শিরোনাম
ঢাকা, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। দিন-তারিখ বেঁধে দিয়ে সংস্কার হয় না।
আজ সোমবার দুপুরে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আলোচনা সভাটির আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।
সংস্কারকে একটি চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে বিএনপি’র এই সিনিয়র নেতা বলেন, আমরা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি। সেগুলো বিবেচনা করে দ্রুত সংস্কারের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হোক- যাতে অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কার করতে পারবে না, সে অসম্পূর্ণ সংস্কার পরবর্তী সরকার এসে করতে পারে।
তিনি বলেন, দিন-তারিখ ঠিক করে তো সংস্কার করা যায় না। অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ সেটি নয়। সংস্কারের স্থায়ী সমাধানের জন্য অতিদ্রুত নির্বাচনের আয়োজন করে জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ অনির্দিষ্টকালের জন্য থাকে না। তাদের সসম্মানে বিদায় নিতে হলে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে বিদায় নিতে হয়। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের উচিৎ বাস্তবতা উপলব্ধি করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জীবনের স্মরণীয় দিক প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, জিয়াউর রহমানের চারটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো- সৈনিক, প্রেসিডেন্ট, রাজনৈতিক ও ব্যক্তিজীবন। সৈনিক হিসেবে তিনি দেশের জন্য স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানই একমাত্র সামরিক কর্মকর্তা যিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। পরবর্তীতে তাকে বীর উত্তম খেতাব দেওয়া হয়। একজন সৈনিকের জন্য এর চেয়ে বেশি কিছু লাগে না।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, জিয়াউর রহমান প্রথম গণভোটে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি প্রায় চার বছরের শাসনামলে দেশের আমূল পরিবর্তন করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের মানুষের জাতিসত্তার পরিচয় দিয়েছিলেন। যা আর কেউ করতে পারেনি। বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেন। তিনি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ১৯ দফা কর্মসূচি দিয়েছেন।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ বলেন, জিয়াউর রহমানকে নিয়ে বলার শেষ নেই। তিনি একজন ক্ষণজন্মা পুরুষ। তার হাতেই আধুনিক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা শুরু হয়। দেশের যা কিছু ভালো, তার সঙ্গে শহীদ জিয়ার নাম জড়িত।
তিনি আরও বলেন, গত কয়েক বছর দেশে গণতন্ত্র হত্যা করে বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আগামীতেও আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ নিয়ে এগোতে পারলে বাংলাদেশ হবে স্বৈরাচারমুক্ত।
ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মো. মেহেদী হাসান ও যুগ্ম মহাসচিব ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীমের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- ড্যাবের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালাম, ড্যাবের উপদেষ্টা ডা. শহীদুর রহমান, সহ-সভাপতি ডা. রেজোয়ানুর রহমান সোহেল, ডা. গোলাম সারওয়ার, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা. ফারুক কাশেম, দপ্তর সম্পাদক ডা. মো. ফখরুজ্জামান ফখরুল, ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল ডা. কামরুল হাসান ও ভাইস প্রিন্সিপাল ডা. ফারুক আহমেদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য খালেদা ইয়াসমিন, ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেতা ডা. মো. জাহেদুল কবির জাহিদ, ডা. জাহাঙ্গীর আলম, ডা. খলিলুর রহমান, ডা. সৈয়দ ইমতিয়াজ উদ্দিন সাজিদ, ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন, ডা. আরিফুজ্জামান পলাশ, ডা. বাসেদুর রহমান সোহেল, ডা. গালিব হাসান, ডা. জাওয়াদ হোসেন, ডা. এএসএম রাকিবুল ইসলাম আকাশ, ডা. সাইফুল আলম বাদশা, ডা. মাহবুব শেখসহ শতাধিক চিকিৎসক ও পেশাজীবী।
ড্যাবের মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালাম বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর পর ঢাকা মেডিকেল কলেজের মিলনায়তনে ড্যাব অনুষ্ঠান করতে পারছি। এটা হয়েছে ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের মাধ্যমে।
তিনি আরো বলেন, শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ ও তার জীবনকর্ম নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসরদের অবিলম্বে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে সরাতে হবে। সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। কোনো অনুপ্রবেশকারীর জায়গা ড্যাবে হবে না।
ডা. মো. মেহেদী হাসান বলেন, গত ১৭ বছরে ড্যাবের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে ছিল। সকলকে সঙ্গে নিয়ে আমরা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন ঘটাতে পেরেছি।
তিনি বলেন, দেশ ও জাতির স্বার্থে এবং চিকিৎসকদের যে কোনো দাবি ও অধিকার আদায়ের প্রয়োজনে ড্যাব আগামীতেও রাজপথে থাকবে।
ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম বলেন, এখনো স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ সরকারের দোসররা রয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে দোসররা আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।
তিনি অবিলম্বে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ছাত্ররাজনীতি চালু করার অনুরোধ জানান।