বাংলাদেশকে স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে রূপান্তর করাই সরকারের দায়িত্ব: ড. মঈন খান

বাসস
প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:৪৫
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ঢাকাস্থ মীরসরাই জাতীয়তাবাদী ফোরামের এক অনুষ্ঠানে কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। ছবি: বাসস

ঢাকা, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে রূপান্তর করাই এই অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব। আমি আনন্দিত সরকার এই চ্যালেঞ্জটি গ্রহণ করেছে।’

তিনি বলেন, এই সরকার (অন্তর্বর্তী) কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে সন্তুষ্ট করার জন্য আসেনি। তারা একটি বিশাল দায়িত্ব নিয়ে এসেছে। সেই দায়িত্ব হলো বাংলাদেশকে স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে রূপান্তর করা। আমি আনন্দিত সরকার এই চ্যালেঞ্জটি গ্রহণ করেছেন। তবে কেবল গ্রহণ নয়, দেশের ১৮ কোটি মানুষের কল্যানে এ চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ঢাকাস্থ মীরসরাই জাতীয়তাবাদী ফোরাম আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান, গণপ্রত্যাশা এবং রাষ্ট্র সংস্কার’ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ড. মঈন খান এসব কথা বলেন।

বিএনপির সিনিয়র নেতা বলেন, ‘এই অন্তর্বর্তী সরকার কোনো পক্ষপাতিত্ব করতে পারবে না। যে মুহূর্তে তারা পক্ষপাতিত্বে চলে যাবেন, তখনই তাদের সব কার্যপদ্ধতি ব্যর্থ হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা শুনেছি, ছাত্ররা নাকি এই সরকারকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়েছে, আমরা জানি না সারাদেশের মানুষ কি তাদের দায়িত্ব দেয়নি? ১৮ কোটি মানুষ কি দায়িত্ব দেয়নি? তবে তারা কি একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করে?’

মঈন খান প্রশ্ন রেখে বলেন, স্বৈরাচার হটানোর আন্দোলনে যারা রাজপথে ছিল, যারা নিজেদের সাধারণ ছাত্র বলে পরিচয় দিয়েছিল, তাদের মধ্যে কি কেউ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না? যারা সত্যিকারের ছাত্র রাজপথে ছিল, তারা কি কেউ বিএনপির সদস্য ছিল না? অবশ্যই ছিল।

তিনি বলেন, সত্যিটা হলো, সেদিনের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক ছাত্র নিজেকে বিএনপি বলে নিজেদের পরিচয় না দিয়ে সাধারণ ছাত্র বলে পরিচয় দিয়েছিল। কারণ, তা না হলে আন্দোলন ভিন্ন দিকে প্রভাবিত হতো। আজকে এই সত্যগুলো বুঝতে না পারলে, আমরা যে সংকটের মুখে রয়েছি, সেখান থেকে বের হওয়া মুশকিল হবে।  

জুলাই আন্দোলনের সময়ের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে এই সাবেক মন্ত্রী বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ হটানোর সেই আন্দোলনে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ অংশ নিয়েছিল। আমরা আবু সাঈদকে দেখেছি, তোমরা গুলি করো কিন্তু আমি প্রত্যয় থেকে সরবো না। যে ছেলেটি আন্দোলনকারীদের পানি খাইয়েছে, তার কথা ভুলে গেলে চলবে না। সবকিছু ভুলে গেলে কিন্তু চলবে না।’

সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংস্কার এমন একটি জিনিস, যেটা একবার করে ফেললাম আর সবকিছু সুন্দর হয়ে গেলো, ব্যাপারটা সেরকম নয়। কারণ সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমি আজকে যেটি সংস্কার করলাম, সেটি আগামীকাল আবার নতুন কিছু সংস্কারের প্রয়োজন হতে পারে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাঁধে অনেক কাজ উল্লেখ করে মঈন খান বলেন, এই সরকারের ওপর আমাদের অনেক আস্থা। পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের সব ষড়যন্ত্র শক্ত হাতে মোকাবেলা করতে হবে। দ্রুততম সময়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে দেশে গণতন্ত্রের অধ্যায় শুরু করতে হবে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম ও মুক্তচিন্তা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম হায়দার প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ঐকমত্যের ভিত্তিতে সনদে স্বাক্ষর করে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা দরকার: আমির খসরু
স্থানীয় নির্বাচন দ্রুত প্রয়োজন: তোফায়েল আহমেদ
রাবি প্রেসক্লাবের নেতৃত্বে মাহিন ও মিশন
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাপানের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে: রাষ্ট্রদূত
গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে: পিডিবি চেয়ারম্যান
এই মুহূর্তে রাজনৈতিক ঐক্য জরুরি : মির্জা ফখরুল
ফেনীর যুবলীগ নেতা চট্টগ্রামে গ্রেফতার
নগরীর যানজট নিরসনে হকার ব্যবস্থাপনা জরুরি : চসিক মেয়র
সংস্কার না করে কোনো নির্বাচনে ভালো ফল পাওয়া যাবে না: তোফায়েল আহমেদ
৪৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার হলে নিষিদ্ধ সামগ্রীসহ প্রবেশ করা যাবে না
১০