/শাহজাহান নবীন/
ঝিনাইদহ, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): বিদেশি ফল আনার চাষ করে সফলতা পেয়েছেন ঝিনাইদহের মহেশপুরের যোগীহুদা গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা আবদুল্লাহ (২৪)।
অনার্স (দাওরায়ে হাদিস) পড়ুয়া মেধাবী আবদুল্লাহ চাকরির পেছনে না ছুটে হয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা।
প্রযুক্তি ও নিজের মেধার সংযোগে গড়ে তুলেছেন আনার বাগান। গাছ লাগানোর দুই বছর পরে এসেছে ফল। গাছে গাছে ঝুলছে লাল টকটকে আনার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহেশপুরের ফতেপুর ইউনিয়নের যোগীহুদা গ্রামে এক বিঘা জমিতে আবদুল্লাহ গড়ে তুলেছেন আনার বাগান। ভারতীয় ভাগওয়া জাতের আনার চাষ করেছেন তিনি। পরিচর্যাও করেন নিজে। বাগানে পোকামাকড়ের আক্রমণ রোধে কীটনাশকের পাশাপাশি আলো ও পানির ফাঁদ ব্যবহার করেছেন তিনি। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে এই আনারের চাহিদা ব্যাপক। প্রতি কেজি আনার বিক্রি করছেন ৩০০ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকায়।
আবদুল্লাহ জানান, বর্তমানে তার বাগানে রয়েছে ৮৭টি গাছ। প্রতিটি গাছে ধরেছে লাল টুকটুকে আনার। একেকটি গাছে গড়ে ৬০ থেকে ৬৫টি ফল এসেছে। ডালে ডালে এসেছে নতুন কুঁড়ি।
তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আবদুল্লাহ জানান, ইউটিউবে আনার চাষের ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে চুয়াডাঙ্গা থেকে তিনি চারা সংগ্রহ করেন। পরে বাড়ির পাশে নিজের এক বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক আনার চাষ শুরু করেন । ২০২২ সালের শেষ দিকে ৯১টি চারা রোপণের মধ্যদিয়ে তিনি বাগান গড়ে তোলেন। বর্তমানে বাগানের প্রতিটি গাছে ধরেছে ফল। বাজারে বিক্রি করেও ভালো আয় করছেন আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, চাকরি না করে কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন থেকেই আনার বাগান করেছি। বছরের পর বছর চাকরির পেছনে না ছুটে নিজের মতো করে কিছু করা উচিত। সেই ভাবনা থেকেই আনার চাষ শুরু করেছি।
তিনি আরও বলেন, আনার দামি ফল। প্রতি বছর বিদেশ থেকে কোটি কোটি টাকার আনার আমদানি করা হয়। দেশেই যদি আমরা আনার চাষ বৃদ্ধি করতে পারি, তাহলে এই আমদানি নির্ভরতা কমবে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা অনেক বেশি আয় হবে।
আবদুল্লাহ’র বাগান দেখতে আসা যশোরের চৌগাছার রফিকুল ইসলাম বাসসকে বলেন, আবদুল্লাহ’র আনার বাগানের গল্প শুনেছি। আজ নিজ চোখে দেখলাম। এত সুন্দর আনার বাগান আগে কখনো দেখা হয়নি। দারুণ ফলন হয়েছে। ফলের স্বাদ ও মান অনেক ভালো।
মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, একজন উদ্যমী তরুণ আবদুল্লাহ। তিনি আমাদের কাছ থেকে ভার্মি কম্পোস্ট তৈরির বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
তার আনার বাগান আমি পরিদর্শন করেছি। আবদুল্লাহ’র বাগানের আনারের স্বাদ, গন্ধ ও মান খুবই ভালো। তার এই উদ্যোগ দেখে অন্য তরুণরাও আনার চাষে উৎসাহী হবে।