চট্টগ্রাম, ২৬ মে, ২০২৫ (বাসস) : চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা (সিজেকেএস)-এর অভ্যন্তরে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার অভিযোগে তৎপর হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সংস্থাটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও সিজেকেএস-এর সাবেক কোশাধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন মো. জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করেছে দুদক।
এই অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছেন চট্টগ্রাম-২ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুসাব্বির আহমেদ। ইতোমধ্যে তিনি সিজেকেএস কার্যালয় পরিদর্শন করে ১৪টি বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি প্রেরণ করেছেন।
চিঠিতে সিজেকেএস-এর গঠনতন্ত্রের সত্যায়িত কপি, ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ও বিবরণ, ২০১৯-২০ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ও ব্যয় হিসাব চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া, ২০২৪ সালে বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। যেমন : ড্রেসিংরুম, কর্মকর্তাদের কক্ষ, টাইলস সংস্কার, আউটার স্টেডিয়ামের মাটি ভরাট ও গ্রিল স্থাপন, টেনিস কোর্ট ও ডরমেটরি নির্মাণে ব্যয় হওয়া অর্থ, কার্যনির্বাহী কমিটির অনুমোদনের কপি, দরপত্র ও টেন্ডার প্রক্রিয়ার সমস্ত নথি ও রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত কপিও চাওয়া হয়েছে।
জিমনেশিয়াম পরিচালনার জন্য সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাস সুমনের সাথে করা চুক্তি, কোনো বকেয়া আছে কি না, চুক্তি নবায়ন হয়েছে কি না- এসব তথ্য ছাড়াও লিটল লবস্টার রেস্টুরেন্টের সঙ্গে কোনো চুক্তি থাকলে, তার প্রমাণপত্রও চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম সফর ও শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতা আয়োজনের ব্যয়, অনুমোদন ও আর্থিক বিবরণ, স্টেডিয়াম শপিং কমপ্লেক্সের দোকান বরাদ্দ সংক্রান্ত চুক্তি, টাকা আদায়ের হিসাব ও নির্বাহী সদস্যদের দোকান বরাদ্দ সংক্রান্ত আইনি জটিলতার তথ্যও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সিজেকেএস-এর প্রশিক্ষণ মাঠ গেল পাঁচ বছরে কারা ভাড়া নিয়েছে, কত আয় হয়েছে এবং এসব ক্ষেত্রে কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল কি না- তাও জানতে চাওয়া হয়েছে দুদক-এর পক্ষ থেকে।
চিঠি প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে সিজেকেএস এডহক কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা ক্রীড়া অফিসার আবদুল বারী বলেন, ‘আমাকে যেসব বিষয় চিহ্নিত করে জানানো হয়েছে, সেসব যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করেছি। সভাপতি তথা জেলা প্রশাসকের নির্দেশনার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
দুদক-এর অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মুসাব্বির আহমেদ বলেন, ‘অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা জেলা ক্রীড়া সংস্থায় গিয়েছিলাম এবং কিছু তথ্য চেয়েছি। বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন, তাই বিস্তারিত বলা সমীচীন হবে না।’
তবে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এই কর্মকর্তা স্টেডিয়াম শপিং কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে দেখেছেন। এই তদন্ত চট্টগ্রাম ক্রীড়া অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।