ঢাকা, ১৪ জুলাই, ২০২৫ (বাসস): পুরান ঢাকার জনসন রোডে জেলা পরিষদ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ২০ তলা আধুনিক বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্পের নথি গায়েব, অর্থ আত্মসাৎ ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে দুদক জানায়, অভিযানকালে এনফোর্সমেন্ট টিম রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত জেলা পরিষদ কার্যালয় হতে নির্মাণ সংক্রান্ত তথ্যাবলি সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে টিম জনসন রোডে অবস্থিত নির্মাণাধীন ভবনটি পরিদর্শন করে। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১২ সালের ১৮ নভেম্বর থেকে ২০১৫ সালের ১৭ মে মেয়াদে নির্মাণকাজের কার্যাদেশ দেয়া হয়। ভবনের ২০ তলা পর্যন্ত ছাদ ঢালাই সম্পন্ন হলেও ২০১৭ সাল থেকে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে সরকারের বিপুল আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।এছাড়াও, অনুমোদিত স্ট্রাকচারাল ডিজাইন ও ডিটেইল এস্টিমেট সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বা ঠিকাদার/পরামর্শকের কাছেও অনুপস্থিত থাকায় নির্মাণকাজের গুণগত মান যাচাই সম্ভব হয়নি, যা এ প্রকল্পে স্থবিরতার মূল কারণ বলে টিমের নিকট প্রতীয়মান হয়।
এদিকে নাটোর জেলার সিংড়া ও বাগাতিপাড়া উপজেলায় সড়ক সম্প্রসারণ কাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, রাজশাহী। অভিযানে টিম রাতাল বিয়াস (সিংড়া) ও তমালতলা-আড়ানি (বাগাতিপাড়া) সড়কের সম্প্রসারণ কাজ পরিদর্শন করে এবং স্থানীয় অধিবাসীদের সঙ্গে অভিযোগের বিষয়ে কথা বলে। দেখা যায়, উক্ত দুটি সড়কের সম্প্রসারণ কাজ যথাক্রমে ১০ শতাংশ ও ২০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এ নির্মাণকাজে দূরবর্তী স্থান থেকে মাটি সরবরাহ করার কথা থাকলেও বাস্তবে সড়কের পাশ থেকে মাটি কেটে ব্যবহার করা হচ্ছে, যার সত্যতা অভিযানে প্রতীয়মান হয়।
এছাড়া, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে নানাবিধ হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগে আরেকটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, কক্সবাজার । অভিযানের শুরুতে টিম বর্ণিত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছদ্মবেশে উপস্থিত হয়ে রোগী ও সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে চিকিৎসাসেবার বিষয়ে কথা বলে। বেশ কয়েকজন সেবাপ্রার্থী সেবা প্রদানে অনিয়ম ও হয়রানির অভিযোগ করে, যাচাইয়ে যার সত্যতা পায় দুদক টিম। পরবর্তীতে ওষুধ স্টোর রুম পরিদর্শনে গিয়ে টিম পচে যাওয়া ও নষ্ট হওয়া ওষুধের প্যাকেট এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণের মতো গুরুতর অনিয়ম পাওয়া যায়।
প্রাপ্ত তথ্যাবলির ভিত্তিতে অভিযানকালে প্রাপ্ত অনিয়মসমূহের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত চেয়ে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে জানিয়েছে দুদক।