ঢাকা, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন শতভাগ নিশ্চিত করতে ‘জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন-২০২৪’ সংশোধন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আইনগতভাবে নিবন্ধনের দায়িত্ব প্রদানের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলেন, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে বাংলাদেশ সম্প্রতি কিছুটা সাফল্য অর্জন করলেও বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক অগ্রগতির তুলনায় এখনও অনেকটা পিছিয়ে। বর্তমানে বাংলাদেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের হার যথাক্রমে ৫০ ও ৪৭ শতাংশ। অথচ বৈশ্বিক জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের গড় হার যথাক্রমে ৭৭ ও ৭৪ শতাংশ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আইনগতভাবে নিবন্ধনের দায়িত্ব প্রদান করলেই শতভাগ এই লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে।
আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন: অগ্রগতি, প্রতিবন্ধকতা ও করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন।
গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) নামের একটি সংগঠন এই কর্মশালার আয়োজন করে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। একইসাথে এসডিজির ১৬.৯ লক্ষ্যমাত্রা-জন্ম নিবন্ধনসহ সবার জন্য বৈধ পরিচয়পত্র প্রদান অর্জনেও সহায়ক হবে।
কর্মশালায় জানানো হয়, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী জন্ম ও মৃত্যুর তথ্য প্রদানের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট পরিবারকে দেওয়া হয়েছে এবং স্বাস্থ্য বিভাগের ভূমিকা ঐচ্ছিক রাখা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জন্ম নিবন্ধনের দায়িত্ব দেওয়া হলে স্বাস্থ্য সেবার আওতায় জন্মগ্রহণ করা দেশের প্রায় ৬৭ শতাংশ শিশু নিশ্চিতভাবে নিবন্ধনের আওতায় চলে আসবে।
আইন শক্তিশালী করা এবং বিদ্যমান আইনের কার্যকর বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে কর্মশালায় বক্তারা বলেন, নিবন্ধনের বিষয়ে সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাব, জনবল সংকট, প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা, নিবন্ধন প্রক্রিয়ার জটিলতা এবং স্বাস্থ্য খাতের সঙ্গে দুর্বল সমন্বয় আইন বাস্তবায়নের পথে বড় অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে।
জিএইচএআই বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে দ্রুত আইন সংশোধন করে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রসমূহকে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের দায়িত্ব আইনগতভাবে প্রদান করতে হবে।
কর্মশালায় ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস-এর কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মো. নজরুল ইসলাম, অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স- আত্মা’র কনভেনর লিটন হায়দার, কো-কনভেনর নাদিরা কিরণ এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বক্তব্য রাখেন।
কর্মশালার বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রজ্ঞা’র কর্মসূচি প্রধান হাসান শাহরিয়ার।