সব বেসরকারি বিদ্যালয় নিবন্ধনের আওতায় আনার কাজ চলছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

বাসস
প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:৪৪
চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সভাকক্ষে ‘মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে করণীয়’ বিষয়ে মতবিনিময় সভায় গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। ছবি: বাসস

চট্টগ্রাম, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : সব বেসরকারি বিদ্যালয় নিবন্ধনের আওতায় আনার কাজ চলছে জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, সব বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো নিবন্ধনের আওতায় আনতে আমরা সেগুলোকে নিবন্ধন করাচ্ছি। সেক্ষেত্রে নিবন্ধন সহজ করার জন্য তাদের পক্ষ থেকে কিছু দাবি-দাওয়া ছিল।

চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সভাকক্ষে ‘মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে করণীয়’ বিষয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপদেষ্টা আজ এসব কথা বলেন। 

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ সভার আয়োজন করে।

উপদেষ্টা বলেন, ‘সব বেসরকারি বিদ্যালয়কে নিবন্ধনের আওতায় আনার পাশাপাশি নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করার দাবিও পূরণ করা হয়েছে। তবে নিবন্ধন না থাকলে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ বন্ধের মতো শর্ত আরোপ করা হবে। সরকারি -বেসরকারি সবগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আমরা পাঠ্যপুস্তক দিয়ে থাকি। তাহলে আমরা শর্ত আরোপ করতে পারি রেজিস্ট্রেশন না থাকলে আপনি পাঠ্যপুস্তক পাবেন না।’

ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, ‘বিভিন্ন জাতির বিভিন্ন ধরনের সম্পদ থাকে, কিন্তু আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হচ্ছে জনসম্পদ। এই জনসম্পদকে যদি কাজে লাগাতে না পারি, তাহলে আমাদের কোনো ভবিষৎ নেই। প্রাথমিকের কাজ হলো একটা মানুষকে সাক্ষর করে তোলা। আমাদের কথ্য ভাষা, লেখ্য ভাষা, গাণিতিক ভাষায় সাক্ষর করে তোলা।’

তিনি বলেন, ‘অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে, শিক্ষকদের মানোন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু সাক্ষরতার ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়নি। যেটা মূল লক্ষ্য সেটা অর্জিত হয়নি। আমাদের এখনও কাগজে-পত্রে মাত্র ৭৮ শতাংশ সাক্ষর। এই গলদ রয়ে গেছে। যারা প্রকৃত পক্ষে সাক্ষর হয়ে ওঠে না, তারা হাইস্কুলে পিছিয়ে থাকে। এবং তারা উচ্চশিক্ষায় কখনও ভালো করতে পারে না। আমাদের প্রকৃত সাক্ষর ৫০ শতাংশেরও নিচে। নিরক্ষর জাতি দিয়ে আমরা উন্নতি করতে পারবো না।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা সভায় বলেন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে ব্যক্তি উদ্যোগে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও বিষয়টি তদারকির বাইরে থেকে যাচ্ছে। ২০১৬ সালে এসব বিষয় এবং শিক্ষার মান, প্রতিষ্ঠান তদারকি ও সুপারিশের জন্য বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করেছে সরকার। এই তিন পর্যায়ে যেই টাস্কফোর্স কমিটি রয়েছে সেটাকে একটিভ করার মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করতে হবে।

সভায় কর্মকর্তারা তাদের বক্তব্যে বিভিন্ন সংকট ও সমস্যার কথা তুলে ধরে বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর থেকে নুরানি মাদরাসা ও কিন্ডারগার্ডেন স্কুলে শিক্ষার্থী বেশি। ভালো শিক্ষক থাকার পরও শিক্ষার্থী কম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এর কারণ স্থানীয় পর্যায়ে অভিভাবকদের আস্থা অর্জন করা সম্ভব হয়নি এখনো। তাই তারা শিক্ষার্থীদের সরকারি বিদ্যালয়ে পাঠান না।

সভায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক মো. আতাউর রহমান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রামের সার্বিক তথ্য উপস্থাপন করেন।

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা ও অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আব্দুল হাকিম। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলার সরকারি কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা পরে চট্টগ্রামে প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) পরিদর্শন ও প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
৩ জুনের মধ্যে গামেন্টসকর্মীদের বোনাস দিতে হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
হত্যাচেষ্টা মামলায় কারাগারে নুসরাত ফারিয়া
মাগুরায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ২
ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ক নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক
গাছে গাছে সবুজ আঙুর শরিফুল-মিম দম্পতির সুদিনের বার্তা
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে রিটের আদেশ ২৬ মে
ভেড়া পালন করে স্বাবলম্বী হওয়ায় শরিফা এখন গ্রামের অন্য নারীদের আদর্শ
কাল বিশ্ব পরিমাপ দিবস
গাজায় জুড়ে ইসরাইলি হামলায় ২২ জন নিহত 
তুরস্ক-কুর্দি সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে 'দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন' দরকার : ওজালান
১০