ঢাকা, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ছাত্রাবাসে ছাত্রদল কর্মী সন্দেহে ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস) ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী আবিদুর রহমান আবিদ হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া ১২ আসামিকে ৩০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এই মামলার বাদীর করা আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি মো.জাকির হোসেন ও সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ রুলসহ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন।
রুলে বিচারিক আদালতের দেওয়া খালাসের রায় কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আবেদনের পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির আজকের এই আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
স্বজনদের অভিযোগ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ছাত্রাবাসে ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতাদের পিটুনির শিকার হয়ে ২১ অক্টোবর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আবিদুর রহমান আবিদ। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মধ্যম বড়ইতলী গ্রামের মৃত নুরুল কবির চৌধুরীর ছেলে আবিদ চমেকের ৫১তম ব্যাচের ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস) ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
আবিদের মৃত্যুর ঘটনায় সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা মেডিকেল কলেজ প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে একাডেমিক কাউন্সিলের সভা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সেলিম মো. জাহাঙ্গীর অনির্দিষ্টকালের জন্য মেডিকেল কলেজ বন্ধ এবং ছাত্র সংসদ কার্যক্রম স্থগিত ও কলেজ ক্যাম্পাসে সকল প্রকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন।
আবিদের মৃত্যুর পর তার মামা নেয়ামত উল্লাহ বাদী হয়ে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রসংসদের ২২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। সে অভিযোগের বিচার শেষে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই আবিদ হত্যা মামলার সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় দেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী। এই রায়ে খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন- তৎকালীন ছাত্র সংসদের ভিপি মফিজুর রহমান জুম্মা, চমেক ছাত্রলীগ সভাপতি সোহেল পারভেজ সুমন, সাধারণ সম্পাদক বিজয় সরকার, সহ সাধারণ সম্পাদক হিমেল চাকমা, ফেরদৌস রাসেল, শান্ত দেবনাথ, মাহাফুজুর রহমান ধীমান, নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, দেবাশীষ চক্রবর্তী, মোস্তফা কামাল, রাশেদুর রেজা সানি ও সালমান মাহমুদ রাফসান।
এক পর্যায়ে এই মামলার বাদী নেয়ামত উল্লাহ হাইকোর্টে আবেদন করেন। সে আবেদনের শুনানি শেষে আজ রুলসহ আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।