মহেশখালী-মাতারবাড়ীকে সমুদ্রবন্দরকেন্দ্রিক নগরীতে উন্নয়নের পরিকল্পনাকে স্বাগত জানাচ্ছেন স্থানীয়রা

বাসস
প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:৫৫
ছবি: বাসস

কক্সবাজার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : কক্সবাজারের মহেশখালীতে স্থানীয়রা মহেশখালী-মাতারবাড়ীকে গভীর সমুদ্রবন্দরকেন্দ্রিক নগরীতে উন্নয়নের সরকারের পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, এতে তাদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

মাতারবাড়ীর বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা সানাউল্লাহ মুস্তাফা বাসসকে বলেন, ‘যদি সরকার এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে, তবে এটি সবার জন্য আশীর্বাদ হবে।’

মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সামনে অবস্থিত নাসিরডেইল গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মনাফ বলেন, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর তার গ্রামের কাছেই প্রতিষ্ঠিত হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, একবার সমুদ্রবন্দর প্রতিষ্ঠিত হলে আমাদের বাড়িঘর অধিগ্রহণ করা হবে। তবে এটি আমাদের এলাকার জন্য ভালো হবে।’

তিনি আশা প্রকাশ করেন, মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর চালু হলে স্থানীয়দের জন্য প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে, যা তাদের জীবনমান উন্নত করতে সাহায্য করবে।

মহেশখালী-মাতারবাড়ী উন্নয়নের জন্য সরকার ইতোমধ্যে মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (মিডা) গঠন করেছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

কর্তৃপক্ষের কাজ হলো একটি মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করা, যাতে বন্দর ও লজিস্টিকস, শিল্প ও উৎপাদন, জ্বালানি, মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং আবাসিক নগরী অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তার সরকারি বাসভবন যমুনায় মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (মিডা) সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, গভীর সমুদ্রবন্দরকেন্দ্রিক এ অঞ্চলে বাংলাদেশের নীল অর্থনীতি দর্শনের অংশ হিসেবে একটি নতুন শহর গড়ে উঠবে।

তিনি বলেন, ‘শুধু গভীর সমুদ্রবন্দর নয়, আমাদের নীল অর্থনীতির দর্শন নিয়ে কাজ করতে হবে। এ অঞ্চল কেবল একটি সহায়ক অঞ্চল হবে না, বরং এখানে একটি নতুন নগরীর উদ্ভব হবে।’

বৈঠকে মিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মহেশখালী-মাতারবাড়ী প্রকল্প নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন দেন এবং কর্তৃপক্ষের চার মাসের কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। 

তিনি বলেন, এই মেগা প্রকল্প তিন ধাপে বাস্তবায়ন হবে, ২০২৫ থেকে ২০৩০, ২০৩০ থেকে ২০৪৫, এবং ২০৪৫ থেকে ২০৫৫ পর্যন্ত।

তিনি আরও জানান, প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে প্রায় ২৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে এবং দেশের জিডিপিতে ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবদান রাখবে।

চৌধুরী আশিকের ভূমিকার প্রশংসা করে সানাউল্লাহ মুস্তাফা বলেন, যদি সরকারের পরিকল্পনা চৌধুরী আশিকের নেতৃত্বে বাস্তবায়িত হয়, তবে এটি তাদের জন্য বড় অর্জন হবে।

মহেশখালীর বাসিন্দা সৈয়দ নূর বলেন, ‘এটি সরকারের একটি ভালো পরিকল্পনা। আমরা এটিকে স্বাগত জানাই। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে আমাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে এবং দেশের উৎপাদনশীলতাও বৃদ্ধি পাবে।’

মাতারবাড়ী বন্দর বঙ্গোপসাগরের উপকূলে মহেশখালী উপজেলায় নির্মাণাধীন একটি সমুদ্রবন্দর। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে এটি হবে বাংলাদেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বিশেষজ্ঞ মতামত পর্যালোচনায় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক
জবিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি প্রতিযোগিতা
দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ভারতে ১,২০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সাথে ধর্ম উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
বেগম খালেদা জিয়াকে মৌসুমি ফল পাঠিয়েছেন ভুটানের রাষ্ট্রদূত
ঢাকাসহ তিন জেলায় দুদকের অভিযান : অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে
জুলাই আন্দোলনের যুবা ও জেন্ডার ডাইভার্সদের দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি উদ্বোধন
জামায়াত আমীরের সঙ্গে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির মানবাধিকার উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
শেখ হাসিনার ও পরিবারের নামের স্থাপনার নাম পরিবর্তন করেছে গৃহায়ন মন্ত্রণালয়
কুস্তিতে পুরুষ-নারী উভয় বিভাগেই চ্যাম্পিয়ন আনসার
১০