বাসস
  ০৫ জুন ২০২৩, ১৮:৫১

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় জিডিপি’র ৩.২ শতাংশ বরাদ্দের দাবি   

ঢাকা, ৫ জুন, ২০২৩ (বাসস) : জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাজেটে মোট জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি) অন্তত ৩ দশমিক ২ শতাংশ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজ প্রতিনিধিবৃন্দ। 
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থ পাচার রোধে এবং একটি কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে, দেশের কর ও আর্থিক ব্যবস্থা সংস্কারের সুপারিশ করেন তারা। এই উদ্যোগ নিজস্ব উৎস্য থেকে জলবায়ু অর্থায়নে সহায়ক হতে পারে বলে তাঁরা অভিমত প্রকাশ করেন।   
কোস্ট ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি) এবং সেন্টার ফর সাসটেইনেবল রুরাল লাইভলিহুড (সিএসআরএল), ইক্যুইটি অ্যান্ড জাস্টিস ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশ (ইক্যুইটিবিডি), এ্যান অর্গানাইজেশন ফর সোসিও-ইকোনমিক ডেভেলমেন্ট (এওসেড), ক্লাইমেট এ্যাকশন নেটওয়ার্ক অন সাউথ এশিয়া, বাংলাদেশ (কানসা বিডি) এবং লিডারস যৌথভাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজনের করে। ইক্যুইটিবিডি’র রেজাউল করিম চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন।  
মূল প্রবন্ধ উপস্থ্পানকালে ইক্যুইটিবিডি’র সৈয়দ আমিনুল হক বলেন, সরকার স্বাধীনতার পর থেকেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য বাজেটের একটি বিশেষ অংশ বরাদ্দ করে আসছে। মূলত দুর্যোগের জন্য বরাদ্দকৃত সেই অর্থ এখন জলবায়ু অর্থায়ন হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। এই বরাদ্দ দেশের বর্তমান জলবায়ু পরিবর্তন জনিত বাস্তবতার সঙ্গে, বিশেষ করে বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় দীর্ঘমেয়াদে জলবায়ু সহনশীল করে তোলার লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। 
তিনি আরও বলেন, ডেল্টা প্ল্যান ২১০০, মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা ২০৩০ এবং ন্যাশনাল ডিটারমাইন্ড প্ল্যান ইত্যাদি সরকারি কৌশলগত জলবায়ু পরিকল্পনাহসূহ বাস্তবায়নে প্রতি বছর জিডিপি’র প্রায় ৩.২% (বছরে ১৮৩০০০ কোটি টাকা) অর্থ প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে বিনিয়োগ বা বরাদ্দ সেই চাহিদার তুলনায় অনেক কম। 
তিনি আয়োজকদের পক্ষ থেকে কয়েকটি সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরেন- (১) সরকারকে অবশ্যই কৌশলগত পরিকল্পনা এবং বাস্তব প্রয়োজনানুযায়ী জলবায়ু অর্থায়ন হিসেবে জিডিপি’র কমপক্ষে ৩.২% বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে, (২) জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ভিন্ন ভিন্ন বরাদ্দ না দিয়ে একটি সমন্বিত জাতীয় জলবায়ু বাজেট বরাদ্দ ও তার বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে, (৩) জলবায়ু অর্থায়নের জন্য বৈদেশিক ঋণের উপর নির্ভর না করে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এই অর্থ সংগ্রহে জোর দিতে হবে, (৪) অভ্যন্তরীণ উৎস্য হতে অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্যে অর্থ পাচার রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে এবং (৫) উপকূল সুরক্ষা সম্পর্কিত অবকাঠামো কর্মসূচিকে অগ্রধিকারপ্রাপ্ত বিনিয়োগ খাত হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ক্লাইমেট জার্নালিস্ট ফোরামের কাওসার রহমান, সিএসআরএল’র মোঃ জিয়াউল হক মুক্তা, সিপিআরডি’র মোঃ শামসুদ্দোহা,  এওসেডেষ্ফর শামীম আরেফিন, কোস্ট ফাইন্ডেশনের মোঃ আহসানুল করিম ও ফেরদৌস আরা রুমী।
ইক্যুইটিবিডি’র রেজাউল করিম চৌধুরী একটি সমন্বিত উপকূলীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত অর্থায়নের দাবি জানান। 
তিনি বলেন, সমন্বিত এই পরিকল্পনার আওতায় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, সামাজিক উন্নয়ন, কারিগরি শিক্ষা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির কর্মসূচি বাস্তায়িত হতে পারে। এটি করা সম্ভব হলে উপকূলীয় জনগণের জন্য একটি প্রকৃত সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।