ঢাকা, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : সাগর পথে মালয়েশিয়া পাচারকালে টেকনাফের গহিন পাহাড়ে বন্দি থাকা নারী ও শিশুসহ ৬৬ জনকে গতকাল কোস্টগার্ড ও নৌ-বাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করে।
কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সাগর পথে মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে নারী ও শিশুসহ বিপুল সংখ্যক ব্যক্তিকে টেকনাফের বাহারছড়ার গহিন পাহাড়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলে জানতে পারে। পরে গতকাল সন্ধ্যা ৬ টা হতে রাত ১০ টা পর্যন্ত কোস্টগার্ড এবং নৌবাহিনী একটি যৌথ অভিযান চালায়। এসময় যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ওই পাহাড়ের চূড়ায় পাচারকারীদের গোপন আস্তানার সন্ধান পায়। পরে সেই আস্তানা থেকে পাচারের উদ্দেশ্যে বন্দি থাকা নারী ও শিশুসহ মোট ৬৬ জন ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকারীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কয়েকটি সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্র বিদেশে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখাতো। তারা সুবিধাজনক কর্মসংস্থান ও উন্নত জীবনযাপনের স্বপ্ন দেখিয়ে টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের মালয়েশিয়ায় যেতে উদ্বুদ্ধ করতো।
অল্প খরচে বিদেশ যাত্রার প্রস্তাব দেয়া হতো। কখনও বলা হতো, বিনা অর্থে পাঠানো হবে এবং পরে কর্মস্থলে কাজের মাধ্যমে খরচ পরিশোধ করা যাবে। এভাবে প্রলোভন দেখিয়ে তাদের টেকনাফের গহিন পাহাড়ে গোপন আস্তানায় জিম্মি করে রাখা হয়েছিল।
পরবর্তীতে পাচারকারীরা তাদের সুবিধাজনক সময়ে মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন উপকূল থেকে বোট যোগে মালয়েশিয়ায় পাচার করার পরিকল্পনা করেছিল।
তারা আরও জানায় যে, পাচারকারীরা তাদের আটকে রেখে নির্যাতনের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় করার চেষ্টা করছিল।
এতে আরও বলা হয়, অভিযান চলাকালীন যৌথ বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তাদের আটকের জন্য নৌ-বাহিনী ও কোস্টগার্ডের গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযান চলমান রয়েছে।
মানবপাচার রোধে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।