ডিএনসি’র মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মাদকবিরোধী অভিযানে ৯ এমএম পিস্তল ব্যবহার করবেন

বাসস
প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৩:৫১

ঢাকা, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এখন মাদকবিরোধী অভিযানের সময় ৯ এমএম আধা-স্বয়ংক্রিয় পিস্তল ব্যবহার করবেন। 

সরকার সোমবার এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা অনুমোদন করেছে।

সরকার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে শক্তিশালী করতে এবং মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মাঠ পর্যায়ের অভিযানের সময় কর্মকর্তাদের মুখোমুখি হওয়া নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলায় ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (কর্মকর্তা-কর্মচারী) অস্ত্র সংগ্রহ ও ব্যবহার নীতি (সংশোধিত) ২০২৫’ গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।

গেজেট অনুসারে, ডিএনসি’র উপ-পরিচালক থেকে সাব-ইন্সপেক্টর পর্যন্ত মোট ৫৭৯ জন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা ৯ এমএম সেমি-অটোমেটিক পিস্তল ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। এদের মধ্যে ৯০ জন উপ-পরিচালক, ৯৩ জন সহকারী পরিচালক, ১৮৬ জন পরিদর্শক এবং ২১০ জন উপ-পরিদর্শক রয়েছেন।

সরকার মোট ৩ হাজার ৫৯ জনবলের মধ্যে ৫৭৯ জন কর্মকর্তাকে অস্ত্র ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে। মোট জনবলের মধ্যে একজন মহাপরিচালক, চারজন পরিচালক, নয়জন অতিরিক্ত পরিচালক, ৯০ জন উপ-পরিচালক, ৯৩ জন সহকারী পরিচালক, ১৮৬ জন পরিদর্শক, ২১০ জন উপ-পরিদর্শক, ২৮৫ জন সহকারী উপ-পরিদর্শক এবং ৯২৮ জন সিপাহীসহ ১ হাজার ৮০৬ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী মাদক সংক্রান্ত অপরাধ দমনে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন।

এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর সরকার ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (কর্মকর্তা-কর্মচারী) অস্ত্র সংগ্রহ ও ব্যবহার নীতি ২০২৪’ অনুমোদন করে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) এর আগে একটি নীতিমালা তৈরি করেছিল, যাতে কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযানের সময় এজেন্সি সদস্যদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাদের আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করা অনিবার্য বলে উল্লেখ করে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ডিএনসি অফিস পরিদর্শন করে অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে সফল ও ঝুঁকিমুক্ত অভিযান পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বাহিনীকে আগ্নেয়াস্ত্র দেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়ার দুই দিন পর ডিএনসি গত ১৯ সেপ্টেম্বর 'মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (কর্মকর্তা-কর্মচারী) অস্ত্র সংগ্রহ ও ব্যবহার নীতিমালা ২০২৪' স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে।

তাদের আগ্নেয়াস্ত্র দেওয়ার যৌক্তিকতা সম্পর্কে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রেই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র না থাকার কারণে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানের সময় আক্রমণের শিকার হন। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সফলভাবে অভিযান পরিচালনা এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ডিএনসি কর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র প্রয়োজন।’

তারা বলেন, নগরীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প এবং ডেমরার কাছে ‘চাঁনপাড়া বস্তি’-তে অভিযান পরিচালনা করতে এজেন্সির অনেক কর্মী ভীত হয়ে পড়েন কারণ সেখানকার মাদক ব্যবসায়ীরা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত।

ডিএনসির প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৪ সাল থেকে মাদকবিরোধী অভিযানে এখন পর্যন্ত দুইজন ডিএনসি সদস্য নিহত এবং ১২৪ জন আহত হয়েছেন।

ডিএনসি কর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি ২০০৭ সাল থেকে প্রয়াত ড. জাফর উল্লাহ কাজলের নেতৃত্বে ডিএনসি বোর্ডে আলোচনা করা হয়। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগের অভাবে এটি আলোর মুখ দেখেনি। 

পরবর্তীতে ৩০ জুন ২০২১ তারিখে, ডিএনসি উপদেষ্টা পরিষদ বিষয়টি দেখাশোনার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা পরিষেবা বিভাগের সিনিয়র সচিবের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে।

২০২৪ সালের জুলাই মাসে সর্বশেষ পদক্ষেপে, ডিএনসি কর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহের জন্য এক মাসের মধ্যে একটি নীতিমালা তৈরি করার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কারা আগ্নেয়াস্ত্র পাবে, সেগুলি সংরক্ষণের পদ্ধতি এবং আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারকারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার দায়িত্ব এই কমিটিকে দেওয়া হয়েছিল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
গরমে টাঙ্গাইলের জন জীবনে দুর্ভোগ 
জবি ভর্তি: বিষয় পছন্দক্রমের সময় বাড়ল
বগুড়ায় রেকর্ড তাপমাত্রা
নবজাতকদের রোগ নির্ধারণ করা গেলে অনেক রোগ থেকে মুক্ত রাখা সম্ভব
সাত বছর পর জিম্বাবুয়ের কাছে টেস্ট হারল বাংলাদেশ
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকার বদ্ধপরিকর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সুন্দরবনের সার্বিক নিরাপত্তায় অবদান রেখে চলেছে কোস্টগার্ড
এস আলমের ৪০৭ কোটি টাকার জমি ক্রোক
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় হৃদয় মিয়াজী রিমান্ডে
পোপ ফ্রান্সিসকে বিশাল জনসমাগমে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন
১০