শিরোনাম
ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে জনপ্রশাসনে নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গত বুধবার হস্তান্তর করা হয়।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করেন। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে সংস্কার প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। মোট ১৭ অধ্যায়ের প্রস্তাবের ১৬ অধ্যায়ে ‘জনপ্রশাসনে নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতে সংস্কার প্রস্তাব’ করা হয়েছে।
‘জনপ্রশাসনে নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতে সংস্কার প্রস্তাব’ শিরোনামে সকল মন্ত্রণালয়ে নারী মর্যাদা রক্ষা অফিসার নিয়োগ, অবদলীযোগ্য পদে নারীদের নিয়োগ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের শূন্যপদে নারীদের নিয়োগে অগ্রাধিকার প্রদান, কারাগারে মহিলা ওয়ার্ডেন নিয়োগ, থানায় মহিলা এএসআই নিয়োগ, জেলা মহিলা অধিদপ্তরে জনবল বৃদ্ধি করা, উপজেলা পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের থাকার জন্য বাসস্থান ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ করে সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে সকল মন্ত্রণালয়ে নারী মর্যাদা রক্ষা অফিসার নিয়োগ করার মাধ্যমে প্রতি মন্ত্রণালয়/বিভাগে একজন করে মহিলা অফিসারকে সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে তাকে তার নিজ মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং অধীনস্ত অধিদপ্তর ও মাঠ পর্যায়ের অফিসসমূহে কর্মজীবি নারীবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির কাজ করার নির্দেশনা দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অফিসার লিঙ্গ বৈষম্যমূলক কোনো অভিযোগ পেলে তা মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মহিলা অধিদপ্তরকে লিখিতভাবে অবহিত করবেন।
সুপারিশে বলা হয়েছে, অবদলিযোগ্য পদে নারীদের নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে সকল অফিসে অবদলিযোগ্য পদগুলোতে মহিলাদের নিয়োগে অগ্রাধিকার প্রদানের জন্য সুপারিশ করা হলো। এর ফলে মহিলারা নিজ সন্তান ও পরিবারের প্রতি যত্নের বিষয়ে স্বস্তির সাথে চাকরি এবং পরিবার ব্যবস্থাপনা করতে পারবেন বলে আশা করা যায়। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের শূন্যপদে নারীদের নিয়োগে অগ্রাধিকার প্রদান করার বিষয়ে চিকিৎসা ও শিক্ষা খাতে নারীদের বিশেষ গুণাবলীকে মূল্যায়ন করে সাধারণ বিধান শিথিল করে হলেও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নারীদের নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
এছাড়া, কারাগারে মহিলা ওয়াডের্ন নিয়োগ করার বিষয়ে দেশের কারাগারগুলোতে মহিলা বন্দীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিটি কারাগারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক মহিলা ওয়ার্ডেন নিয়োগ করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে দেশের প্রতিটি থানায় একজন করে মহিলা এএসআই নিয়োগ করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এর ফলে মহিলারা স্বচ্ছন্দে তাদের অভিযোগ দায়ের ও প্রতিকারে থানায় যেতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করবেন।
প্রতিবেদনে জেলা মহিলা অধিদপ্তরে জনবল বৃদ্ধি ও জেলা পর্যায়ে যানবাহন সরবরাহ করা, উপজেলা পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিশেষ করে মহিলাদের থাকার জন্য বাসস্থান সংকটের বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। মহাসড়কের পেট্রোল-পাম্পগুলোতে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট থাকার বিষয়ে বলা হয়েছে, বর্তমানে যদিও মহাসড়কের পেট্রোল-পাম্পগুলোতে টয়লেট রয়েছে; কিন্তু সেগুলো স্বাস্থ্যসম্মত নয় বা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে না। অনেক জায়গাতেই মহিলাদের জন্য আলাদা টয়লেট নেই। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।