
চট্টগ্রাম, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): চট্টগ্রামের পটিয়ায় একটি বেনামি অ্যালুমিনিয়াম ফ্যাক্টরিতে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার ও প্রকৃত অভিযুক্তদের আড়াল করার অভিযোগে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল)-এর ব্যবস্থাপকসহ পাঁচ কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন প্রতিষ্ঠানটির একই কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক আপেল মাহমুদ বিপ্লব।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ।
তিনি বলেন, দণ্ডবিধির ৪০৯/২১৭/২১৮/১০৯ ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়েছে। তদন্তের সময় অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন— পটিয়ার জঙ্গলখাইন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গাজী মো. বখতিয়ার উদ্দিন (বকুল মেম্বার), কেজিডিসিএল উপ মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. তাজউদ্দিন ঢালী, উপ ব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মুহাম্মদ রিফাত নওশাদ ভূঁঞা, সাবেক মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী চৌধুরী ও সাবেক মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সুধীর কুমার সাহা রায়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৬ সালের ৯ মার্চ কেজিডিসিএল-এর ভিজিল্যান্স টিম পটিয়ার মনসারটেক এলাকায় একটি অ্যালুমিনিয়াম ফ্যাক্টরিতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। তখনকার প্রতিবেদনে চোরাই সংযোগ নেওয়ার জন্য এনামুল হক গং ও মোক্তার হোসেন বকুল মিয়ার নাম উল্লেখ ছিল। কিন্তু পরে কেজিডিসিএল-এর পক্ষ থেকে ভিন্ন দুই ব্যক্তি— একরামুল হক ও নাজমুল হোসেন-এর নামে এফআইআর রুজুর প্রস্তাব তৈরি করা হয়।
দুদকের অভিযোগ, ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রকৃত অভিযুক্তদের বাদ দিয়ে ভুল রেকর্ড তৈরি করা হয় এবং পটিয়া থানায় কোনো এফআইআর রুজু না করেই ভুয়া এফআইআর-এর কপি নথিতে সংযুক্ত করা হয়। ঘটনার সূত্র ধরে নাজমুল হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে দুদকে অভিযোগ করলে অনুসন্ধান শুরু হয়।
অনুসন্ধানকালে পটিয়া উপজেলা ভূমি অফিসের প্রতিবেদনে দেখা যায়, মনসা মৌজার ৩৫৮৭ দাগে মূলত আকতার কামাল চৌধুরীর ওয়ারিশরা ২০০৫-০৬ সালে একটি বেকারি স্থাপন করেন, যা ২০০৯ সালে বন্ধ হয়ে যায়। পরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গাজী মো. বখতিয়ার উদ্দিন (বকুল মেম্বার) জায়গাটি ভাড়ায় নিয়ে ২০১২-১৩ সালে সেখানে অ্যালুমিনিয়াম ফ্যাক্টরি চালু করেন এবং ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তা পরিচালনা করেন। অবৈধভাবে নেওয়া গ্যাসের বিল, জরিমানা ও অন্যান্য খাতে মোট ৩৩ লাখ ৭০ হাজার ১৩ টাকা সমপরিমাণ সরকারি অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।