জনগণের ওপরে ‘দলীয় এজেন্ডা’ চাপিয়ে পার পাওয়া যাবে না : এজেডএম জাহিদ 

বাসস
প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:২২
অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন। ফাইল ছবি

ঢাকা, ১৯ সেপ্টম্বর, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, “জনগণের ওপরে ‘দলীয় এজেন্ডা’ চাপিয়ে পার পাওয়া যাবে না।”

আজ এক আলোচনা সভায় সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির দাবি নিয়ে আন্দোলনরত দলগুলোর প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই হুশিয়ারি দেন।

তোপথানা রোডে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ ফার্মাসিউটিক্যালস রিপ্রেজেন্টেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের (ফারিয়া)’ কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মেলন-২৫ এর এই অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং দ্বিতীয় পর্ব নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোট গ্রহন।

ডা. জাহিদ বলেন, দেশের মধ্যে একধরণের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, দেশকে একটা অরাজগ পরিস্থিতিতে ফেলতে চাচ্ছেন, উদ্দেশ্যটা কী? কিন্তু মনে রাখবেন, এই বাংলাদেশ সেই বাংলাদেশ না। আপনি ইচ্ছা করলেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারবেন না। যেমন আপনারা (আলোচনা সভায়) এখানে বসে নির্বাচনের জন্য সুন্দর ব্যালট বাক্স নিয়ে এসেছেন, আপনাদের নির্বাচন কমিশন আছে, আপনাদের প্রার্থী আছে, সরাসরি ভোট হবে।

তিনি বলেন, ‘আমি তাদেরও বলি, আসেন জনগণের কাছে যান। জনগণ যাকে গ্রহন করে, আপনি আপনার এজেন্ডা নিয়ে যাবেন, আমরা আমাদের এজেন্ডা নিয়ে যাবো। জনগণ কাকে গ্রহন করবে আমরা সেই এজেন্ডাকে স্যালুট করব। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই জনগণের কথা বলে জনগণের মতামতের ওপর আপনার দলীয় এজেন্ডা, গোষ্ঠি এজেন্ডা, কোনো দেশীয় অথবা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের এজেন্ডা চাপিয়ে দিয়ে আপনি মনে করেছেন পার পেয়ে যাবেন সেটি বাংলাদেশের মানুষ ইনশাল্লাহ হতে দেবে না।’

বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, কর্তৃত্ববাদীতার আওয়াজ শোনা যায় উল্লেখ করে জাহিদ বলেন, ‘আপনারা কী কেউ কখনো শুনেছেন যে ৫ আগস্টের আগে অথবা এই গত ১৬/১৭ বছরে আমরা কেউ সংখ্যানুপাতিক ভোট অর্থাৎ পিআর চাই? আপনারা শুনেননি, এই ধরণের বক্তব্য কারো ছিলো না। আজকে কেউ কেউ বলেন, বলতে দোষ নেই। কারণ গণতন্ত্রের মধ্যে কথা বলবেন দিস ইজ দি বিউটি অব ডেমোক্রেসি এবং মত প্রকাশের যে ভিন্নতা থাকবে সেটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য,এর মধ্যে কোনো সমস্যা নেই।’

তিনি বলেন, ‘কিন্তু যখন আপনি বলেন, আপনার কথা না শুনলে এটা হতে দেবো না, এটা করতে দেবে না তখন কিন্তু কর্তৃত্ববাদীতার আওয়াজ পাওয়া যায়। অর্থাৎ স্বৈরাচার যে ভাষায় কথা বলতো সেটার প্রতিধবনি শোনা যায়। এটা কী ঠিক? আপনি ডেমোক্রেসি মানবেন আপনি আপনার নির্বাচনী ম্যানিফোষ্টোতে দেন। আমরা যদি ক্ষমতায় যাই আমাকে যদি জনগণ নির্বাচিত করে আমি আগামীতে এই সিষ্টেমে যাব। যেমন বিএনপি ৩১ দফার কর্মসূচি দিয়েছিলো, বিএনপি নির্বাচিত হলে কী করবে? ইটস ওপেন ডকুমেন্ট। এটা আজকে দেয়নি প্রথম দিয়েছে ২০২২ এর ডিসেম্বরে রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা কর্মসূচি এবং ২০২৩ এর জুলাইতে দিয়েছে ৩১ দফার কর্মসূচি।’

তিনি বলেন, বিনিয়োগ যদি না হয় আর যদি জব ওপোরচুনিটি ক্রিয়েট না হয় এই বিশাল তরুণ প্রজন্ম এই যে, জেনারেল জেড তারা কোথায় কাজ করবে? তাদের কর্মসংস্থান কীভাবে হবে? কর্মসংস্থানের জন্য বিনিয়োগকারী দরকার। আর সেই বিনিয়োগকারী দেশীয় হোক, বিদেশী হোক তারা চায় স্থিতিশীল সরকার, রাজনৈতিক সরকার, জনগণের সমর্থিত নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা লক্ষ্য হওয়া উচিত। 

সেটি যদি আপনি না করেন, সেটিকে প্রলম্বিত করেন তাহলে যে স্বৈরাচার আপনার পাশের দেশে বসে আছে এবং আপনার পাশে বসে আছে তাদেরকেই সুবিধা করে দেয়া হবে বলে মনে করেন বিএনপির এ সিনিয়র নেতা।

ডা. জাহিদ বলেন, ‘আপনার মনে রাখতে হবে, কতিপয় লোক দেশের বাইরে পালিয়ে গেছে কিন্তু মেজরিটি লোক কিন্তু আপনার সমাজে, আপনার পাশে-পাশে সর্বত্র আছে, যার জন্যই ঝটিকা মিছিল, অমুক মিছিল-তমুক মিছিল দেখেন না আপনারা।’

তিনি বলেন, ‘এখন আবার নতুন স্টাইল শুরু হয়ে গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝটিকা মিছিল নাম দেয় কিন্তু ব্যানারটা চেঞ্জ করে এআইয়ের মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে যে, দুই বছর আগের অন্য রাজনৈতিক দলের মিছিলকে ব্যানার বদল করে ঝটিকা মিছিল বলে চালিয়ে দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। গতকাল আপনারা দেখেছেন একটা পত্রিকা ফ্যাক্টস ফান্ডিং করে তারা বের করেছে যে, ২০২৩ সালের অমুক মিছিলটা আওয়ামী লীগ ঝটিকা মিছিল বলে চালিয়ে দিয়েছে। জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য তারা এটা করছে। এই অবস্থায় আপনারা-আমরা যারা মিলিতভাবে এই স্বৈরাচারকে সরানোর জন্য বিগত ১৫/১৬ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি, কত মানুষ হারিয়ে গেছে, কত মানুষ আহত হয়েছেন, শহীদ হয়েছেন, কাজেই সকলকে সচেতন হতে হবে, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে নির্বাচন প্রশ্নে।’

এজেডএম জাহিদ বলেন, নেপালে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়েছে বলে গত কয়েক বছরে ১৪ জনের বেশি প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন হয়েছে।

জাহিদ বলেন, ‘খালি দলবাজির জন্য, নিজের অবস্থানকে পাকাপোক্ত করার জন্য এবং জনগণ না চাইলেও জনগণের কথা বলে মতামত দেওয়ার দাবিদার হওয়ার জন্য আজকে এই সমস্ত দাবি তুলছেন, তারা সত্যিকার অর্থে নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুন, আমি একথা আগে বলিনি, আমি এই কথা কেনো বলছি? উদ্দেশ্য কী?’ যারা পিআর পদ্ধতি চান সেসব রাজনৈতিক দলকে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে তা সন্নিবেশ করে জনগণের কাছে যাওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

‘বাংলাদেশ ফার্মাসিউটিক্যালস রিপ্রেজেন্টেটিভ অ্যাসোসিয়েশন (ফারিয়া)’ এর আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিবের সভাপতিত্বে ও রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী সবুজ ও আরিফুল ইসলাম আরিফের যৌথ সঞ্চালনায় আলোচনায় ফারিয়ার নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বিউটিফুল লালমনিরহাটের ১০ম বর্ষপূর্তিতে সোলার ল্যাম্প ও রক্ত পরীক্ষা
এনসিপি তার লক্ষ্য নিয়েই এগোবে : নাহিদ ইসলাম
বান্দরবানে সেনা রিজিয়ন কাপ ফুটবল শুরু
ওল্ড ডিওএইচএসের কাউন্সিলর পদ পেলেন তামিম
জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল ঠেকাতে ‘ন্যায্য’ প্রস্তাব দিয়েছে ইরান
বাংলামোটরে মিছিল : আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান কারাগারে
'রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ, ২০২৫' খসড়ার ওপর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
গাজীপুরে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু 
সাংবাদিক শিবলী স্মরণে উত্তরা প্রেসক্লাবে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত পক্ষকালব্যাপী সিরাতুন্নবী (সা.) অনুষ্ঠানমালা সম্পন্ন
১০