স্মল লোনস, বিগ ড্রিমস : মুহাম্মদ ইউনূস, গ্রামীণ ব্যাংক এবং দি গ্লোবাল মাইক্রোফাইনান্স রেভল্যুশন শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন 

বাসস
প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ২০:৫১
‘স্মল লোনস, বিগ ড্রিমস : মুহাম্মদ ইউনূস, গ্রামীণ ব্যাংক এবং দি গ্লোবাল মাইক্রোফাইনান্স রেভল্যুশন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন। ছবি: ইউপিএল

ঢাকা, ৩০ জুন, ২০২৫ (বাসস): “স্মল লোনস, বিগ ড্রিমস : মুহাম্মদ ইউনূস, গ্রামীণ ব্যাংক এবং দি গ্লোবাল মাইক্রোফাইনান্স রেভল্যুশন” শীর্ষক বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান আজ রাজধানীর গ্রিন রোড এলাকায় অবস্থিত ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল)-এর প্রধান কার্যালয় আরএইচ হোম সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

পিকেএসএফ-এর প্রাক্তন বোর্ড সদস্য এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন পারভীন মাহমুদ, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের, গ্রামীণ ব্যাংক, বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সরদার আখতার হামিদ এই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

বইটির লেখক অ্যালেক্স কাউন্টস এই বইয়ের বাংলা সংস্করণ উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

ইনোভেশন কনসাল্টিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রুবাইয়াত সারওয়ার অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। ইউপিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহরুখ মহিউদ্দিন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

বইটির এই বাংলা সংস্করণটি ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং গ্রামীণ ব্যাংকের নেতৃত্বে বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণের উৎপত্তি ও বিকাশের একটি অনন্য বিবরণ। বইটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন সৈয়দ ফয়েজ আহমেদ।

বইটির লেখক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রামীণ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা অ্যালেক্স কাউন্টস ক্ষুদ্রঋণের ইতিহাস অন্বেষণ করেছেন এবং অর্থনৈতিক মন্দা ও পরিবেশগত বিপর্যয়ের পরে গ্রামীণ ব্যাংক কীভাবে তার পদ্ধতি পরিবর্তন করেছে তা নিয়ে আলোচনা করেছেন।

গ্রামীণ মডেলের মূল্য ও তাৎপর্য সম্পর্কে সমালোচকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি, তিনি বইটিতে ড. ইউনূসের অসাধারণ দৃষ্টিভঙ্গির দীর্ঘমেয়াদি উত্তরাধিকারও বর্ণনা করেছেন।

এই বইটিতে লেখক বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রাম ও শিকাগোর শহরতলির বেশ কয়েকজন নারীর জীবন থেকে প্রাণবন্ত সাফল্য উপস্থাপন করেছেন।

ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণের সুযোগ পেয়ে তারা সকলেই নিজস্ব উদ্যোগে ছোট ব্যবসা স্থাপন করে তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

শিকাগোর এই প্রকল্পটি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গ্রামীণ মডেলের একটি পাইলট প্রকল্প। তিনি গ্রামীণ ব্যবস্থা কীভাবে আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ে তাও তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে অ্যালেক্স কাউন্টস বলেন যে, অধ্যাপক ইউনূস তাকে এই বইটি লেখার জন্য যথেষ্ট সময় দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ড. ইউনূস এমন একটি মডেল তৈরি করেছিলেন যেখানে ঋণগ্রহীতাদের অর্ধেকই ছিলেন নারী।

বাংলাদেশে কাজ করার সময় তাঁর ব্যাপক অভিজ্ঞতা থেকে কাউন্টস বলেন, বাংলাদেশের নারীরা অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য, তারা ভালো ঋণগ্রহীতা এবং তারা অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি নেন না।

কাউন্টস বলেন, নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূসের কাজের বিশালতা বোঝার জন্য গ্রামীণ ব্যাংককে বোঝা প্রয়োজন।

পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের বলেন, নারী ঋণগ্রহীতাদের ঋণ প্রদান করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায় এবং নারী ঋণগ্রহীতাদের মধ্যেও উন্নত আর্থিক ব্যবস্থাপনা দেখা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক, পিকেএসএফ এবং অন্যান্য এমএফআই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশে একটি টেকসই প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।

পিকেএসএফের প্রাক্তন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক পারভীন মাহমুদ বলেন, গ্রামীণ ব্যাংককে অধ্যাপক ইউনূসের সাথে নোবেল পুরস্কার দেওয়ায় দেশীয় মডেল হিসেবে সকলেই গর্বিত।

তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিগত বছরগুলোতে ক্ষুদ্রঋণের পরিমাণ এবং পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে।

গ্রামীণ ব্যাংক, বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সরদার আখতার হামিদ বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক ব্যাংকবিহীনদের জন্য একটি ব্যাংক এবং এটি ব্যাংকবিহীনদের জন্য একটি ব্যাংক হিসেবেই থাকবে।

তিনি বলেন, সারা দেশে গ্রামে পরিচালিত গ্রামীণ ব্যাংক নারীর ক্ষমতায়ন এবং উন্নত অর্থ ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করেছে।

অ্যালেক্স এই বইয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং গ্রামীণ ব্যাংকের নেতৃত্বে বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণের উদ্ভাবন এবং প্রবৃদ্ধির একটি ক্লাসিক বিবরণ উপস্থাপন করেছেন। এতে তুলে ধরা হয়েছে যে, কীভাবে একজন প্রান্তিক মহিলা ক্ষুদ্রঋণের সাহায্যে একটি ছোট ব্যবসা শুরু করে তার জীবনকে বদলে দিয়েছেন।

অ্যালেক্স গ্রামীণ মডেল সম্পর্কে সমালোচকদের উদ্বেগের বিষয়টি এবং ইউনূসের অসাধারণ দৃষ্টিভঙ্গির স্থায়ী প্রভাব তুলে ধরেছেন।

বইটিতে লেখক আরও দেখিয়েছেন যে, কীভাবে ক্ষুদ্রঋণ সুবিধা বঞ্চিতদের বিশ্ব অর্থনীতিতে সৃজনশীলভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিয়ে অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সহায়তায়, অ্যালেক্স কাউন্টস ১৯৯৭ সালে গ্রামীণ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়াও, তিনি ২০১৬-১৭ সালে আমেরিকান ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের সভাপতি এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি জন এফ. কেনেডি মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
অনিয়ম, হয়রানি, দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের তিন এনফোর্সমেন্ট অভিযান
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের জন্য আগামীকাল দেশের সকল মসজিদে বিশেষ দোয়া 
সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার
রাসিকের ৮০৬ কোটি টাকার বাজেট 
ইলিশের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো যাবে না: মৎস্য উপদেষ্টা
ইসরাইলি যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশ সরবরাহে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা নিয়ে রায় দেবেন বিচারকরা
‘ইরানকে কিছুই দিচ্ছি না, তাদের সঙ্গে কথাও বলছি না’ : ট্রাম্প
১২ দিনের যুদ্ধে নিহত নয়শ’র বেশি : ইরানের বিচার বিভাগ
জাতিসংঘ পারমাণবিক পর্যবেক্ষক প্রধানকে হুমকি : ফ্রান্স, জার্মানি ও ব্রিটেনের নিন্দা
ভারতের রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত ১২ 
১০