কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট শুরু: সিএএবি

বাসস
প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ২০:৪৭
কক্সবাজার বিমানবন্দর। ছবি: উইকিপিডিয়া

ঢাকা, ২১ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএবি) আন্তর্জাতিক ফ্লাইট কার্যক্রম শুরু করার জন্য ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস সুবিধাসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পর, জুলাই মাস থেকেই কক্সবাজার বিমানবন্দর বাংলাদেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক প্রবেশদ্বার হয়ে উঠবে।

সোমবার সিএএবি’র চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস-মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। সভায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইমিগ্রেশন পুলিশ, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও এয়ারলাইন অপারেটর কমিটি’র প্রতিনিধিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডাররা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে সিএএবি’র একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাসস’কে বলেন, ‘আমরা জুলাই মাসে কক্সবাজার থেকে স্বল্প পাল্লার বিমানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকব।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক রুট চালু করার জন্য বিমানকে ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে রুপান্তর করা ২০২১ সালে শুরু হওয়া একটি ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ।

এই প্রকল্পের মধ্যে বিদ্যমান রানওয়ে সম্প্রসারণ ও একটি নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে- যা সার্বক্ষণিক বিমান চলাচলে সক্ষম হবে।

সিএএবি কর্মকর্তারা জানান, জুলাইয়ের মধ্যে রানওয়ে সম্প্রসারণ (বঙ্গোপসাগরে নির্মিত অতিরিক্ত ১,৭০০ ফুট) সম্পন্ন হবে। এর ফলে মোট রানওয়ের দৈর্ঘ্য ১০,৭০০ ফুট (৩.২৬ কি.মি.) হবে। সম্পন্ন হলে এটি হবে বাংলাদেশের দীর্ঘতম রানওয়ে।

প্রাথমিকভাবে, বর্তমান টার্মিনাল ভবন থেকে অ্যাডহক ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।

নতুন অত্যাধুনিক আন্তর্জাতিক টার্মিনালটি পরবর্তীতে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং এটি সকল ধরনের চওড়া বিমান পরিচালনা করতে সক্ষম হবে।

সিএএবি চেয়ারম্যান মঞ্জুর কবির বলেন, ‘অপারেশনাল প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে আমরা রানওয়ে, আলো ব্যবস্থা, সুরক্ষা বাঁধ ও টার্মিনাল অবকাঠামো ক্রমাগত পরিদর্শন করছি।’

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত শুক্রবার নির্মাণাধীন বিমানবন্দর প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন।

সরকারের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য হল-কক্সবাজারকে ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের মতো একটি শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা।

বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড (বিটিবি)’র কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন যে, উন্নত বিমান যোগাযোগ উপকূলীয় শহরটিকে আঞ্চলিক পর্যটনের জন্য একটি কৌশলগত কেন্দ্র হিসেবে স্থান দেবে।

একটি আঞ্চলিক উন্নয়নের অংশ হিসেবে, চীনের ইউনান প্রদেশ কুনমিং ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। স্থলবেষ্টিত প্রদেশটি কক্সবাজারকে এর পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে দেখছে।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (টিওএবি)’র সভাপতি রাফিউজ্জামান এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘কক্সবাজারে নেপাল, ভুটান, উজবেকিস্তান ও চীনের ইউনান প্রদেশের মতো স্থলবেষ্টিত দেশগুলোর পর্যটকদের আকর্ষণ করার অপার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, এটি তাদের সবচেয়ে কাছের সমুদ্র উপকূল।’

তিনি আরো বলেন, কক্সবাজারের সঙ্গে কাঠমান্ডু, থিম্পু ও কুনমিংয়ের সরাসরি সপ্তাহান্তের বিমান চলাচল পর্যটকদের আগমনকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করতে পারে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, তবে, আন্তর্জাতিক পর্যটকদের সেবা প্রদানের জন্য শহরে এখনও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও বিনোদনের অভাব রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘কক্সবাজারকে একটি স্বতন্ত্র বৈশ্বিক গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে, সরকারকে বিদেশি পর্যটন-বান্ধব অবকাঠামোতে বিনিয়োগ এবং বিনোদনমূলক ও নাইটলাইফ প্রস্তাবগুলো সম্প্রসারণ করতে হবে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বিবাহের মাধ্যমে মানুষ পাপাচার থেকে বাঁচতে পারে : ধর্ম উপদেষ্টা
দাউদকান্দি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীর জমি ক্রোক, ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
ডিসেম্বর ধরেই নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বিএনপি : নজরুল ইসলাম খান
সুপ্রিম কোর্টে প্রাঙ্গণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সমাবেশ
মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সার্ভিস, ট্রেনিং এবং রিসার্চকে গুরুত্ব দিতে হবে : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা
নারী শ্রমিকের নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ে কমিশনের অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ
নারীর শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ে কমিশনের অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ
ময়মনসিংহে মাসব্যাপী এ্যাথলেটিক্স প্রশিক্ষণ শুরু
ময়মনসিংহে অনুর্ধ্ব-১৫ ফুটবল প্রশিক্ষণ শুরু
সোনার দামে নতুন রেকর্ড : প্রতি ট্রয় আউন্স ৩,৪০০ ডলার ছাড়িয়ে 
১০