ঢাকা, ২ জুলাই, ২০২৫ (বাসস): আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ৩৬ দিনের নৃশংসতা যেই দেখবে সে-ই বলবে, বিশ্বে শেখ হাসিনার চাইতে নির্দয় ঘাতক নারী আর হতে পারে না। তিনি শেখ হাসিনাসহ সকল খুনি ও সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
আজ এবি পার্টি আয়োজিত ৩৬ দিনব্যাপী জুলাই গণঅভ্যুত্থান উদ্যাপনের অংশ হিসেবে ‘কোটা না মেধা: এক রক্তস্নাত অধিকারের সংগ্রাম’ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ ড. দিলারা চৌধুরী বিকেল ৪টায় এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইনের সঞ্চালনায় চিত্রপ্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান, শহীদ জিসানের মা জেসমিন আক্তার, শহীদ নুরু ব্যাপারীর স্ত্রী রোমানা বেগমসহ বিশিষ্ট জনেরা।
এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ৪৫, বিজয় নগরে এ প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। প্রদর্শনী চলবে আজ থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ক্ষমতার মোহে অন্ধ ও চরম অহংকারী হয়ে শেখ হাসিনা কোটা নিয়ে জাতির সাথে উপহাস করতে চেয়েছিল। মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর ইচ্ছায় তার অহংকারের চরম শিক্ষা অবধারিত হয়ে পড়ে। ফলে জঘন্যতম নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েও তার শেষ রক্ষা হয়নি।
জুলাইয়ের নির্মমতা স্মরণ করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, এ গণহত্যা পৃথিবীর যে কোন পৈশাচিক দুঃশাসনের ইতিহাসকে ম্লান করেছে। গুম, খুন, লুটপাট, হেলিকপ্টার থেকে গুলি, কারফিউ জারিসহ সবধরনের অত্যাচার চালিয়ে জনগণকে দমন করার চেষ্টা হয়েছে।
শহীদ জিসানের মা জেসমিন আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলে আব্দুর রহমান জিসান রায়েরবাগে শহীদ হন।
জিসানের শাহাদতের পর তার শোক ও দুঃখে তার স্ত্রী আত্মহত্যা করে। আমার একসাথে দুটি সন্তান হারাতে হয়েছে। জিসান ছিল আমার একমাত্র ছেলে। আমি খুনি হাসিনার বিচার চাই।’
শহীদ নুরু ব্যাপারীর স্ত্রী রোমানা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী রায়েরবাগে শহীদ হন। পরিস্থিতি এমন ছিল আমার স্বামীর লাশটাও তখন আমি আনতে পারিনি।’
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, জুলাইয়ের নির্মমতা পৃথিবীর যেকোনো দুঃশাসনের ইতিহাসকে পেছনে ফেলবে। গুম, খুন ও বিচিত্র রকম অত্যাচারের স্টিম রোলার কীভাবে জন মানুষের হৃদয়ে ঘৃণা ও তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল তার চূড়ান্ত প্রকাশ উপলব্ধি করতে হলে জুলাইয়ের ৩৬ দিনের ছবিগুলো দেখতে হবে। এ চিত্র যারাই দেখবেন তাঁরাই বলবেন, বিশ্বে শেখ হাসিনার চাইতে নির্দয় নারী ঘাতক আর আসবে কিনা সন্দেহ আছে!
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, আনোয়ার সাদাত টুটুল, এবিএম খালিদ হাসান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল হালিম খোকন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খানসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।