চট্টগ্রাম, ২২ মে, ২০২৫ (বাসস) : কমলা আমদানির ঘোষণা দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আনা হয়েছিল কোটি টাকার বিদেশি সিগারেট। চালানটি খোলার পর বেরিয়ে আসে ১ কোটি ২৫ লাখ শলাকা ল্যামার ও অস্কার ব্র্যান্ডের সিগারেট। ভুয়া ঘোষণা ও ভুয়া নথিপত্রের মাধ্যমে আমদানি করা এসব সিগারেট জব্দ করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) কাস্টমস কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, একদিনের মধ্যে গণনা (ইনভেন্টরি) সম্পন্ন হওয়ার পর তারা এর সঠিক মূল্য নির্ধারণ করতে পারবেন। এরআগে বুধবার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার সদস্যরা চালানটি খোলার পর এ চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে।
কাস্টমসের নথি অনুযায়ী, ঢাকাভিত্তিক আমদানিকারী প্রতিষ্ঠান আহসান করপোরেশন গত ১৫ মে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা একটি চালানে কমলালেবুর কথা ঘোষণা করেছিল। আমদানিকারকের পক্ষে পণ্য খালাসের দায়িত্বে ছিল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট দিবা ট্রেডিং লিমিটেড।
কাস্টমসের এআইআর বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বন্দর থেকে পণ্য খালাসের জন্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের দাখিল করা নথিপত্র ভুয়া বলে সন্দেহ হয়। পরে একটি দল সরেজমিনে পরীক্ষা করে সিগারেটের কন্টেইনারটি খুঁজে পায়।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার কাজী রাইহানুজ জামান বলেন, কন্টেইনারটি কমলা হিসেবে ঘোষণা করে আমদানি করা হয়েছিল। সেখানে আমরা অস্কার ও ল্যামার ব্যান্ডের ১ কোটি ২৫ লাখ শলাকা সিগারেট পেয়েছি। কমলা আমদানিতে করের হার ৯০ শতাংশ। সিগারেটের ক্ষেত্রে এই হার ৩২০ শতাংশ থেকে ৬০০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। এই চালানের মাধ্যমে প্রায় ৩০ কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছিল।
কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম জানান, ভুয়া ঘোষণা ও নথিপত্র ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করা হয়েছে। আমরা ইনভেন্টরি করছি, পুরো প্রক্রিয়া শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশে বৈধভাবে বিদেশি সিগারেট আমদানির ক্ষেত্রে প্যাকেটের গায়ে বাংলায় ধূমপানবিরোধী সতর্কবার্তা থাকা বাধ্যতামূলক। তবে জব্দ করা সিগারেটগুলোতে তা ছিল না।
বিধি অনুযায়ী, যদি সিগারেটের গুণমান সঠিক পাওয়া যায়, তবে চালানটি বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের কাছে বিক্রি করা হবে। অন্যথায়, আইন অনুযায়ী এটি ধ্বংস করা হবে বলে তিনি জানান।