ঢাকা, ৬ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : দক্ষিণ এশিয়ার কৃষিখাতে টেকসই রূপান্তর নিশ্চিত করতে পরিবেশবান্ধব ও পুনর্জীবনধর্মী কৃষি পদ্ধতি প্রসারে একযোগে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
সার্ক কৃষি কেন্দ্র আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘সার্ক সদস্য রাষ্ট্রসমূহে পুনর্জীবনধর্মী কৃষির প্রসার’- শীর্ষক অনলাইনভিত্তিক আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় এ সুপারিশ করা হয়।
৪ থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই সভায় সার্কভুক্ত ছয়টি দেশের সরকারি কর্মকর্তা, কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। আলোচনায় বক্তারা জলবায়ু পরিবর্তন, মাটির স্বাস্থ্য অবনতি, পানি সংকট ও রাসায়নিক উপাদানের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে টেকসই কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
সভায় প্রধান অতিথি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সার্ক ও বিমসটেক) আবদুল মোতালেব সরকার বলেন, কৃষির পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
পুনর্জীবনধর্মী কৃষি পদ্ধতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে মাটির স্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি নীতিনির্ধারক, গবেষক ও প্রযুক্তিবিদদের কার্যকর সহযোগিতার আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে সার্ক কৃষি কেন্দ্রের পরিচালক ড. মো. হারুনূর রশীদ বলেন, পুনর্জীবনধর্মী কৃষি শুধু একটি বিকল্প পদ্ধতি নয়, বরং এটি মাটির প্রাণশক্তি ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে কৃষিকে প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে পরিচালনার রূপান্তরমূলক ধারণা।
তিনি বলেন, এ পদ্ধতির মাধ্যমে কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থা আরও সহনশীল, পরিবেশবান্ধব ও কৃষকবান্ধব হয়ে উঠতে পারে।
বিশেষ অতিথি নেপালের সার্ক সচিবালয়ের পরিচালক (এআরডি ও এসডিএফ) তানভীর আহমেদ তরফদার বলেন, পুনর্জীবনধর্মী কৃষি পরিবেশ উন্নয়নের পাশাপাশি কৃষকের আয় বৃদ্ধিতেও সহায়ক।
তিনি এই পদ্ধতির প্রসারে সরকারি, গবেষণা ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত কাঠামো গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিন দিনে অনুষ্ঠিত ছয়টি কারিগরি অধিবেশনে ২০ জনের বেশি কৃষি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ গবেষণা ফলাফল, প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও দেশীয় অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করেন।
সদস্য দেশগুলোর প্রতিবেদনে মাটির ক্ষয়, সেচের পানির সংকট, রাসায়নিক সারের ক্ষতিকর প্রভাব এবং কৃষকের আর্থিক সংকট তুলে ধরা হয়।
অংশগ্রহণকারীরা বলেন, এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কৃষক পর্যায়ে জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি, মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণ এবং সরকারি সহায়তা বাড়ানো জরুরি।