি ১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বরগুনা জেলার ১৩ কিলোমিটার বাঁধের তীর সংরক্ষণ, ৯ কিলোমিটার বাঁধের ঢাল সংরক্ষণ এবং ৫১ কিলোমিটার মেরামতের কাজ শেষ হয়েছে। আরও ৫০ কিলোমিটার টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ চলমান।

এ বিষয়ে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হান্নান প্রধান বলেন, বরগুনায় অনেকগুলো প্রকল্পের মাধ্যমে বেড়িবাঁধ নির্মান কাজ চলমান রয়েছে এবং অনেক কাজ সমাপ্ত হয়েছে। কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ন স্থানে টেকসই বাঁধের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে এখানকার বাসিন্দারা কিছুটা হলেও জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে রক্ষা পাবে। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনীতির প্রবাহ সৃষ্টি করতে হবে : আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী
জলবায়ু অর্থায়ন কোনো দরকষাকষির বিষয় নয়, টিকে থাকার প্রশ্ন : ফরিদা আখতার
ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির দুইদিনের কর্মসূচি
‘জনগণের ঐক্য ও সাংস্কৃতিক বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা’ বইয়ের পাঠ উন্মোচন
চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকা'র দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে সভাপতি ড. চৌধুরী মাহমুদ ও সম্পাদক মোজাম্মেল 
‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চাই’
ভোটারদের কাছে বিনয়ের সাথে ভোট চাইতে হবে : ডা. জাহিদ
আজ ছিল ভয়াল সিডর দিবস 
বৈশ্বিক ইন্টারনেট স্বাধীনতার সূচকে ভারতের কাছাকাছি বাংলাদেশ
বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে : তথ্য উপদেষ্টা
১০