পটুয়াখালী, ৭ অক্টোবর ২০২৫ (বাসস) : জেলার কুয়াকাটায় রাখাইন সম্প্রদায়সহ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা প্রতি বছরের মত এবারও প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব উদযাপন করেছেন।
এ উপলক্ষে গতকাল সোমবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টায় কুয়াকাটার রাখাইন মহিলা মার্কেট মাঠে এক ফানুস উৎসব পালন করা হয়। এর আগে সকাল ৭টায় পঞ্চশীল ও অষ্টশীল প্রার্থনা এবং বুদ্ধপূজার মধ্যে দিয়ে দিনটির সূচনা করেন তারা। পরে বুদ্ধের স্মরণে বিভিন্ন ফল ও হরেক রকমের পিঠাপুলি বৌদ্ধ ভিক্ষুকে প্রদান করেন বৌদ্ধ ধর্মের বয়স্ক নারী পুরুষরা।
উৎসবটি ঘিরে রাখাইন পাড়া আলোর রঙে সেজে ওঠে। ঘরে ঘরে তৈরি করা হয় তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির নানান পিঠাপুলি আর হরেক রকমের খাবার। এ উৎসব পালন করার জন্য দেশের নানা প্রান্ত থেকে বৌদ্ধ ধর্মের লোকেরা জমায়েত হন বৌদ্ধ বিহারে। পাড়ায় পাড়ায় নানা বয়সের রাখাইন নারী পুরুষরা নতুন পোশাক পরিধান করে বৌদ্ধ বিহারে অংশ নেন।
কুয়াকাটার শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহারের উপাধক্ষ্য ইন্দ্র বংশ ভান্তে বলেন, প্রবারণা উৎসবকে ঘিরে আমরা ২৮ বুদ্ধের আসন পরিষ্কার ও নতুন সাজে রূপ দিয়েছি। গতকাল সন্ধ্যায় ৩১ কঠিন চীবর দান ও শতাধিক ফানুস উড়িয়ে ধর্মীয় আচারের মধ্যে দিয়ে এবারের প্রবারণা উৎসব শেষ হয়।
মিশ্রীপাড়া সীমা বৌদ্ধ বিহারের সভাপতি মংলাচি তালুকদার বলেন, এটা আমাদের প্রধান উৎসবের মধ্যে অন্যতম উৎসব। এ উৎসবকে ঘিরে নানা বয়সি মানুষের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। জগতের সবার মঙ্গল কামনা করেছি। আলোর ঝলকানিতে ফানুস উড়িয়ে আনন্দ উদযাপন করেছি।
কুয়াকাটার মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ বিহারের উত্তম ভিক্ষু বলেন, আড়াই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধ বুদ্ধত্ব লাভের পর আষাঢ়ি পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী তিথি পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাস পালন করে প্রবারণা উৎসব উদযাপন করেন। সেই থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা প্রবারণা পূর্ণিমা পালন করে আসছে। এই উৎসবে সকল প্রাণীর মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনা করা হয়েছে।
পটুয়াখালীর মহিপুর থানার কালাচানপাড়া, মিশ্রীপাড়া, কেরানীপাড়া, আমখোলা, নয়াপাড়া, বৌলতলীপাড়াসহ বিভিন্ন পাড়ায় বসবাসরত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা এই উৎসব পালন করেন।